মঙ্গলবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২০, ০৭:২৬:৫৫

রাজনৈতিক সঙ্গীদের দলত্যাগ; একা হয়ে পড়চ্ছেন মমতা ব্যানার্জী!

রাজনৈতিক সঙ্গীদের দলত্যাগ; একা হয়ে পড়চ্ছেন মমতা ব্যানার্জী!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর এক সময়ের রাজনৈতিক সঙ্গীরা একে একে দল ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। মমতা ব্যানার্জীর নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেসের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নেতার দলত্যাগের কারণে ক্রমেই তিনি সঙ্গীহারা হচ্ছেন বলে মনে করা হচ্ছে। 

ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসে ভাঙন ধরিয়ে মমতা ব্যানার্জীকে বিপাকে ফেলছেন বলে অভিমত অনেকের। এ ধারা এখনও অব্যাহত রয়েছে বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সূত্রে জানা গেছে। ২০১১ সালে রাজ্যের তৎকালীন শাসক ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির (মার্ক্সবাদি)-সিপিআইএমের নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্টকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করেন মমতার তৃণমূল কংগ্রেস।  

এরপর আবারও ২০১৬ সালে ক্ষমতায় বসেন তিনি। এর আগে ২০০৫ সালে মমতা ব্যানার্জীর উত্থান হয়েছিল বাম শাসনামলে অন্যায় ভূমি অধিগ্রহণ নীতির বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে। সে সময় সিঙ্গুর এ নন্দীগ্রামে সংঘটিত আন্দোলনে মমতা ব্যানার্জীর সহযোগী ছিলেন রাজ্যের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নেতা। কিন্তু সময়ের সঙ্গে এসব নেতাদের অনেকেই এখন তার পাশে নেই। দল ত্যাগ করে অনেকেই নাম লিখিয়েছেন বিজেপিতে।

এ তালিকায় শুধু দলের নিচু বা মধ্যম সারির নেতারা রয়েছেন এমনটা নয় বরং তৃণমূল কংগ্রেস যাদের হাত ধরে আজকের এ পর্যায়ে এসছে তারাই এখন অন্য দলে। এ প্রক্রিয়া এখনও চলমান রয়েছে। গত দু মাস ধরে আলোচনা চলছে রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী ও সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনে মমতা ব্যানার্জীর গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী শুভেন্দু অধিকারিকে নিয়ে। বেশ কিছুদিন ধরে দলবদল করে তার বিজেপিতে যাওয়া নিয়ে জল্পনা চলছে। 

তৃণমূল কংগ্রেসে মমতার পরে দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন নেতা মুকুল রায়। কিন্তু ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের বেশ আগে তার দলত্যাগের মধ্য দিয়ে বিজেপি দলটিকে সবচেয়ে বড় ধাক্কা দেয়। মুকুল রায়ের বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর, তৃণমুল থেকে নির্বাচিত সাংসদ পদ ত্যাগ করে বিজেপিতে গিয়ে আবারও সাংসদ হয়েছেন সৌমিত্র খা, এরপর তৃণমূলের বিধায়ক পদ ত্যাগ করে অর্জুন সিং বর্তমানে বিজেপির লোকসভার সাংসদ, তৃণমূলের বিধায়ক পদ ত্যাগ করে নীতীশ প্রামাণিক বর্তমানে বিজেপির সাংসদ। 

এরপর বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন কলকাতার সাবেক মেয়র, রাজ্যের মন্ত্রী ও মমতার এক সময়ের ঘনিষ্ঠজন শোভন চট্টোপাধ্যায়। সাংসদ পদ ত্যাগ করা আরেক নেতা অনুপম হাজরাও এখন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক উল্লম্ফন যে আন্দোলনের নেতাদের মাধ্যমে তারা যখন তার পাশ থেকে সরে যাচ্ছেন তখন রাজনৈতিকভাবে সঙ্গীহীন হওয়ার প্রশ্নটি বারবার সামনে আসছে বলে মনে করছেন অনেকে।  

তৃণমূল থেকে বিজেপিতে নাম লেখানো নেতাদের তালিকায় এবার যদি শুভেন্দুর নাম আসে তবে সেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য চরম ক্ষতিকর হবে বলেই বিশ্লেষকরা মনে করেন। এর বাইরেও দলটির আরও অনেক শীর্ষ পর্যায় ও প্রান্তিক পর্যায়ের নেতাকর্মীর নাম শোনা যাচ্ছে যারা দল বদল করবেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা।    

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে