সোমবার, ০৮ মার্চ, ২০২১, ০৭:১৪:৪৩

সুইজারল্যান্ডের গণভোটে মুসলিমদের বোরকা-নিকাব পরা নিষিদ্ধের পক্ষে রায়

সুইজারল্যান্ডের গণভোটে মুসলিমদের বোরকা-নিকাব পরা নিষিদ্ধের পক্ষে রায়

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সুজারল্যান্ডে এক গণভোটে মুসলিম নারীদের বোরকা বা নিকাবসহ প্রকাশ্যস্থানে মুখ-ঢাকা পোশাকের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পক্ষে ভোট পড়েছে। গণভোটের সরকারি ফলাফলে দেখা যায়, সামান্য ব্যবধানে এই নিষেধাজ্ঞা অনুমোদিত হয়। নিষেধাজ্ঞার পক্ষে ৫১.২% এবং বিপক্ষে ৪৮.৮% ভোট পড়েছে।

দক্ষিণপন্থী সুইস পিপলস পার্টি এই গণভোটের প্রস্তাব করেছিল এবং তাদের প্রচারাভিযানে নিকাব-পরা মুসলিম নারীর ছবি দিয়ে "উগ্র ইসলাম প্রতিহত করার" শ্লোগান দেয়া হয়েছিল। ইউরোপের অনেক দেশেই মুখ-ঢাকা ইসলামিক পোশাক একটি বিতর্কিত বিষয়ে পরিণত হয়েছে। ফ্রান্সে ২০১১ সালে প্রকাশ্যে পুরো-মুখঢাকা নিকাব নিষিদ্ধ করা হয়।

নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, ডেনমার্ক, অস্ট্রিয়া ও বুলগেরিয়াও প্রকাশ্যস্থানে মুখ-ঢাকা পোশাক পরার ওপর পূর্ণ বা আংশিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। জার্মানির ব্যাভারিয়া রাজ্যেও এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা আছে। সুইত্‍জারল্যান্ডের এই নিষেধাজ্ঞা অবশ্য করোনাভাইরাসের জন্য ফেসমাস্ক পরার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।

দেশটির একটি প্রধান ইসলামিক গোষ্ঠী বলেছে, বোরকা-নিকাব নিষিদ্ধের এ দিনটি "মুসলিমদের জন্য একটি অন্ধকার দিন।" "আজকের এই সিদ্ধান্ত পুরো ক্ষতকে আবার উন্মুক্ত করেছে, আইনী অসাম্যকে আরো সম্প্রসারিত করেছে, এবং মুসলিম সংখ্যালঘুদের একঘরে করে রাখার স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে", একথা বলা হয় সেন্ট্রাল কাউন্সিল অব মুসলিমসের এক বিবৃতিতে। এতে আরো যোগ করা হয় যে তারা এ সিদ্ধান্ত আদালতে চ্যালেঞ্জ করবে।

সুইত্‍জারল্যান্ডের এ নিষেধাজ্ঞার কিছু সমর্থক এব্যাপারে বলেছিলেন, এটা নারীর সমানাধিকারের জন্য উপকারী হবে। কিন্তু সরকার বলেছিল, একজন নারী কি পোশাক পরবে তা ঠিক করা রাষ্ট্রের কাজ নয়। জার্মানির লুসার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় বলা হয়, সুইত্‍জারল্যান্ডে প্রায় কেউই বোরকা পরেন না, এবং দেশটির প্রায় ৪ লক্ষ মুসলিমের মধ্যে মাত্র ৩০ জনের মত নারী নিকাব পরে থাকেন।

সুইত্‍জারল্যান্ডে ৮৬ লাখ মানুষের মধ্যে প্রায় ৫ শতাংশ মুসলিম এবং তাদের বেশিরভাগই তুরস্ক, বসনিয়া ও কসোভো থেকে আসা। সুইস গণভোটে এর আগেও ইসলাম একটি ইস্যু হয়ে উঠেছিল। ২০০৯ সালে এক গণভোটে সেদেশের জনগণ সরকারি পরামর্শের বিরুদ্ধে গিয়ে মসজিদের মিনার নির্মাণ নিষিদ্ধ করার পক্ষে ভোট দেন। এই প্রস্তাবটিও তুলেছিল এসভিপি। তাদের যুক্তি ছিল, মসজিদের মিনার ইসলামিকরণের একটি চিহ্ন।

সুইত্‍জারল্যান্ডের মুসলিম সম্প্রদায়ের একজন সদস্য সানিচা আমেতি বলেন, এই গণভোটের প্রচারে যেভাবে মুসলিম নারীদের তুলে ধরা হয় - তা তাকে বিচলিত করেছে। তিনি বলেন, "সুইত্‍জারল্যান্ডে অনেক মুসলিম এতে অপমানিত বোধ করবে, তারা ভাববে তারা এ সমাজের অংশ নয়। আমরা দেখতে এসব নারীর মতো নই।" তবে মুসলিম সম্প্রদায়ের অন্য অনেকে এ নিষেধাজ্ঞা সমর্থন করেন। সূত্র : বিবিসি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে