শুক্রবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২০, ১২:৪৩:৩৯

এবার থেকে যে কোনো ভারতীয় কাশ্মীরে জমি কিনতে পারবে

এবার থেকে যে কোনো ভারতীয় কাশ্মীরে জমি কিনতে পারবে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সংবিধানের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেওয়ার পর রাজ্য থেকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত হওয়া জম্মু ও কাশ্মীরের ভূমি আইন সংশোধন করেছে ভারত। এই সংশোধনের ফলে দেশটির যে কোনো নাগরিক পৃথিবী ভূস্বর্গ বলে পরিচিত ওই অঞ্চলটিতে জমি কিনতে পারবে।

মঙ্গলবার জারি করা এক নির্দেশনায় ভূমি আইনটির পরিবর্তনের কথা জানানো হয় বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। আইন সংশোধনের ফলে ওই অঞ্চলের বাসিন্দা নন এমন ভারতীয়রাও এখন সেখানে জমি কেনার সুযোগ পাবেন, জানিয়েছেন ভারতীয় কর্মকর্তারা।

কাশ্মীরের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ভূমি আইনের এমন পরিবর্তনের তী'ব্র বিরো'ধিতা করেছে। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ধীরে ধীরে কাশ্মীরি জনগণের সব অধিকার কে'ড়ে নিচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছে তারা। রয়টার্স জানিয়েছে, কাশ্মীরে এতদিন ধ'রে জমি কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতাকে অবশ্যই 'রাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে' এমন শর্ত ছিল। 

মঙ্গলবার জারি করা নির্দেশনায় ওই শর্ত 'বাদ দিতে' বলা হয়েছে; এর ফলে কাশ্মীরের বাইরের ভারতীয়দেরও পশ্চিম হিমালয়ের ওই অঞ্চল থেকে জমি কেনার পথ উন্মুক্ত হয়েছে। গত বছর পর্যন্ত অঞ্চলটি ভারতীয় সংবিধানের এক বিশেষ মর্যাদার অন্তর্ভুক্ত ছিল। ওই মর্যাদা বলে অঞ্চলটির কর্তৃপক্ষ স্থায়ী বাসিন্দা নির্ধারণ ও কারা কারা জম্মু-কাশ্মীরের জমি কিনতে পারবে সে সং'ক্রা'ন্ত নিজস্ব আইন তৈরি করতে পারতো।

কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিরো'ধ আছে। দুটো দেশই সমগ্র কাশ্মীরকে নিজেদের বলে দাবি করে আসছে; উভয়েই অঞ্চলটির পৃথক পৃথক অংশ শা'সনও করছে। ১৯৪৭ সালে ভাগ হওয়ার পর থেকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যে তিনটি যু'দ্ধ হয়েছে, তার দুটিই হয়েছে কাশ্মীরকে নিয়ে।

গত শতকের ৮০-র দশকের শেষদিক থেকে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে বি'চ্ছি'ন্নতাবা'দীদের তৎ'পরতা ও সহিং'সতাও ব্যা'পক হারে বেড়ে যায়। গত বছরের অগাস্টে নরেন্দ্র মোদী নেতৃত্বাধীন ভারতের কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকার অঞ্চলটির স্বা'য়ত্তশা'সন কেড়ে নেয়। জম্মু ও কাশ্মীরের সাংবিধানিক মর্যাদা বা'তিল করে অঞ্চলটিকে পৃথক দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার পর ওই অঞ্চলে বিক্ষো'ভ দেখা দেয়।

মোদী সরকার এর আগে বলেছিল, ভারতীয় অন্যান্য অঞ্চলের মতো অভিন্ন নিয়ম ও শাসনব্যবস্থা কাশ্মীরের সমৃদ্ধি নিয়ে আসবে। ভূমি আইনের সংশো'ধনীও ভারতের বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের পরিক'ল্পনারই অংশ; তারা ওই অঞ্চলটিতে গত ৭ দশক ধ'রে কার্যকর ছিল না এমন আইনগুলো বাস্তবায়নে ব'দ্ধপরিকর।  

''ভূমি আইনের সংশো'ধনী জম্মু ও কাশ্মীরের কাঠামোগত পরিবর্তনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। অঞ্চলটি ভারতের অন্যান্য অংশের মতোই শা'সিত হওয়া উচিত,'' নাম না প্রকাশ করার শর্তে এমনটাই বলেছেন ভারতীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। অন্যদিকে ভূমি আইন পরিবর্তনে ক্ষু'ব্ধ প্রতি'ক্রিয়া ব্যক্ত করেছে কাশ্মীরের বিরো'ধী দলগুলো।

''এই সংশো'ধনী জম্মু ও কাশ্মীরকে বিক্রির জন্য নিলামে তুলবে। নতুন এসব আইন জম্মু ও কাশ্মীরের জনগণের কাছে অগ্রহণযোগ্য'', টুইটারে বলেছেন কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ। গত বছর জম্মু ও কাশ্মীরের স্বায়ত্তশা'সন কেড়ে নেওয়ার আগে অঞ্চলটির যে ৫ হাজার লোককে আ'টক করা হয়েছিল, তাদের একজন ছিলেন ওমর আবদুল্লাহ।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে