মঙ্গলবার, ২০ এপ্রিল, ২০২১, ০১:০৩:৫৭

রিপোর্ট ছাড়া চিকিৎসা নয় জানালো হাসপাতাল, মারাই গেলো করোনা রোগী

রিপোর্ট ছাড়া চিকিৎসা নয় জানালো হাসপাতাল, মারাই গেলো করোনা রোগী

সামান্য জ্বর আর শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এক ব্যক্তি। তার পরিবারের দাবি, আগে করোনা পরীক্ষা হবে, তারপরই চিকিৎসা শুরু হবে বলে জানিয়েছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সেই রিপোর্ট আসে ৩০ ঘণ্টা পর। আর ততক্ষণ বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয় ওই রোগীর। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মধ্য হাওড়ার ডুমুরজলা স্টেডিয়াম সংলগ্ন এক বেসরকারি হাসপাতালে রোববার ওই রোগীর মৃত্যু হয়। শনিবার চিকিৎসার দাবিতে প্রথমে বিক্ষোভ করে রোগীর পরিবারের লোকজন। রেবার রোগীর মৃত্যুর পর ফের বিক্ষোভ করে তারা। দুইবারই পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশকে ডাকতে হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার সকালে জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে দেবাশিস পাল নামের এক ব্যক্তিকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দেবাশিসের পরিবারের অভিযোগ, করোনা পরীক্ষার রিপোর্টের অপেক্ষায় থেকে চিকিৎসাই শুরু করেনি হাসপাতাল! ভর্তির পর শুধু অক্সিজেন দেয়া ছাড়া কার্যত কোনও চিকিৎসা করা হয়নি। এমনকি তাকে কোনও ডাক্তারও দেখেননি বলে অভিযোগ করে দেবাশিসের পরিবার।

রোববার দুপুরের দিকে দেবাশিসের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে। কিন্তু তার আগেই সকাল ১১টার দিকে দেবাশিসের মৃত্যুর খবর ঘোষণা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। চিকিৎসা কেন শুরু হচ্ছে না, এ নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে দেবাশিসের পরিবারকে জানানো হয়, করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট এলে তবেই চিকিৎসা শুরু হবে।

দেবাশিসের পরিবারের দাবি, তারা তাকে জেলার সরকারি কোভিড হাসপাতালে স্থানান্তরিত করতে চান। কিন্তু করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট না থাকায় কেউই ভর্তি নিতে চায়নি। এমনকি জেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদেরও বিষয়টি জানিয়ে কোনও লাভ হয়নি। শেষ পর্যন্ত বিনা চিকিৎসা ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যু হয় দেবাশিসের।

এরপরই দেবাশিসের পরিবার চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ করে। পরে পুলিশ ডাকতে হয়। দেবাশিসের স্ত্রী কাকলি পাল বলেন, করোনা রিপোর্ট না আসায় শনিবার সকাল থেকে কোনও চিকিৎসা করেনি হাসপাতাল। তাদের দোষেই আমার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালকে ছাড়বো না।

ইতোমধ্যে ওই পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ জানানো হয়েছে জেলার প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং জেলা প্রশাসকের কাছেও। জেলার প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ভবানী দাস বলেন, বিষয়টি তদন্ত করা হবে। রিপোর্ট হাতে এলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে হাসপাতালের মালিক চিকিৎসায় গাফিলতির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে