প্রিয় সারমের দুঃখে গৃহবন্দি থাইল্যান্ড রাজা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সারমেয়কে নিয়ে ফেসবুকে ‘ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য' করায় গ্রেফতার করা হয় সাতাশ বছর এক যুবককে৷ যাকে নিয়ে এই মন্তব্য, রাজপরিবারের আদরের সেই সারমেয়টি মারা গিয়েছে৷ এখানে রাজদ্রোহিতার পরিণাম ভয়ানক৷ রাজা ভূমিবল আদুল্যাদেজ ও তার প্রিয় সারমেয় টোংডেংকে নিয়ে চলতি মাসের শুরুর দিকে ফেসবুকে ‘অপমানজনক পোস্ট' করার কারণে গ্রেফতার হয় থানাকর্ন শিরিপাইবুন নামে এই যুবক৷ বিতর্কের ঝড় ওঠে সর্বত্র৷ সংবাদ প্রতিদিনের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানা যায়।
রাজার সবথেকে কাছের ছিল এই টোংডেং৷ কাসেটসার্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুচিকিৎসা বিভাগ সূত্রের খবর, ২৬ ডিসেম্বর রাত ১১.১০-এ ক্লাই কাঙোন রাজপ্রাসাদে মারা যায়৷ তার পরই নিজেকে ঘরে বন্দি করে রেখেছেন রাজা৷ টোংডেং বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিল৷ তার বয়স হয়েছিল সতেরো বছর৷ এই নামের মহিমা থাইল্যান্ডে মারাত্মক৷ শুধু তাই নয়৷ টোংডেংকে নিয়ে একটা গোটা বই লিখে ফেলেন রাজামশাই৷ পথেঘাটে ঘুরে বেড়ানো একটি কুকুর কীভাবে রাজপরিবারের অংশ হয়ে উঠল, তার কি কি অবদান সব কথাই লেখা রয়েছে সেই বইয়ে৷ আবেগে মোড়া এই বইটি ২০০২ সালে প্রকাশ হওয়ার পর পাঠকের মধ্যে সাড়া পড়ে যায়৷
টোংডেং-র আনুগত্য, বাধ্য স্বভাব সবকিছুরই উল্লেখ রয়েছে এই বইয়ে৷ হ্যারি পটার সিরিজের সমকক্ষ টোংডেংকে নিয়ে লেখা এই বই বিক্রির পরিমাণ৷ ‘বেস্টসেলারের' তালিকায় রয়েছে বইটি৷ বইটির অজস্র অনুবাদ হয়েছে, যাতে পরোক্ষভাবে বারবার মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, থাইল্যান্ডবাসীদের কেমন আচরণ হওয়া প্রয়োজন৷ রাজপরিবারের প্রতি কতটা আনুগত্য বজায় রাখা উচিত সে কথাও বলা রয়েছে৷ রাজদ্রোহিতা বা রাজপরিবারের সম্পর্কে কোনওরকম বিরূপ মন্তব্যর শাস্তি যে ১৫ বছর পর্যন্ত হাজতবাসের মতো ভয়ানক, থাইল্যান্ডবাসীদের স্থানই বা কোথায় সে কথাও বলা হয়েছে এই বইয়ে৷
টোংডেং এতটাই জনপ্রিয় ছিল যে, প্রায়শই রাজপ্রাসাদে তার নানা ভঙ্গিতে তোলা ছবি ছাপা হত খবরের কাগজে৷ এমনকী তাকে ‘মহাশয়া' বলে উল্লেখ করা হত সর্বত্র৷ কুকুর শব্দটা খুব কমই ব্যবহৃত হত টেংডং-র জন্য৷ তাকে নিয়ে অ্যানিমেশন ছবিও তৈরি হয়েছে সম্প্রতি৷
রাজা আদুল্যাদেজের বয়স বর্তমানে ৮৮৷ সারা বিশ্বের মধ্যে সবথেকে দীর্ঘ সময় ধরে রাজতন্ত্র পরিচালনা করছেন তিনি৷ তার সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষণকে বেশ বড়সড় করে প্রচার করা হয় তাইল্যান্ডে৷ সামরিক বাহিনী ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসে৷ আর তারপর থেকেই শুরু হয় ক্ষমতা ও আইনের অপব্যবহার৷
৬ জানুয়ারি, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই
�