বৃহস্পতিবার, ০৫ নভেম্বর, ২০২০, ০৫:৫৩:১৮

'যুদ্ধবাজ' জো বাইডেনের সমর্থনে মধ্যপ্রাচ্যে ৭ লাখ মানুষ হত্যা

'যুদ্ধবাজ' জো বাইডেনের সমর্থনে মধ্যপ্রাচ্যে ৭ লাখ মানুষ হত্যা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ২০০৯ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলে জো বাইডেন। সে সময় সিরিয়া এবং লিবিয়া যু'দ্ধে জড়ায় যুক্তরাষ্ট্র। ১৯৭৩ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত মার্কিন সিনেটর ছিলেন তিনি। সার্বিয়া, আফগানিস্তান এবং ইরাক যু'দ্ধের পক্ষে অবস্থান নেন বাইডেন। 

যু'দ্ধে তার সমর্থনের কারণে প্রাণ হারায় প্রায় সাত লাখ মানুষ। বাস্তুচ্যুত হয়, ঘরবাড়ি হারায় অনেকে। বর্তমানে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হা'রিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে জয়ী হওয়ার দ্বারপ্রান্তে রয়েছেন ডেমোক্রেট দলীয় জো বাইডেন। যু'দ্ধবাজ এ রাজনৈতিকের বি'ধ্বং'সী কিছু পদক্ষেপ দেখা নেয়া যাক।

ইরাক: ২০০২ সালে প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ অ'ভিযো'গ তুলেন, সাদ্দাম হোসেনের কাছে গণবিধ্বং'সী রাসায়নিক এবং জৈব অ'স্ত্র রয়েছে। পরমাণু অ'স্ত্র তৈরি করতে চাচ্ছেন তিনি। স'ন্ত্রা'সবাদে পৃষ্ঠপোষকতা করছেন সাদ্দাম হোসেন, যা শান্তি এবং স্থিতিশীলতার জন্য হু'মকি। ২০০২ সালের অক্টোবরে সিনেটর বাইডেন ইরাক যু'দ্ধে প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন। 

যার মাধ্যমে বুশ প্রশাসনকে ইরাকে সাম'রিক অভি'যান চালানোর ক্ষমতা দেয়া হয়। ২০০৩ সালের ২০ মার্চ ইরাকে আ'ক্র'মণ করেন জর্জ ডব্লিউ বুশ। ওই যু'দ্ধ চলে ২০১১ সালের ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ৮ বছর ৮ মাসের বেশি স্থায়ী ইরাক-মার্কিন যু'দ্ধ।

ক্ষমতাচ্যুত করা হয় বাথ পার্টিকে। ফাঁ'সি দেয়া হয় প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনকে। সাদ্দাম হোসেন এবং বাথ পার্টির প'তনের মধ্য দিয়ে দেশটিতে বিভিন্ন বিদ্রো'হীগো'ষ্ঠী স'ক্রি'য় হয়ে উঠে। জন্ম নেয় জ'ঙ্গিগো'ষ্ঠী আল কায়েদা, ইরাক। পরবর্তীতে গঠন করা হয় শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ গণতান্ত্রিক সরকার। ২০১১ সালে ইরাক ছাড়ে মার্কিন বাহিনী। 

বাড়তে থাকে ইরানের আধি'পত্য। চ'রমে পৌঁছায় বিদ্রো'হীদের মধ্যে সংঘা'ত। আল কায়েদার উত্তরসূরি হিসেবে জন্ম নেয় জ'ঙ্গিগোষ্ঠী আইএস-ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড লেভেন্ত। ২০১৩ সালে সংঘাত তী'ব্রতর হয়ে উঠে। ২০১৪ সালে ইরাকে ফেরত আসে মার্কিন বাহিনী। ২০১৭ সালে পরি'স্থিতি কিছুটা শিথিল হয়। তারপর থেকে থেমে থেমে সেখানে সহিং'সতা চলছে।

ইরাকি বাহিনী প্রশিক্ষণের জন্য দেশটিতে মার্কিন বাহিনীর কয়েক হাজার সদস্য রয়েছে। ওই যু'দ্ধে হ'তাহ'তের সংখ্যা নিয়ে বিভিন্ন পরিসংখ্যান রয়েছে। ২০০৬ সালে লেনসেট স্ট্যাডি জানায়, ৬ লাখ ৫৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। মার্কিন বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) জানায় ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১ লাখ ৮৫ হাজার থেকে ২ লাখ ৮ হাজার মানুষ নিহ'ত হয়েছে। 

লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যু'ত হয়েছে। প্রকৃত ক্ষ'য়ক্ষ'তি সংখ্যা জানা যায়নি। ইরাকে পাওয়া যায়নি গণবিধ্বং'সী কোনো অ'স্ত্র। ২০০৫-এ এক সাক্ষাৎকারে ২০০২ সালে ইরাক যু'দ্ধের পক্ষে দেয়া ভোট দেয়ার বিষয় জানতে চাওয়া হলে বাইডেন বলেন, এটি তার ভুল সিদ্ধান্ত ছিল।

সিরিয়া: ২০১১ সালে সিরিয়ায় সরকারবিরো'ধী বিক্ষো'ভ শুরু হয়। জানানো হয়, প্রেসিডেন্ট বাশার আসাদের পদত্যা'গ, রাজনৈতিক এবং সামাজিক সংস্কারের দাবি। সরকার বিক্ষো'ভে ব'লপ্রয়ো'গ করলে বিক্ষো'ভ ছড়িয়ে পড়ে। সং'ঘা'তে জড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন গোষ্ঠী, বিদেশি শ'ক্তি এবং সন্ত্রা'সী সংগঠন। ২০১১ সাল থেকে আসাদকে সরে যাওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়ে আসছিল যুক্তরাষ্ট্র। 

২০১৪ সালে ওবামা প্রশাসন সিরিয়ায় আইএসের বি'রু'দ্ধে বিমান হা'মলা শুরু করে। ২০১৫ সালে স'ন্ত্রা'সী গো'ষ্ঠীটিকে প্রতিহ'তে দেশটিতে সেনা মোতায়েন করে ওয়াশিংটন। বাইডেনের প্রচারণা শিবির দাবি করেছে, আইএস মো'কাবিলাসহ নানা কারণে ওবামা-বাইডেন প্রশাসন সিরিয়ার বিরো'ধীদের সহায়তা করেছে। সিরিয়া যু'দ্ধে অনুমানিক ৩ লাখ ৮৪ হাজার মানুষ নিহ'ত হয়েছে। ঘরবাড়ি হারিয়ে বাস্তুচ্যু'ত হয়েছে লাখ লাখ মানুষ। যার প্রকৃত সংখ্যা অজানা।

লিবিয়া: লিবিয়ার দীর্ঘদিনের শাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে ক্ষ'মতাচ্যু'ত করতে ন্যাটোকে সর্বাত্মক সহায়তা করে যুক্তরাষ্ট্র। ওবামা জানান, গাদ্দাফি লিবিয়ার সাধারণ মানুষের বিরু'দ্ধে সামরিক বা'হি'নী দিয়ে নির্যা'তন চাচ্ছে। নাগরিকদের হ'ত্যা করছে। বাধ্য হয়ে লিবিয়ার নাগরিকরা প্রতিবেশী দেশে আশ্রয় নিচ্ছে। লিবিয়াসহ প্রতিবেশী মিসর, তিউনিসিয়ায় মানবিক সং'কট তৈরির শ'ঙ্কা তৈরি হচ্ছে। 

২০১১ সালে ক্ষ'মতাচ্যুতের পর গাদ্দাফিকে হ'ত্যা করে মার্কিন সমর্থিত বিদ্রো'হীরা। সং'ঘা'তে কতো মানুষ হ'তাহ'ত হয়েছে প্রকৃত সংখ্যা অনি'শ্চিত। আড়াই থেকে ২৫ হাজার পর্যন্ত মানুষ মা'রা গিয়ে থাকতে পারে বলে বিভিন্ন সময়ের পরিসংখ্যানে উল্লেখ করা হয়েছে। ২০১১ সালে শুরু হওয়া সং'ঘা'ত এখনো চলছে। ২০১৬ সালে বাইডেন বলেন, তিনি লিবিয়া যু'দ্ধের বিরো'ধিতা করেছিলেন।

আফগানিস্তান: ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে হা'মলার ঘ'টনা ঘ'টে। দায়ী করা হয় আল কায়েদাকে। আল কায়েদাকে আশ্রয় দেওয়ার অ'ভিযো'গ তোলা হয় সে সময়কার আফগান শা'সক তালেবানের বি'রু'দ্ধে। ওই বছরের ৭ অক্টোবর আফগানিস্তানে হা'মলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। ক্ষ'মতায় ছিলেন জর্জ ডব্লিউ বুশ। আফগানিস্তানে মার্কিন অভিযান জো'রদারের পক্ষে সমর্থন দিয়েছিলেন বাইডেন।

আফগান যু'দ্ধে কতো মানুষ নিহ'ত হয়েছে তার সঠিক তথ্য নেই। বিভিন্ন পরিসংখ্যান বলছে, ১ লাখ থেকে দেড় লাখ মানুষ নিহ'ত হয়েছে। চলতি মাসের ফেব্রুয়ারিতে তালেবানের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করে যুক্তরাষ্ট্র। ক্ষ'মতা ভাগাভাগি নিয়ে মার্কিন সমর্থিত সরকারের সঙ্গে চলছে আলোচনা। থেমে নেই তালেবান, আইএস এবং সরকারি বা'হি'নী ত্রিমুখী সংঘা'ত।

সার্বিয়া: ১৯৯৯ যুগোস্লাভিয়ায় (সার্বিয়া এবং মন্টিনেগ্রো) বি'রু'দ্ধে সাম'রিক অভি'যান পরিচালনার জন্য প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনকে সমর্থন দেন বাইডেন। ওই বছরের মার্চে যুগোস্লাভিয়ায় বিমান হা'মলা চালায় ক্লিনটন প্রশা'সন। কসোভো প্রদেশে আলবানিয়া জাতিগোষ্ঠীর বি'রু'দ্ধে দেশটির সরকারে চালানো নির্যা'তনের অভি'যোগে ওই হা'মলা চালানো হয়। ওই যু'দ্ধ দেড় লাখের মতো মানুষ প্রাণ হারায়।

সম্প্রতি বাইডেনকে 'ধারাবাহিক যু'দ্ধ আহ্বানকারী' আখ্যা দেন মার্কিন সিনেটর র‌্যান্ড পল। বাইডেন আরও যু'দ্ধ বাধাবে বলেও শ'ঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। নির্বাচনী প্রচারণায় বাইডেন জানিয়েছেন তিনি যু'দ্ধমুক্ত একটি বিশ্ব চান। প্রতিশ্রুতি দেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে ইয়েমেন যু'দ্ধে সৌদি আরবকে দেয়া মার্কিন সহায়তা বন্ধ করবেন তিনি।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে