শনিবার, ০২ জানুয়ারী, ২০২১, ১২:০৬:২০

এবার কাচের ট্রেনে যেতে পারবেন দার্জিলিং-কাশ্মীর

এবার কাচের ট্রেনে যেতে পারবেন দার্জিলিং-কাশ্মীর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইউরোপের বরফঢাকা পার্বত্য উপত্যকার রেলযাত্রার আনন্দের স্বাদ এ বার আসতে চলেছে ভারতেও। দেশটির পর্যটনশিল্পে গতি আনতে আসছে ভিস্টাডোম কোচ। ঘণ্টায় ১৮০ কি.মি. গতিবেগে পাড়ি দেওয়ার ক্ষমতাসম্পন্ন এই কোচগুলো থাকবে মূলত পাহাড়ি এলাকার ট্রেনে। রেল যাত্রাকে আরও মনোরম করে তোলাই এর মূল উদ্দেশ্য।

ভারতের রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল জানিয়েছেন, বুধবারই প্রথম দফার ভিস্টাডোম কামরার পরীক্ষামূলক যাত্রা সম্পন্ন হয়েছে। পশ্চিম-মধ্য রেলওয়েজের কোটা ডিভিশনে এই পরীক্ষামূলক যাত্রার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। রেল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানা হয়েছে, নির্ধারিত সময়ের সাত দিন আগেই অনুষ্ঠিত হল ট্রায়াল রান। চেন্নাইয়ের ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরিতে এই ভিস্টাডোম কামরা নির্মাণ করা হয়েছে।

অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি এই কামরাগুলোতে যাত্রীস্বাচ্ছন্দ্যকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কামরাগুলোর মূল বৈশিষ্ট হল এর এক দিকে থাকবে কাচের বড় বড় জানলা। ছাদেও থাকবে কাচের প্যানেল। আপাতত নির্দিষ্ট কিছু পার্বত্য এলাকা- দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে, নীলগিরি মাউন্টেন রেলওয়ে, কাংড়া ভ্যালি রেলওয়ে, কাশ্মীর উপত্যকা, কালকা-সিমলা রেলওয়ে, মহারাষ্ট্রের মাথেরান হিল রেলওয়ে এবং আরাকু উপত্যকার ক্ষেত্রে এই অত্যাধুনিক কামরাগুলোকে ব্যবহার করার কথা ভাবা হয়েছে।

কামরার জানলা এবং ছাদের কাচের স্বচ্ছতা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে সুইচের মাধ্যমে। সেই সুইচ থাকবে যাত্রীর কাছেই। তিনি ইচ্ছে করলে ওই কাচ স্বচ্ছ করে নেবেন। যাতে স্পষ্ট হয়ে ওঠে বাইরের দৃশ্য। টাইলস দিয়ে তৈরি হবে সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এই কামরাগুলোর ফ্লোর। যাত্রীদের আসন হবে রিসাইক্লেবল। অর্থাৎ ১৮০ ডিগ্রি পর্যন্ত ঘোরানো যাবে আসনগুলোকে। যাতে যাত্রাপথের কোনও মনোরম দৃশ্যই তার দৃষ্টি থেকে বাদ না পড়ে যায়।

দুর্গম পাহাড়ি উপত্যকার মধ্যে দিয়ে ছুটে গেলেও বাইরের জগৎ থেকে যাতে যাত্রীরা বিচ্ছিন্ন না হয়ে পড়েন, তার জন্য ভিস্টাডোম কামরায় থাকবে জিপিএস নির্ভর পাবলিক অ্যাড্রেস এবং ইনফরমেশন সিস্টেম। ৪৪ আসনের এই কামরায় থাকবে ওয়াইফাই পরিষেবাও। মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্যও দেখতে ইচ্ছে না করলে যাত্রীরা বিনোদনের জন্য চোখ রাখতে পারেন ডিজিটাল পর্দায়। এ ছাড়াও গান শোনার জন্য থাকবে স্পিকার। প্রত্যেক আসনের সঙ্গে থাকবে মোবাইল ফোন চার্জ দেওয়ার ব্যবস্থা।

কামরার শেষপ্রান্তে থাকছে লাউঞ্জ। আসনবিহীন বেশ কিছুটা খোলা জায়গা সেখানে থাকবে। যাতে যাত্রীরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বড় কাচের জানলা দিয়ে উপভোগ করতে পারেন মনোরম দৃশ্য। সিসিটিভির নজরদারিতে থাকা কামরার দুই প্রান্তেই থাকবে স্লাইডিং ডোর। যাতে কোনও যাত্রী হুইলচেয়ারে থাকলেও তার কামরায় উঠতে কোনও সমস্যা না হয়। যাত্রীদের জন্য থাকছে ছোট্ট প্যান্ট্রিও। 

হট কেস, মাইক্রোওয়েভ ওভেন, কফিমেকার, বটলকুলার ছাড়াও সেখানে থাকবে রেফ্রিজারেটর এবং ওয়াশবেসিন। কামরায় থাকবে অত্যাধুনিক এফআরপি মডিউলার টয়লেট এবং স্বয়ংক্রিয় অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। ইন্টিগ্রাল কোচ কারখানা প্রথম দফায় ১০টি ভিস্টাডোম কামরা নির্মাণ করবে। দুটি কামরা নিয়ে পরীক্ষামূলক যাত্রা ইতোমধ্যেই সফল হয়েছে। বাকি কামরাগুলোর নির্মাণ আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে জানা গেছে। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে