রবিবার, ৩১ জানুয়ারী, ২০২১, ০৮:৫৪:৪১

'ভারতে বিভাজন রুখতে মোদির ওপর বাইডেন চাপ প্রয়োগ করবেন'

'ভারতে বিভাজন রুখতে মোদির ওপর বাইডেন চাপ প্রয়োগ করবেন'

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ড. ইমতিয়াজ আহমেদ। পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, কানাডার কার্লটন বিশ্ববিদ্যালয় ও অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ে। জাপানের ইয়োকোহামা সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে কাজ করেছেন। এখন অধ্যাপনা করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে। গত ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রে নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দায়িত্ব গ্রহণ এবং তার নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের সম্ভাব্য পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে কথা বলেছেন

ইসরায়েল মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে মরিয়া। যেটি যুক্তরাষ্ট্রের সদ্যসাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ নীতির প্রতিফলন। সৌদি আরবও ইসরায়েলের সঙ্গে মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে মধ্যস্থতা করছে। বাইডেন কী করতে পারেন?

ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমস্যা ছিল, তিনি মনে করেন জনগণ নয়, একটি রাষ্ট্রের প্রধানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করতে পারলেই হলো। কিন্তু বারাক ওবামা প্রেসিডেন্ট থাকাকালে কায়রো ইউনিভার্সিটিতে যে বক্তব্য দিয়েছিলেন, সেখানে জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে গুরুত্ব দিয়েছিলেন। আরব বসন্ত কিন্তু এরপর থেকেই। বসন্তের সেই বাতাস ট্রাম্প গায়ে লাগাতে চাননি। বাইডেন এটি উপলব্ধি করতে পারবেন বলে মনে করি।

তিনি বলেন, আরব বিশ্বে ইসরায়েল ফ্যাসিস্ট চরিত্র প্রকাশ করছে অনবরত। ইসরায়েল-ফিলিস্তিন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আগের 'টু স্টেট থিউরি'তে না ফিরলে সমস্যা আরও বাড়বে। ইসরায়েলকে ভূমি দখলে ট্রাম্প উৎসাহ দিয়েছিলেন এবং এর জন্য আরব বিশ্বের কতিপয় মুসলিম দেশের প্রধানকে তিনি হাত করেছিলেন। বাইডেন এটি অবশ্যই করতে চাইবেন না। মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফেরাতে হলে অবশ্যই ট্রাম্পের নীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। নইলে সেখানে শান্তি আসবে না।

পাকিস্তান-যুক্তরাষ্ট্রের মধুর সম্পর্কে ফাটল ধরেছে বেশ ক'বছর আগেই। যুক্তরাষ্ট্র-ভারত মাখামাখি সম্পর্কে ট্রাম্প ভূমিকা রেখেছেন। এখন কী হতে পারে? জবাবে ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, এই হিসাব সহজে মিলবে না। কারণ দক্ষিণ এশিয়ার নিয়ন্ত্রণে চীনও একটি বড় শক্তি। করোনা মহামারির মধ্যেও ভারতের সঙ্গে চীনের সংঘাত হলো। দক্ষিণ এশিয়ায় এমনকি ভারতের সঙ্গেও চীনের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক সম্পর্ক। 

তিনি বলেন, চীনের বিনিয়োগও সবচেয়ে বেশি এই অঞ্চলে। এ কারণে ভারত-পাকিস্তান কাঠামো থেকে দক্ষিণ এশিয়াকে মূল্যায়ন করা ঠিক হবে না। প্রশ্ন হচ্ছে, ট্রাম্পের নীতি অনুসরণ করে নরেন্দ্র মোদিও এ অঞ্চলে অস্বস্তি বাড়িয়েছিলেন। দ্বি-জাতি তত্ত্ব দিয়ে ভারতে অস্থিরতা বাড়িয়েছে বিজেপি সরকার। অথচ আমরা এ তত্ত্ব থেকে ১৯৭১ সালে বেরিয়ে এসেছি। মোদির রাজনীতি নিয়ে বাইডেন অস্বস্তিতে আছেন বলে মনে করি।

ড. ইমতিয়াজ বলেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস অনেক আগেই কাশ্মীর নিয়ে সমঝোতার কথা বলেছিলেন। এখন তিনি হোয়াইট হাউসে। কাশ্মীরি আমেরিকান একজনকেও বাইডেনের প্রশাসনে যুক্ত করা হয়েছে। এ প্রশ্নে আমার মনে হয় না ট্রাম্প-মোদির সম্পর্কের মতো বাইডেন-মোদির সম্পর্ক হবে। দুজনের ব্যক্তিত্ব সম্পূর্ণ আলাদা। সার্কের ব্যাপারেও আগ্রহ দেখাতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। এ কারণেই বলছি, ভারত নাকি পাকিস্তান এই সমীকরণ আপাতত থাকবে না। মোদির দ্বি-জাতি তত্ত্ব মার খাবে। ভারতে বিভাজন রুখতে মোদির ওপর বাইডেন চাপ প্রয়োগ করবেন। কিন্তু এর জন্যও অপেক্ষা করতে হবে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে