আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রবিবার ব্রিগেড সমাবেশ করেছে বিজেপি। প্রথম বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলকে নজিরবিহীন আক্রমণ করেছেন তিনি। তার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই তৃণমূলে বড় ভাঙন ধরাল বিজেপি। সোমবার বিজেপির হেস্টিংস কার্যালয়ে তৃণমূলের চার বিদায়ী বিধায়ক বিজেপিতে যোগদান করলেন।
সোনালি গুহ, দীপেন্দু বিশ্বাস, রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, জটু লাহিড়ী বিজেপিতে এলেন। সেইসঙ্গে মালদার হাবিবপুর কেন্দ্রে তৃণমূলের ঘোষিত প্রার্থী সরলা মুর্মু বিজেপিতে যোগদান করলেন। এছাড়া জনপ্রিয় অভিনেত্রী তনুশ্রী চক্রবর্তী নাম লেখালেন গেরুয়া শিবিরে। সেইসঙ্গে দক্ষিন দমদম পুরসভার জনপ্রিয় নেতা তথা বিদায়ী কাউন্সিলর মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য এদিন যোগদান করলেন বিজেপিতে।
তবে এদিন সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হিসেবে ব্যাখ্যা করতে হবে মালদা জেলা পরিষদের ১৪ জন সদস্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেছেন। ৩৭ আসন বিশিষ্ট মালদা জেলা পরিষদে ম্যাজিক সংখ্যা হচ্ছে ১৯। সেখানে এই যোগদানের পর বিজেপির সদস্য বেড়ে দাড়াল ২৩। স্বাভাবিকভাবেই মালদা জেলা পরিষদ বিজেপির দখলে চলে এলো।
রাজ্যে এই প্রথম বিজেপি কোনও একটি জেলা পরিষদ দখল করল। এদিন মালদা জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী মৌসম বেনজির নূর বিশেষ বৈঠক ডেকেছিলেন। সেখানে ব্যাপক অশান্তি দেখা যায়। বৈঠক থেকে উত্তেজিত হয়ে একজন কাউন্সিলর বেরিয়ে যান বলে খবর। ততক্ষণে অবশ্য জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মন্ডলসহ ১৪ জন কাউন্সিলর কলকাতায় এসে বিজেপিতে যোগদান করেছেন।
উল্লেখ্য শুভেন্দু অধিকারী মালদার পর্যবেক্ষক থাকার সময় কংগ্রেসের হাত থেকে জেলা পরিষদ ছিনিয়ে নিয়েছিল তৃণমূল। ঘটনাচক্রে শুভেন্দু এখন বিজেপিতে। এবার সেই শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে একসঙ্গে এতজন কাউন্সিলর তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করলেন।
বিষয়টি নিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন," যে সমস্ত সদস্য দল ছেড়েছেন তাঁরা সকলেই নির্দল হিসেবে একটি গ্রুপ তৈরি করেছেন। তাই তাঁরা লিখিতভাবে বিষয়টি জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনকে। অর্থাত্ মালদা জেলা পরিষদ আজ থেকে বিজেপির দখলে এলো।" এমনটাই দাবি করেছেন তিনি। একই কথা বলেছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
দিলীপ আরও বলেন, আগামীদিনে ওল্ড মালদা দখল করতে চলেছে বিজেপি। এদিকে একসঙ্গে চার তৃণমূলের বিদায়ী বিধায়ক বিজেপিতে যোগদান করায় উচ্ছ্বসিত গেরুয়া শিবির। বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, "তারা সকলেই আমাদের সঙ্গে থেকে কাজ করতে চান। আমরা সেই সুযোগ দিচ্ছি। তবে তাদের প্রার্থী করা হবে কিনা সে বিষয়ে কোনও কথা হয়নি। সেটা ভবিষ্যতের ব্যাপার"।
এছাড়া মালদা জেলার বেশ কয়েকজন সাংগঠনিক গুরুত্বপূর্ণ নেতা এদিন তৃণমূলে যোগদান করেছেন। এভাবে যে তৃণমূলে আজ ভাঙন ধরবে, সেটা আগাম আঁচ করতে পারেননি তৃণমূল নেতৃত্ব। যদিও তাদের দাবি, এতে দলের কোনও ক্ষতি হবে না। যোগদান পর্বের পর বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, 'বিনা শর্তেই প্রত্যেকে আজ বিজেপিতে যোগদান করলেন।'