সোমবার, ০৪ জানুয়ারী, ২০১৬, ০৪:০৯:৩৪

নিমরের মৃত্যুদণ্ড উসকে দিতে পারে শিয়া-সুন্নি দ্বন্দ্ব

নিমরের মৃত্যুদণ্ড উসকে দিতে পারে শিয়া-সুন্নি দ্বন্দ্ব

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সৌদি আরব সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে দেশটির শীর্ষস্থানীয় শিয়া নেতা নিমর আল নিমরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করায় তীব্র প্রতিক্রিয়া ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে শিয়া-সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে। ইরান থেকে লেবানন পর্যন্ত পরিবর্তিত এ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে আরো একবার সামনে উঠে এসেছে শিয়া-সুন্নির পুরানো দ্বন্দ্ব। খবর বিবিসির। গত সেপ্টেম্বরে মিনায় হজের সময় পদদলনের ঘটনা নিয়ে সৌদি ও ইরানের মধ্যে ব্যাপক বাগ্যুদ্ধ হয়। এরপর ইরানের হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে নিমরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করায় দেশ দুটির সম্পর্কে সৃষ্টি হয়েছে চরম উত্তেজনা। বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, এই উত্তেজনার আঁচ মধ্যপ্রাচের অন্যান্য অংশেও অনুভূত হতে পারে। অনেক শতকের পুরানো শিয়া-সুন্নি দ্বন্দ্ব আজও মধ্যপ্রাচ্যের বহু সংঘাতের পেছনে অন্যতম কারণ। সিরিয়া বা লেবানন থেকে ইরাক বা পাকিস্তান পর্যন্ত মুসলিম বিশ্বের বহু সাম্প্রতিক সংঘাতের পেছনেই রয়েছে এই মতাদর্শিক বিভক্তির ইতিহাস। ইরাক ও সিরিয়ায় চলমান সংঘাতের ওপরও শিয়া-সুন্নি দ্বন্দ্বের গভীর প্রভাব রয়েছে। দুটি দেশেই তরুণ সুন্নিপন্থীরা বিদ্রোহী গ্রুপগুলোতে যোগ দিয়েছে। এসব গ্রুপের অনেকগুলোই কট্টরপন্থী আল-কায়েদা বা এর সমগোত্রীয় আদর্শের অনুসারী। বিপরীতে শিয়া তরুণদের দেখা যাচ্ছে সরকারি বাহিনীর হয়ে রণাঙ্গনে নামতে। লেবাননে গত শতকের আটের দশকে গৃহযুদ্ধের সময় হিজবুল্লাহর সামরিক তৎপরতার কারণে শিয়াদের রাজনৈতিক অবস্থা মজবুত হয়। পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে তালেবানের মতো কট্টর সুন্নিপন্থী গোষ্ঠীগুলো অনেকবারই শিয়া মসজিদ ও স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। দেখা যাচ্ছে, যেসব দেশে সুন্নিরা ক্ষমতায়, সেসব দেশে শিয়ারা অধিকাংশ ক্ষেত্রে নিজেদের বৈষম্য আর নিপীড়নের শিকার বলে মনে করে। সুন্নিদের মধ্যে কিছু উগ্র মতাদর্শী আছে, যারা শিয়াদের সম্পর্কে নেতিবাচক কথাবার্তা বলে থাকে। ইরানে ১৯৭৯ সালের বিপ্লবের পর বিপ্লবী শিয়া ইসলামপন্থী এজেন্ডা প্রচার শুরু হয়, যা উপসাগরীয় রক্ষণশীল সুন্নি শাসকরা চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখেন। এ সময় থেকেই ইরান তার ভূখণ্ডের বাইরে শিয়া মিলিশিয়া ও রাজনৈতিক দলগুলোকে সমর্থন দিতে শুরু করে। আর এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে উপসাগরীয় দেশগুলোও বিভিন্ন দেশের সুন্নি সরকার এবং ধর্মীয় আন্দোলনগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর দিকে মনোযোগী হয়। মূল ধর্মবিশ্বাস ও প্রধান প্রধান রীতিনীতি অভিন্ন হলেও দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে কিছু আচার-আচরণ, আইন এবং ধর্মীয় সংগঠনের ক্ষেত্রে কিছু মতভেদ আছে। এ দুই সম্প্রদায়ের নেতাদের মধ্যেও দেখা যায় একে অন্যের ওপর প্রাধান্য বিস্তারের চেষ্টা। প্রসঙ্গত, মুসলিম বিশ্বে সুন্নিরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। পরিসংখ্যান অনুযায়ী ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ মুসলিমই সুন্নি মতাবলম্বী। বিপরীতে শিয়াদের সংখ্যা ১৭ কোটির মতো। ৪ জানুয়ারি, ২০১৬/এমটি নিউজ২৪ডটকম/এসএস/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে