মঙ্গলবার, ১০ নভেম্বর, ২০২০, ০৯:৪৯:১২

আবারও হুমকির মুখে আর্মেনিয়া-আজারবাইজান শান্তি চুক্তি

আবারও হুমকির মুখে আর্মেনিয়া-আজারবাইজান শান্তি চুক্তি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ছয় সপ্তাহ ধরে নার্গোনো কারাবাখ নিয়ে আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের মধ্যে সংঘাত অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবার সংকট সমাধানে শান্তি চুক্তিতে একমত হয় ইয়েরেভান এবং বাকু। এতে মধ্যস্থতা করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। চুক্তি সইয়ের দিন থেকেই শান্তি চুক্তি কার্যকরের কথা রয়েছে।

তবে রুশ মধ্যেস্থতায় নার্গোনো-কারাবাখ শান্তি চুক্তিকে 'অবর্ণনীয় কষ্টের' বলে অভিহিত করেছেন আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনয়ান। সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে দেয়া এক আবেগঘন পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন। আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ এক টুইট বার্তায় একে ঐতিহাসিক দিন আখ্যা দিয়েছেন। বলেন, নার্গোনো-কারাবাখ নিয়ে আর্মেনিয়া আজারবাইজানের সংঘাত নিরসন হচ্ছে।

নিকোলের ঘোষণায় আর্মেনিয়ার রাজধানী ইয়েরেভানে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে পোস্টের দেয়ার ২০ মিনিটের মধ্যেই ইয়েরেভানের পার্লামেন্টের সামনে জড়ো হতে থাকেন সাধারণ মানুষ। এক পর্যায়ে পার্লামেন্টে প্রবেশ করেন তারা। দাবি জানান, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের। প্রতিবেশি জর্জিয়ার তিবিলিসি থেকে আল জাজিজার প্রতিনিধি জানান, যুদ্ধ বন্ধের ঘোষণায় ঘৃণা এবং হতাশা ব্যক্ত করেছেন আর্মেনিয়ার সাধারণ মানুষ। 

মঙ্গলবার নিকোল বলেন, নিজ দেশের সেনাবাহিনীর চাপে তিনি শান্তি চুক্তিতে একমত হয়েছেন। নার্গোনো কাবারাখে সবধরনের সামরিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। সেখানকার পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ বলেও জানান তিনি। আর্মেনিয়ার কাছ থেকে নার্গোনো কারাবাখের দ্বিতীয় বৃহত্তর শহর শুশা পুনরুদ্ধার এবং আজারি বাহিনী একটি রুশ বিমান দুর্ঘ'টনাবশত ভূপা'তিত করার পরই শান্তি চুক্তির ঘোষণা এলো। 

চুক্তি অনুযায়ী নার্গোনো কারাবাখ ফ্রন্ট লাইন, নার্গোনো-কারাবাখ এবং এ আর্মেনিয়ার মধ্যকার করিডোরে শান্তিরক্ষী মোতায়েন করবে রাশিয়া। শান্তি চুক্তি ঘোষণার পরপরই বাকুর রাস্তায় নেমে আসেন আজারবাইজানের সাধারণ মানুষ। জাতীয় পতাকা উড়িয়ে উল্লাস প্রকাশ করেন তারা। তবে রাশিয়ার মধ্যস্থতায় শান্তি চুক্তি করায় আপত্তি জানিয়েছেন অনেকে।

আলিয়েভ জানান, শান্তি রক্ষায় তুরস্কও অংশ নেবে। রাশিয়া-তুরস্কের সেনারা যৌথ ভাবে টহল কার্যক্রম পরিচালনা করবে। তুর্কি সেনারা শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণ করবে বলেও জানান আলিয়েভ। তবে রাশিয়া জানিয়েছে, নার্গোনো কারাবাখে শান্তি রক্ষায় তুর্কি সেনা মোতায়েনের বিষয়টি চুক্তিতে নেই।

ফ্রান্স জানিয়েছে, তারা শান্তি চুক্তির বিভিন্ন ধারা পর্যবেক্ষণ করে দেখছে। দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে আর্মেনিয়ার স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়া উচিৎ বলে জানায় ম্যাক্রোঁ প্রশাসন। ওই অঞ্চলে উস্কানি বন্ধের জন্য তুরস্কে বলেছে প্যারিস। ভবিষ্যতে কোনো চুক্তিতে আঙ্কারা যেনো বাগড়া না দেয় সে বিষয়েও সতর্ক করা হয়। নার্গোনা কারাবাখের উদ্দেশে ইতোমধ্যে ১ হাজার ৯৬০ রুশ সেনা দেশ ছেড়েছে। তাদেরকে বহন করছে ১২টি সামরিক বিমান। 

শান্তিরক্ষীদের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় যুদ্ধাস্ত্র রয়েছে বিমানে। চুক্তি অনুযায়ী রুশ সেনারা নার্গোনো কারাবাখ অঞ্চলে থাকবে। মঙ্গলবার সই হওয়া চুক্তিতে বলা হয়, নার্গোনো কারাবাখের যে সব অঞ্চল আজানবাইনজান পুনরুদ্ধার করেছে সেগুলো তাদের অধীনে থাকবে। আরো কয়েকটি এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহারে রাজি হয় আর্মেনিয়া। একে বিজয় আখ্যা দিয়েছে আজারবাইজান।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে