শুক্রবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২০, ১০:৩৯:২৭

আলোচনা চলছে, ইসরাইলের সঙ্গে আরও ভালো সম্পর্ক চায় তুরস্ক: এরদোয়ান

আলোচনা চলছে, ইসরাইলের সঙ্গে আরও ভালো সম্পর্ক চায় তুরস্ক: এরদোয়ান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোয়ান বলেছেন, ইসরাইলের সঙ্গে আরও ভালো সম্পর্ক চায় তুরস্ক। এ লক্ষে দু'পক্ষের গোয়েন্দা পর্যায়ে আলোচনা চলছে। ইসরাইলের শীর্ষ ব্যক্তিদের সঙ্গে মতানৈক্য বা সমস্যা না থাকলে আমাদের সম্পর্ক ভিন্ন হতে পারতো। ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলি নীতি অগ্রহণযোগ্য আখ্যা দিয়ে সমালোচনাও করেন তিনি।

শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) ইস্তাম্বুলে জুমার নামাজ আদায়ের পর এরদোয়ান বলেন, ইসরাইলের সঙ্গে কখনোই আমরা সম্পূর্ণভাবে সম্পর্ক ছিন্ন করিনি। বর্তমানে দেশটির শীর্ষ ব্যক্তিদের সঙ্গে আমাদের প্রধান সমস্যা। ফিলিস্তিনি নীতি থেকে প্রত্যাবর্তনের কোনো সুযোগ আমাদের নেই। ফিলিস্তিন ইস্যুতে ইসরাইলের নীতি মেনে নেওয়া আমাদের পক্ষে অসম্ভব। তাদের নির্দয় কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

তিনি বলেন, 'ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করতে চায় তুরস্ক। আমরা আমাদের সম্পর্ককে একটি ভালো অবস্থানে নিয়ে যেতে চাই।' যদিও, সম্প্রতি বিভিন্ন খবরে দাবি করা হয়েছে, আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ তুরস্ক এবং ইসরাইলের মধ্যকার সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করছেন। ইসরাইল এবং তুরস্কের ড্রোন এবং অন্যান্য প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করে সম্প্রতি আর্মেনিয়ার দখল থেকে নার্গোনো-কারাবাখ উদ্ধার করে আজারবাইজান। 

ইসরাইলি ওয়েবসাইট ওয়ালা জানায়, গেল সপ্তাহের শুরুতে আলিয়েভ ইসরাইলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে এরদোয়ানকে আহ্বান জানান এবং বিভিন্ন পরামর্শ দেন। আজারবাইজানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও গেল সপ্তাহে ইসরাইলি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আঙ্কারা এবং তেল আবিবের মধ্যকার বিভেদ সংক্রান্ত কিছু বিষয় উত্থাপনের জন্য আহ্বান জানান। বলেন, বাকু দুই মিত্রদের মধ্যকার সম্পর্ক উন্নয়নে আগ্রহী।

২০১০ সালে ইসরাইল এবং তুরস্কের মধ্যকার সম্পর্কের ব্যাপক অবনতি হয়। ওই সময় ইসরাইলি নৌবাহিনী তুর্কি ত্রাণবাহী জাহাজে হামলা চালায়। ত্রাণ নিয়ে অবরুদ্ধ গাজায় যাচ্ছিল তুর্কি জাহাজ। এমভি মাভি মারমারা জাহাজে ইসরাইলি হামলায় তুরস্কের ১০ মানবাধিকারকর্মী নিহত হন। এ ঘটনা তুরস্ক-ইসরাইলের কয়েক দশক পুরনো শান্তিপূর্ণ সম্পর্ককে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

এ ঘটনার জেরে পাল্টাপাল্টি নিজেদের রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করে আঙ্কারা-তেল আবিব। ২০১৩ সালে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বিনইয়ামিন নেতানিয়াহু ওই নৃশংসতার জন্য ক্ষমতা চান। মাভি মারমারার ক্ষতিগ্রস্তদের ২ কোটি মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ দেন। এরপরই তুরস্ক-ইসরাইল সম্পর্কে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসে। ২০১৬ সালে উভয় দেশ পুনর্মিলনের অংশ হিসেবে আবার রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করে। 

বিভিন্ন সময়ে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তুরস্ক-ইসরাইল। অবরুদ্ধ গাজার মানবিক পরিস্থিতির অব্যাহত অবনতি, দখলকৃত জেরুজালেম এবং পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতি নির্মাণসহ ফিলিস্তিনে ইসরাইলের নীতির সমালোচনাও করতে থাকে তুরস্ক। ফিলিস্তিন সফরে ইসরাইলি বিধিবহির্ভুত কঠোরতার মধ্যে পড়তে হতো বলে অভিযোগ করেন তুর্কি নাগরিকরা। সূত্র: আল জাজিরা, ডেইলি সাবাহ।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে