সোমবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২১, ১১:৪২:৪৩

মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ‘যুদ্ধ ঘোষণা’ করেছে: জাতিসংঘের বিশেষ কর্মকর্তা

 মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ‘যুদ্ধ ঘোষণা’ করেছে: জাতিসংঘের বিশেষ কর্মকর্তা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মিয়ানমারে রক্তপাতহীন সামরিক অভ্যুত্থানের ১৪তম দিনে দেশটির বেশ কয়েকটি শহরের রাস্তায় সেনাবাহিনীর সশস্ত্র গাড়ি টহল দিচ্ছে। দেশটির বেশির ভাগ জায়গায় ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেনা অভ্যুত্থানের পরপরই মিয়ানমারে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এ নিয়ে দ্বিতীয় দফায় ইন্টারনেট বন্ধ করা হলো দেশটিতে। 

এদিকে মিয়ানমারের কাচিন রাজ্যের উত্তরে নিরাপত্তা বাহিনী সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে চলা বিক্ষোভে গুলি চালিয়েছে। জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা অভিযোগ করেছেন, সেনাবাহিনী ‘যুদ্ধ ঘোষণা’ করেছে। মিয়ানমারবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ কর্মকর্তা টম অ্যান্ড্রুজ বলেন, জান্তা সরকার বেপরোয়া আচরণ করছে। এ জন্য তাদের জবাবদিহি করতে হবে।

মিয়ানমারের টেলিকম অপারেটররা জানান, স্থানীয় সময় রোববার রাত ১টা থেকে আজ সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত তাদের ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। গার্ডিয়ানের খবরে জানা যায়, স্থানীয় সময় শনিবার রাতে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। ২৪ ঘণ্টা পর তা আবার সচল হয়।

নেইপিদোর একটি হাসপাতালের চিকিৎসক বিবিসিকে জানান, নিরাপত্তা বাহিনী রাতে বাড়িতে বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে। নিরাপত্তার কারণে নাম প্রকাশ না করে ওই চিকিৎসক বলেন, ‘কারফিউ জারি করা হয়েছে। রাত ৮টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত বের হতে নিষেধ করা হয়েছে। কিন্তু আমাদের মতো জরুরি প্রয়োজনে যাদের বের হতে হবে, তাদের পুলিশ ও সেনাবাহিনী গ্রেফতার করতে পারে। এসব নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন।’ 

মিয়ানমারে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে যারা বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এই বিক্ষোভকারীদের যাতে আশ্রয় না দেওয়া হয়, সে জন্য জনসাধারণকে সতর্ক করেছে সামরিক সরকার। মিয়ানমারে প্রথম প্রকাশ্য বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিলেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। এরপর বিক্ষোভে নেমেছিলেন সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাদের লক্ষ্য করেই এই গ্রেফতার অভিযান শুরু হয়েছে। পুলিশ এখন সাত বিক্ষোভকারীকে খুঁজছে। ওই সাতজনের মধ্যে পরিচিত কয়েকজন গণতন্ত্রকামী অধিকারকর্মী রয়েছেন। তাদের গ্রেফতারে সাহায্য করতে একটি ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থান হয় ১ ফেব্রুয়ারি। এর মধ্য দিয়ে ক্ষমতাচ্যুত করা হয় দেশটির স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি ও প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টকে। আর ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নেন দেশটির সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল মিন অং হং লাইং। এ ছাড়া ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব দেওয়া হয় সাবেক জেনারেল ও বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট মিন্ট সোয়েকে। পার্লামেন্টের প্রথম অধিবেশন শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে ১ ফেব্রুয়ারি প্রেসিডেন্ট মিন্ট, সু চিসহ শীর্ষ নেতাদের প্রথমে আটক এবং পরে বিভিন্ন অভিযোগে গ্রেফতার দেখানো হয়। এরপর দেশটিতে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে