বদলে যাবে কি জার্মানির চেহারা?
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইউরোপের শরণার্থী সংকট মোকাবেলায় অগ্রনী ভূমিকা রাখেছে জার্মানি। গত একবছরেই দেশটিতে প্রায় দশ লাখেরও বেশি শরণার্থীদের আবেদন জমা পড়েছে। শরণার্থীদের এই অব্যাহত স্রোতের প্রভাব পড়ছে জার্মানির সর্বত্র। ১৫ হাজার বাসিন্দা নিয়ে জার্মানির একটি ছোট শহর অ্যাবেন্সবার্গে আশ্রয় পেয়েছেন এরকম দুইশ শরণার্থী। প্রতিদিনই এই সংখ্যা বাড়ছে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ খবর জানা যায়। লাল রঙের ছাদের ঘরবাড়ি আর চার্চের টাওয়ার, সাজানো রাস্তা আর দোকানপাটে আবেন্সবার্গ শহরটিকে সহজেই আলাদা করা যায়। কিন্তু শরণার্থীদের এই স্রোতে শহরটিও বদলাতে শুরু করেছে।
শরণার্থীদের জন্য আশ্রয় তৈরি করতে শহরের বিভিন্ন এলাকায় বাড়িঘর তৈরিও শুরু হয়েছে। শরণার্থী তত্ত্বাবধায়ক ইনোজ বলছিলেন, এখানে অনেক মানুষ আসছে, ঠিক আছে। কিন্তু এ বছরই হয়তো আরো বেশি মানুষ আসবে। সেটা হয়তো আমাদের জন্য সহজ হবে না। কারণ এখন যারা এসেছে, তাদের জন্য সবকিছু গোছাতেই আমাদের কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। শরণার্থীদের আসা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যেও রয়েছে নানা মত।
আবেন্সবার্গের তিনশ বছরের পুরনো একটি কারখানার মালিক, লেনোর্দ সালেক্স বলছিলেন, অবশ্যই আমাদের শরণার্থীদের সাহায্য করতে হবে। এজন্য আমরা কিছু অর্থনৈতিক অভিবাসী নিতে পারি। কিন্তু বাস্তবতা হলো, লাখ লাখ মানুষ আসছে। তাদের কেউ কেউ চাকরি পাবে, অন্যরা কল্যাণ ভাতার উপর বোঝা হয়ে উঠবে।
আবেন্সবার্গের মানুষ অনেকটা রক্ষণশীল। ফলে শরণার্থীদের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে অভিবাসন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি স্থানীয় বাসিন্দাদের সমর্থন বাড়ছে।
তবে এর মধ্যেই আবেন্সবার্গের নতুন বাসিন্দারা তাদের গুছিয়ে নিতে শুরু করেছে। এদেরই একজন রোলাফ, যিনি অন্য আরো দুইটি পরিবারের সঙ্গে একটি বাসা শেয়ার করে বসবাস করছেন।
সিরিয়া থেকে আসা জীববিজ্ঞানের সাবেক এই শিক্ষক বলছিলেন, তার এখানে এসে ভালোই লাগছে। তিনি এখানকার ধর্ম, রীতিনীতি মেনে চলবেন। কিন্তু নিজের ধর্ম এবং সংস্কৃতিও রক্ষা করবেন।
২০১৫ সালে জার্মানিতে রেকর্ড শরণার্থী আবেদন পড়েছে। এই ঢল যদি এ বছরেও অব্যাহত থাকে, তাহলেও হয়তো শুধু আবেন্সবার্গ কেন, হয়তো পুরো জার্মানির চেহারাই বদলে যাবে।
৭ জানুয়ারি, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই
�