বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নারীর একেমন জীবন যাপন!
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তিনি সুপার মার্কেটে গিয়ে সাধারণের সাথে বাজার করেন৷ নাপিতের দোকানে অন্যদের পাশে বসে অপেক্ষা করেন চুল কাটার জন্য৷ এমনকি সরকারি ভবন নয়, নিজের বাড়িতে থাকাই তার পছন্দ৷ তিনি আর কেউ নন, বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নারী জার্মান চ্যান্সেলার আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ অবাক হলেও সত্য আসলে তিনি এমন একজন মানুষ যার মাঝে কোন প্রকার অহংকার নেই। তিনি সব সময় সাধারণের সাথে সব কিছু ভাগাভাগি করে নিতে ভালোবাসেন। কলকাতা ২৪-এর এক প্রতিবেদনে এ খবর জানা যায়।
২০১৫ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিনের বিবেচনায় বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নারী হিসেবে স্থান পেয়েছেন আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ উডো ভালৎস গত দশ বছর ধরে ম্যার্কেলের চুল কাটেন৷ তার কথায়, ‘চ্যান্সেলার হওয়ার আগেও তিনি যেমন সেলুনে অন্যদের সঙ্গে বসতেন, এখনও তাই করেন৷ তাকে কোনও বিশেষ ছাড় দেওয়া হয় না৷ অর্থাৎ তিনিও অন্যদের মতো ৬৫ ইউরো দেন৷ একদম আগের মতোই এখনো আছেন তিনি৷’
বার্লিনের ‘মিউজিয়াম আইল্যান্ড’-এর একটি জাদুঘরের কাছে নিজস্ব, কিন্তু পুরানো একটা ফ্ল্যাটে থাকেন আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও তার স্বামী ইওয়াখিম সাউয়ার৷ শুধু নিরাপত্তার জন্য দু’জন পুলিশ বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকে৷ এছাড়া কিন্তু সব কিছু আগের মতো আছে৷ এই যেমন, ছুটি পেলে আজও কাছের উকারমার্ক নামের ছোট্ট শহরে চলে যান দু’জনে৷ সেখানেই তিনি বড় হয়েছেন!
চ্যান্সেলার ম্যার্কেল সাধারণ সুপার মার্কেটেই বাজার করতে যান৷ বিশেষ করে যেগুলো একটু বেশি সময় খোলা থাকে৷ বাজার করা সম্পর্কে আঙ্গেলা ম্যার্কেল একবার এক দোকানিকে বলেছিলেন, ‘আমার এই অল্প অবসর সময়ে বাজার করার মতো সব কাজই করার চেষ্টা করি, যেমনটা আগে করতাম৷ অবশ্য যখন নিজে পারি না, তখন বাজারের লিস্ট তৈরি করে স্বামীর হাতে তুলে দিই৷’
দোকানের একজন নারী কর্মী জানান, ‘চ্যান্সেলার ম্যার্কেল অন্যান্য ক্রেতার মতোই কিছু খুঁজে না পেলে কোথায় কি রাখা আছে, তা সাধারণ গৃহিনীদের মতোই জানতে চান৷ তার নিরাপত্তার জন্য দেহরক্ষী সঙ্গে না থাকলে কেউ হয়ত বুঝবেই না যে তিনিই আমাদের ‘অ্যাঞ্জি’৷’ কর্মীটি আরও জানান, ‘শত ব্যস্ততার মধ্যেও কিন্তু চ্যান্সেলারের মুখে হাসিটুকু লেগে থাকে, যা ভীষণ ভালো লাগে৷’
জার্মান চ্যান্সেলার আঙ্গেলা ম্যার্কেলের ভীষণ পছন্দ ফ্রেঞ্চ চিজ বা পনির, যা তিনি নিজেই কিনতে ভালোবাসেন৷ আর সেই কথাই গর্ব করে জানান ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের একজন কর্মী৷ হাতে দামি ব্যাগ নেওয়ার চেয়ে ভালো খাওয়া-দাওয়া ম্যার্কেলের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ৷ যখন তিনি রান্না করার সময় পান না, তখন স্বামী ইওয়াখিম সাউয়ারকে নিয়ে বার্লিনের ‘কাসামবালিস’ নামের একটি রেস্তোরাঁয় খেতে যান৷ দামি খাবারের চেয়ে অবশ্য ‘গ্রিক মিটবল’-এর মতো সাধারণ খাবারই বেশি পছন্দ বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর এই নারীর৷
অন্যান্য রাজনীতিকদের মতো বিলাসিতা আঙ্গেলা ম্যার্কেলের তেমন পছন্দ নয়৷ বরং সাধারণ জীবনযাপনই তার বেশি ভালো লাগে৷ তাই তিনি যতটা সম্ভব সেভাবেই চলার চেষ্টা করেন স্বামীকে নিয়ে৷ আঙ্গেলা ম্যার্কেল সময় সুযোগ পেলে স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে হাঁটতে বের হন৷ শারীরিক এবং মানসিকভাবে ‘ফিট’ থাকতে মুক্ত বাতাসে হাঁটা-চলা যে ভীষণ জরুরি, সেটা তিনি যেন সকলকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন৷ এই না হলে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নারী!
৮ জানুয়ারি, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই
�