রবিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২১, ১১:৩৮:২২

মানুষের মৃত্যু দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতে হচ্ছে!

মানুষের মৃত্যু দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতে হচ্ছে!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিশ্বজুড়ে তাণ্ডব চালাচ্ছে করোনাভাইরাস। মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তেই ভয়াবহ পরিস্থতি ভারতে। হু হু করে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। হাসপাতালে বেড নেই। অক্সিজেন নেই। ডাক্তাররা অসহায় বোধ করছেন। মানুষের মৃত্যু দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতে হচ্ছে। কিছু করার থাকছে না। করোনায় মৃতদের দেহ নিয়েও লম্বা লাইন। পরিবার-পরিজনরা শেষ যাত্রাতেও সঙ্গে থাকছে না। এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে মানুষ যেন সব থেকে অসহায়।

অথচ গত নভেম্বরেই বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে বলেছিলেন, ভারতে করোনা সংক্রমণের আরও মারাত্মক দ্বিতীয় ধাক্কা আসতে চলেছে। ওই সতর্কবার্তা সত্ত্বেও পরিকাঠামোগত উন্নতির দিকে কেন্দ্রের মনোযোগ না দেওয়ায় এখন দেশবাসীকে খেসারত দিতে হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশিষ্টজনরা। এমন পরিস্থিতিতে দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন ও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণের পদত্যাগ দাবি করেছেন কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম। খবর আনন্দবাজারের।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কোভিডের বিরুদ্ধে কার্যত শূন্য থেকে লড়াই শুরু করলেও নরেন্দ্র মোদি সরকারের হাতে এক বছরের বেশি সময় ছিল। কিন্তু ‘হার্ড ইমিউনিটি’ বা গোষ্ঠী সংক্রমণের ওপরে সরকারের ভরসা এবং অতিরিক্ত প্রতিষেধক নির্ভরতার কারণে পরিস্থিতি ক্রমশ হাতের বাইরে চলে গেছে।

তারা বলছেন, গত নভেম্বর থেকে যখন সংক্রমণের হার কমতে শুরু করেছিল, তখন জনতা যেমন কোভিড সতর্কবিধি মেনে চলা ছেড়ে দেয়, তেমনই গা-ছাড়া মনোভাব দেখা যায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কেও।

অথচ গত বছর ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চের (আইসিএমআর) সেরো সমীক্ষায় দেখা গিয়েছিল, দেশটির জনসংখ্যার প্রতি পাঁচজনে একজন কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। অর্থাৎ বাকি চারজনের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা তখনই ছিল। আইসিএমআরের এক বিজ্ঞানীর মতে, ওই গবেষণা থেকেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল, দেশটির ১৩৪ কোটি মানুষের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটির দ্বিতীয় ধাক্কায় করোনা সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা আছে। সরকারের উচিত ছিল, সেই কথা ভেবে চিকিৎসা পরিকাঠামোকে প্রস্তুত করে তোলা।

আনন্দবাজার জানিয়েছে, ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটিও গত নভেম্বরে নিজেদের রিপোর্টে কেন্দ্রকে একাধিক সুপারিশ করেছিল। হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেনযুক্ত শয্যা, আইসিইউ শয্যা, ভেন্টিলেটরের সংখ্যা বাড়ানোর ওপরে জোর দেওয়া হয়েছিল। সে জন্য স্বাস্থ্য খাতে জিডিপির প্রায় ২ দশমিক ৫ শতাংশ অর্থ বরাদ্দের সুপারিশ করা হয়েছিল। বড় হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলোতে নিজস্ব অক্সিজেন প্লান্ট গড়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।

কংগ্রেস নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালার অভিযোগ, এসব কিছুই মানেনি কেন্দ্র। ফলে অক্সিজেনের অভাবে মানুষকে মরতে হচ্ছে। কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম বলেন, ‘সরকার কি এত দিন পরে জেগে উঠল? মানুষ আত্মীয়দের হাসপাতালে ভর্তি করাতে হাতে-পায়ে ধরছেন, অনেকে পিঠে করে অক্সিজেনের সিলিন্ডার বয়ে আনছেন। এই অপদার্থতার জন্য কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিবের কি পদত্যাগ করা উচিত নয়?’

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে