ইসলামবিদ্বেষীদের বিষাক্ত আক্রমণের শিকার বাংলাদেশি ব্রিটিশ সেলিব্রেটি নাদিয়া
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ব্রিটেনে মুসলিমদের ওপর হামলা আগের চেয়ে বেড়েছে অনেকগুণ। আর এই বর্ণবাদী হামলার জন্য সরাসরি দায়ী হচ্ছে সেখানকার ইসলামবিদ্বেষী গ্রুপগুলো। দুই ধরণের হামলা হচ্ছে সেখানে। একটি শারীরিকভাবে আর অন্যটি সামাজিকভাবে। এই কুচক্রীদের হাত থেকে রক্ষা পেলেন না বিখ্যাত রান্না বিষয়ক প্রতিযোগিতা গ্রেট বৃটিশ বেইক অফ জয়ী নাদিয়া হোসেন। বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত এই ব্রিটিশকে টুইটারে ইসলামবিদ্বেষীরা কুৎসিত বর্ণবাদী হুমকি দিয়েছে। ইসলামবিদ্বেষীরা তাকে কটূক্তি বিষাক্ত দিয়ে ক্রমাগত আক্রমণ করে আসছে। এতে তার বাড়িতে পুলিশ পাহারা বসাতে হয়েছিল। এক পর্যায়ে তিনি বাসা পরিবর্তন করেন।
দেশটির প্রভাবশালী পত্রিকা ডেইলি মেইল জানিয়েছে, নিজের স্বামী ও তিন সন্তানকে নিয়ে লিডসের বাড়িতে বসবাস করতেন নািদয়া। ২০১৫ সালে বৃটেনের সবচেয়ে জনপ্রিয় রান্না বিষয়ক অনুষ্ঠানে প্রথম হন তিনি। লুজ উইমেন নামে একটি অনুষ্ঠানে নাদিয়া জানান, বেইক অফ প্রতিযোগিতায় জয়ের পর টুইটারে ইসলাম-বিদ্বেষীদের কটূক্তির শিকার হয়েছিলেন তিনি। দুর্বৃত্তরা তাকে হুমকি দেয় ও তার ধর্মবিশ্বাসকে আঘাত করে। তিনি জানান, টুইটারে মাত্রাতিরিক্ত নেতিবাচকতা ছিল। আমি অনেক চেষ্টা করেছি, এসব এড়িয়ে যেতে। তবে আমার স্বামী বসে বসে সব পড়েছে।
নাদিয়া আরও বলেন, আমি সব কিছু নিয়ে আফসোস করতে থাকি। আমি এমনও ভেবেছি, (প্রতিযোগিতা জিতে) আমি কী করলাম! আমি কি আমার সন্তানদের জীবন বিপদের মুখে ঠেলছি? তবে আমার স্বামী সবসময় বলেছে, এটা তেমন কিছু নয়। এমন অল্পসংখ্যক লোক সবসময় থাকে। এটা কোন বিষয় নয়। নাদিয়া যখন বেইক অফে’র মুকুট জিতেছিলেন, ওই অনুষ্ঠান রেকর্ড ১ কোটি ৪৫ লাখ মানুষ টিভিতে দেখেছে। ২০১৫ সালে এটিই ছিল সবচেয়ে বেশি মানুষের দেখা অনুষ্ঠান।
নাদিয়া জানান, তাকে নিয়ে ইসলামবিদ্বেষীদের কটূক্তি এত বিষাক্ত ছিল যে, তাকে পুলিশ ডেকে পাহারা বসাতে হয়েছে।
পশ্চিম ইয়র্কশায়ারের পুলিশ বিভাগের এক মুখপাত্র জানান, লিডসের বাসিন্দা নাদিয়া হোসেনের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কথিত অবমাননাকর মন্তব্য পুলিশ তদন্ত করছে। কর্মকর্তারা তার বাড়িতে গিয়েছিলেন। তাকে তদন্তের হালনাগাদকৃত অবস্থা স¤পর্কে জানানো হয়েছে। বিশেষ পুলিশ সুরক্ষার প্রয়োজন মনে হয়নি। চাওয়াও হয়নি। দেওয়াও হয়নি।
লুজ উইমেন অনুষ্ঠানের উপস্থাপিকা রুথ ল্যাংসফোর্ড বলেন, নাদিয়া ‘বৃটিশ ও মুসলিম’ মানুষদের ‘পোস্টার গার্লে’ পরিণত হয়েছেন। অথচ, তাকে নগ্ন আক্রমণ করা হচ্ছে। অব্যাহত কুৎসিত আক্রমণের দরুণ নাদিয়া নিজের স্বামী আবদাল (৩৪) ও তিন সন্তানকে নিয়ে নতুন বাড়িতে উঠেছেন।
০৮ জানুয়ারি ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএস
�