শনিবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২০, ০৯:৫৫:৫৭

মার্কিন চাপ সামলাতে তুরস্কের দিকে ঝুঁকছে সৌদি আরব

মার্কিন চাপ সামলাতে তুরস্কের দিকে ঝুঁকছে সৌদি আরব

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আঞ্চলিক বিষয়ে সমন্বয় এবং পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে সৌদি আরব এবং তুরস্ক স্বাভাবিক সম্পর্কের নতুন যুগে প্রবশে করতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে তা নির্ভর করছে নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের প্রত্যাশিত পররাষ্ট্রনীতির পরিবর্তন এবং সৌদি প্রশাসনে ওয়াশিংটনের প্রভাবের ওপর। 

মিডল ইস্টার্ন স্যাটেজিক স্ট্যাডিজের (ওআরএসএএম) প্রধান আহমেদ উসাল তুর্কি সংবাদমাধ্যম ডেইলি সাবাহকে বলেন, নতুন মার্কিন প্রশাসন যদি প্রত্যাশিত নীতি গ্রহণ করে, সৌদি আরব যদি যৌক্তিকভাবে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করে তাহলে সৌদি-তুরস্ক সম্পর্কের নতুন যুগ আমরা প্রত্যাশা করতে পারি।

'আঞ্চলিক দুই শক্তির মধ্যে সংঘাতের কোনো প্রয়োজন নেই। সৌদি আরব তার অযৌক্তিক অবস্থান থেকে সরে আসলে আঞ্চলিক অনেক বিষয়ে একে অপরকে সহায়তা করতে পারে।' দু'দেশের ইচ্ছা এবং দৃষ্টিভঙ্গির ওপর সবকিছুই নির্ভর করছে। তুরস্ক এ ধরনের সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত, বলেন উসাল।

কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইবনে খালদুন সেন্টারের সহকারী অধ্যাপক আলি বাকের বলেন, সৌদি-তুরস্ক সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে দীর্ঘমেয়াদী অনুমান এ মুহূর্তে কঠিন। তবে গেল দু'মাসে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নতি ইতিবাচিক ইঙ্গিত দেয়। রিয়াদ-আঙ্কারা বিষয়ে বাইডেনের নীতি অন্যদিকে ওয়াশিংটনের সঙ্গে তেহরানের সম্ভাব্য চুক্তিসহ সৌদি-তুরস্ক সম্পর্ক আরও অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করে।

উসাল বলেন, ''২০১১ সালে আরব বসন্তের পর দু'দেশের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। তবে বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদের শাসনামলে তুলনামূলকভাবে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নত হয়েছে।'' তারপর ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় এসে সম্পর্ক উন্নয়নের ধারাকে ব্যাহত করেন। যখন সৌদির শাসনভার ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের (এমবিএস) হাতে ন্যস্ত করেন, আঞ্চলিক নতুন একটি ক্ষমতা কেন্দ্র তৈরি হয়, তখন তুরস্ক থেকে আবারও সৌদি আরব দূরে সরে যায়।

উলদাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রধান তাইয়ার আরি উল্লেখ করেন, ২০১৭ সালে সৌদি প্রশাসনে কিছু উলটপালট হয়। ট্রাম্পের সমর্থনে একক ক্ষমতার অধিপতি হয়ে ওঠেন এমবিএস। তখন একপাশে পড়ে যান বাদশাহ। তিনি বলেন, এমবিএস'র বিদেশ পরিকল্পনার সঙ্গে বাদশাহ সালমানের নীতির ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে। আরি বলেন, এমবিএস ক্ষমতা পেয়ে সৌদি পররাষ্ট্রনীতিতে আমূল পরিবর্তন শুরু করেন। মুসলিম ব্রাদারহুডসহ আরব বসন্ত সমর্থনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক বৈরী পদক্ষেপ নেন। সহমর্মিতা প্রকাশ করেন ইসরাইলপন্থীতের প্রতি।

এ নীতিগুলো বাস্তবায়নে সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মিশরকে নিয়ে জোট গঠন করে সৌদি আরব। আরি বলেন, তুরস্ক তখনও কর্তৃত্ববাদী এমবিএস'র শাসন এবং নীতিকে উপেক্ষা করে সৌদি বাদশাহ সালমানকে দেশটির বৈধ শাসক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে আসছিল। দু'দেশের মধ্যকার আন্তরিকতা শূন্য সম্পর্ক সত্ত্বেও গেল মাসের মাঝামাঝিতে সৌদি বাদশাহ সালমানের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোয়ান।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে