বুধবার, ২০ জানুয়ারী, ২০২১, ০৪:৪৮:৩১

জো বাইডেনের সামনে যে ৫টি বিরাট চ্যালেঞ্জ

জো বাইডেনের সামনে যে ৫টি বিরাট চ্যালেঞ্জ

আন্তর্জাতি ডেস্ক : নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এমন সময় মার্কিন মসদনে বসতে যাচ্ছেন যখন করোনা মহামারিতে গোটা বিশ্ব নাস্তানাবুদ। আবার করোনার এ মহামারিই ডোনাল্ড ট্রামকে পরাজিত করে বাইডেনকে জয়ের মুকুট পরতে সাহায্য করেছে। তাই করোনার ধাক্কা সামলে মার্কিন অর্থনীতি পুনরুদ্ধারই প্রথম চ্যালেঞ্জ। প্রথম দিন থেকেই প্রথম কয়েক মাস সময় লেগে যাবে অর্থনীতির গতি ফিরিয়ে আনতে।

১. বাইডেন পরিকল্পনায় করোনার ক্ষতি কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে যুক্তরাষ্ট্র?

এরইমধ্যে বাইডেন করোনা মোকাবিলায় ১ দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন ডলার জরুরি তহবিল ঘোষণা করেছেন এবং দ্বিতীয় তহবিল গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তহবিলের অর্থ থেকে অবকাঠামো বিনিয়োগ, গবেষণা, পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন গুরুত্ব দিতে চান যা যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে গতি ফেরাবে বলে তিনি মনে করেন। নভেম্বরের নির্বাচনের বাইডেন আশ্বাস দিয়েছিলেন, প্রেসিডেন্ট হতে পারলে তার পরিকল্পনা করোনা মহামারি কাটিয়ে মার্কিন অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে।

গেল সপ্তাহে ঘোষণা করা 'আমেরিকান পুনোরুদ্ধার' তহবিলের ১ দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন ডলারের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত নাগরিককে ১৪শ' ডলার করে এবং রাষ্ট্র ও প্রাদেশিক পর্যায়ে ৩৫০ বিলিয়ন ডলার খরচ করবেন। ৭০ বিলিয়ন ডলার খরচ করবেন করোনায় চাকরি হারানোদের জন্য এবং করোনা টেস্ট ও ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে।

বাইডেন বলেন, এ সংকটের সময় সবাই ভুক্তভোগী হয়েছে, প্রত্যেক নাগরিকের পকেটে ডলার থাকলেই অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে। তবে রিপাবলিকানরা বাইডেনের এসব পরিকল্পনা নিয়ে সংশয় জানিয়েছে। ওয়াল স্ট্রিট ও গোল্ডম্যান স্যাক্স গবেষণা বলছে, এ তহবিলের সঙ্গে ত্রাণ তহবিলে আরও সাড়ে ৭০০ বিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত ব্যয় করতে হতে পারে।

২. কী হতে যাচ্ছে ন্যূনতম মজুরি ও করকাঠামো?

বাইডেন ন্যূনতম মজুরি ১৫ ডলার ঘোষণা করেছেন এবং যেসব প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ লাভজনক অবস্থানে আছে তাদের আরও সহায়তা দেওয়ার কথা বলছেন। গেল কয়বছরে ট্রাম্প প্রশাসন ৩৫ শতাংশ থেকে কর কমিয়ে ২১ শতাংশে এনেছেন। কিন্তু ধনী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর আবারও উচ্চ কর আরোপের পক্ষে বাইডেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ মুহূর্তেই উচ্চ কর হার কাম্য নয়।

৩. পরিবেশবান্ধব অবকাঠামো খাতে ট্রিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ!

বাইডেন প্রথম ধাক্কা দিতে চান করোনা মহামারি থেকে উত্তরণে। বাড়াতে চান কর হার। দ্বিতীয় তহবিল গঠন থেকে বিশাল অংকের বিনিয়োগ করতে চান পরিবেশ বান্ধব অবকাঠামো উন্নয়নে। উদাহরণস্বরূপ, সারাদেশে বৈদ্যুতিক গাড়ির চার্জিং স্টেশনের মতো ভিন্ন ভিন্ন খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে চান। তিনি বলন, এ পরিকল্পনায় ব্যবসায়ীরা বেশ উপকার পাবেন। এরইমধ্যে এ পরিকল্পনার সমালোচনার মুখে পড়েছে। এমন কী খরচ বাড়ানোর এ পরিকল্পনা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন অনেকে।

৪. কী হতে পারে বাইডেনের অভিবাসন নীতি?

অভিবাসন ও পরিবেশ বিষয়ে নীতিতে সিদ্ধান্ত নিতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে কংগ্রেসের মুখাপেক্ষী থাকতে হবে না। নির্বাহী ক্ষমতাবলে তিনি একাই যেকোনো রকম সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। যেখানে ট্রাম্প প্রশাসনের হাত-পা অনেকটা বাঁধা ছিল। বাইডেন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দ্রুতই ট্রাম্প নীতি থেকে সরে আসবেন তিনি। প্যারিস জলবায়ু সম্মেলন বাস্তবায়নে কাজ করবেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশের ভ্রমণকারীদের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে দেবেন। নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে এমন কিছু ক্ষমতা বাইডেনের থাকতে পারে যে ক্ষমতাবলে তিনি পরিবেশ দূষণ রোধে নতুন নিয়মনীতি প্রয়োগ করতে পারেন, ওয়াশিংটনের ব্যয় তদারকি করতে পারেন।

৫. শিক্ষার্থীদের ঋণের বিষয়ে নতুন কিছু থাকবে?

ডেমক্রেট নেতারা শিক্ষার্থীদের জন্য ৫০ হাজার ডলার পর্যন্ত ঋণ মওকুফের একটি নির্বাহী আদেশে সই করতে বাইডেনকে চাপ দিয়ে আসছেন। কিন্তু নির্বাচনী প্রচারণা থেকে বাইডেন বলে আসছেন ১০ হাজার ডলার পর্যন্ত ঋণ মওকুফে তিনি সম্মত। এছাড়াও চীনের সঙ্গে মার্কিন বাণিজ্য নীতি কি হবে? আবার অর্থনীতির মোড়ল যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের বাণিজ্য নীতিই বা কি হবে সেদিকে তাকিয়ে থাকবে পুরো বিশ্ব।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে