আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুরের সভায় আজ বিজেপিতে যোগ দিলেন শিশির অধিকারী। এতদিন যা ছিল সময়েই অপেক্ষা। আর ঠিক সেই সময়েই অধিকারী-দুর্গ বলে পরিচিত দক্ষিণ এবং উত্তর কাঁথিতে দাপিয়ে সভা করলেন মমতা ব্যানার্জী। স্বাভাবিকভাবেই তার নিশানা যে অধিকারী পরিবার, তা আর বলে দিতে হয় না।
নাম না করেই বললেন, একটা পরিবারের 'জমিদারি' ছিল এখানে। তুলে ধরলেন সেই পরিবারের সম্পত্তির খতিয়ান। এর আগে এগরার সভায় নাম না করে সরাসরি শুভেন্দুকে 'গদ্দার, মীরজাফর' বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন দক্ষিণ কাঁথিতে মঞ্চ থেকে তিনি আবারও তোপ দাগলেন অধিকারী পরিবারকে। বললেন, 'এখানে একটা পরিবারের জমিদারি ছিল। সব জায়গায় নিজেদের নাম লিখেছে। কিন্তু কাজটা আমি করিয়ে দিয়েছি।'
তিনি আবারও অভিযোগ করলেন, আগে এই এলাকায় তাঁকে আসতে দেওয়া হত না। সমাবেশ করতে দেওয়া হত না। নিশানায় যে শুভেন্দু, তা আর বলতে হয় না। মমতার খোঁচা, 'আমাকে আগে কাঁথিতে মিটিং করতে দেওয়া হত না। এগরায় মিটিং করতে দেওয়া হত না। আগে ওগুলো একজনের জমিদারি ছিল। যাঁরা ওদের কথা শুনবে তাঁরাই থাকবে, যাঁরা শুনবে না, থাকবে না, এটাই ছিল নিয়ম। কিন্তু সেই নিয়ম এখন আর নেই।'
তিনি ফের তুলে ধরলেন পুরনো দিনের কথা। বলতে দ্বিধা করলেন না, 'একসময় খুব ভালোবাসতাম। কী না করিনি?' তার পরেই ক্ষোভ মুখ্যমন্ত্রীর, '২০১৪ সাল থেকে নাকি বিজেপির সঙ্গে যোগ ছিল। মানে নিজের ঘরেই সিঁধ কেটেছে। এর থেকে বড় গদ্দার আর কেউ হয় না। এদের মেদিনীপুর থেকে তাড়াতে হবে। উচ্ছেদ করতে হবে।'
শুভেন্দু বারবার দাবি করেছেন, তিনি মানুষের জন্যই রাজনীতিতে। 'টাকা-পয়সার আমার কী দরকার?' সেই নিয়েও এদিন কটাক্ষ করলেন মমতা। অধিকারী পরিবারের সম্পত্তির খতিয়ান সকলের সামনে তুলে ধরলেন। বললেন, 'আমি তো গাধা ছিলাম। বিশ্বাস করে গিয়েছি। ভালোবেসেছি নিঃস্বার্থভাবে। আর এখন তো শুনছি সম্পত্তি নাকি ৫০০০ কোটি টাকার। এত টাকা কোথা থেকে এল?'
তার পরেই ডাক দিলেন, 'এবারের ভোট গদ্দারদের বিরুদ্ধে ভোট। মীরজাফরদের ছেড়ে কথা বলবেন না। মনে রাখবেন, বিজেপি একটা ডাকাত পার্টি। সিপিএমের হার্মাদ আর আমাদের কিছু গদ্দাররা জুটেছে সেখানে।' এর পরেই সতর্ক করে দিয়েছেন কাঁথির মানুষদের। বলেছেন, 'বহিরাগত গুণ্ডাদের কিন্তু এলাকায় ঢুকতে দেবেন না। ভোটের মেশিন খারাপ হলে ধৈর্য্য ধরে বসে থাকবেন। কিন্তু ছেড়ে চলে যাবেন না। ভোট হয়ে যাওয়ার পরও পাহারা দিতে হবে সহকর্মীদের। ২০-৩০ জন করে ছেলে-মেয়ে নিয়মিত এলাকা পাহারা দেবে। যাতে কোনওভাবে ভোট মেশিন দখল করতে না পারে।'