সোমবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২০, ০৭:০৫:০৩

সেনা অফিসার পরিচয়ে বিয়ে, সহবাসের ছবি ছড়ানোর হুমকি; বিপাকে তরুণী!

সেনা অফিসার পরিচয়ে বিয়ে, সহবাসের ছবি ছড়ানোর হুমকি; বিপাকে তরুণী!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চাকরি পাওয়ার আশায় সেনা অফিসার পরিচয় দেওয়া এক ব্যক্তিকে বিয়ে করে চরম বিপাকে পড়েছেন পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান শহরের বিধানপল্লীর এক তরুণী। চাকরি তো হয়ইনি, উল্টো থানায় অভিযোগ জানানোয় সহবাসের ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে যুবতীকে। জোর করে একাধিক বার গর্ভপাতও করানো হয়েছে তার। 

যুবতীর অভিযোগ, টাকার লোভে ওই ব্যক্তির পক্ষ নিয়েছেন তার নিজের মাও। বর্ধমান থানায় অভিযোগ জানানোর পর তদন্তে নেমেছে পুলিশ। ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে রেকর্ড করা হয়েছে যুবতীর গোপন জবানবন্দি। পুলিশি তদন্তের সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর চারেক আগে যুবতীর বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। তখন তিনি হন্যে হয়ে চাকরি খুঁজছিলেন। সেই সূত্রেই আলাপ হয় বর্ধমান শহরের ইছলাবাদের এক ব্যক্তি এবং খণ্ডঘোষ থানার গোলাহাটের এক ব্যক্তির সঙ্গে। 

গোলাহাটের বাসিন্দা ওই ব্যক্তি নিজেকে সেনা অফিসার বলে পরিচয় দেন। ইছলাবাদের বাসিন্দা নিজেকে স্কুল সার্ভিস কমিশনের সচিব বলে পরিচয় দেন। দেওয়া হয় ভাল চাকরির প্রতিশ্রুতি। তরুণী অভিযোগপত্রে জানিয়েছেন, চাকরির অছিলায় তাকে বেশ কয়েক বার বর্ধমান শহরের একাধিক রেস্তরাঁয় ডেকে পাঠান অভিযুক্ত দু'জন। সেখানে আরও ৩ জন হাজির হন। তারাও নিজেদের উচ্চপদস্থ অফিসার বলে পরিচয় দেন। 

কিছুদিন পর তার কাছ থেকে শিক্ষাগত যোগ্যতার শংসাপত্র, ছবি ও ৪৮ হাজার টাকা নেন অভি্যুক্তরা। তাকে কয়েকটি সাদা স্ট্যাম্প পেপারে সই করিয়ে নেওয়া হয়। চাকরির প্রয়োজনেই এ সব করা হচ্ছে বলে জানানো হয় তাকে। তরুণী জানিয়েছেন, কিছুদিন পর তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন সেনা অফিসার পরিচয় দেওয়া গোলাহাটের ওই ব্যক্তি। যুবতীর মা বিয়েতে সম্মতি দেওয়ার পর গত বছরের জুন মাসে তরুণীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়। 

তবে, বিয়ের অনুষ্ঠানের কোনও ছবি তুলতে দেওয়া হয়নি। কিছু দিন পর তাকে বর্ধমান শহরে বিজয়নগর এলাকার একটি ভাড়া বাড়িতে নিয়ে আসেন ওই ব্যক্তি। স্বামীর সঙ্গে কিছুদিন কাটানোর পর তার আসল রূপ জানতে পারেন যুবতী। তিনি জানিয়েছেন, জেনে ফেলার পর শুরু হয় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। এমনকি তাকে চাপ দেওয়া হয় স্বামীর বন্ধুদের সঙ্গে সহবাস করার জন্য। তাতে রাজি না হওয়ায় শুরু হয় মারধর। আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে যুবতীকে ভয় দেখানো হয়। 

বিষয়টি যুবতী তার মাকে জানান। কিন্তু মা উল্টে পরামর্শ দেন স্বামীর আবদার মেনে নেওয়ার জন্য। এর মধ্যেই এক দিন যুবতী দেখতে পান, স্বামীর সঙ্গে তার সহবাসের ভিডিয়ো জানালা দিয়ে রেকির্ডং করছেন তার মা। যুবতীর মা জানান, প্রতিটি রেকির্ডংয়ের জন্য তাকে ১২০০ টাকা দেন জামাই। সেই টাকা দিয়ে তিনি সংসার চালান। অন্য দিকে খোঁজখবর নিয়ে যুবতী জানতে পারেন, তাঁর স্বামী বিবাহিত। তাঁর ছেলেও রয়েছে। স্বামীর বিরুদ্ধে রয়েছে মামলাও। 

এ সব নিয়ে প্রশ্ন করা হলে অ'শ্লী'ল ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার হু'মকি দেওয়া হয়। কিন্তু তাতেও অভিযোগকারিণী যুবতী দমে না যাওয়ায় শেষ পর্যন্ত তাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগে জানিয়েছেন তিনি। বর্ধমান থানা সূত্রে খবর, ঘটনার তদন্ত শুরু হলেও এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। থানার এক অফিসার বলেন, ''নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে আমরা তদন্ত শুরু করেছি। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।'' সূত্র : আনন্দবাজার

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে