শনিবার, ০৫ জুন, ২০২১, ০১:৪০:০৩

ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের হাতে নিজেদের স্বদেশ চুরি হতে দেখে চুপ থাকবে না ফিলিস্তিনিরা

ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের হাতে নিজেদের স্বদেশ চুরি হতে দেখে চুপ থাকবে না ফিলিস্তিনিরা

ফিলিস্তিনি জনগণ বিরক্ত। এক বয়োবৃদ্ধ প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তের কাছে তাদের সক্ষমতাকে আবদ্ধ রাখতে প্রত্যাখ্যান করেছেন তারা।  যেই প্রেসিডেন্ট ফিলিস্তিনিদের ভূমি একের পর এক দখলের মুখে ধারাবাহিকভাবে ইসরাইলি দখলদার কর্তৃপক্ষের সাথে সহযোগিতার করে যাচ্ছেন। সাফল্যের মিথ্যা দাবির মুখে চুপ থাকতে অস্বীকার করছে জনগণ। ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের হাতে নিজেদের স্বদেশ চুরি হতে দেখে তারা চুপ থাকবে না।

পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষায় জনগণ ধৈর্য ধারণ করে এসেছে। এখন সময় হয়েছে তাদের হাতে থাকা সাংস্কৃতিক, শিক্ষাগত, রাজনৈতিক, সাংগঠনিক, জনপ্রিয়গত, প্রতিষ্ঠানগত ও পরিবারিক উপকরণের মাধ্যমে পরিবর্তনের জন্য পদক্ষেপ নেয়ার। 

প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও), ফাতাহ এবং বিশেষভাবে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষসহ (পিএ) সবধরনের নেতৃত্বের আসন থেকে মাহমুদ আব্বাসের অপসারণের ডাক দেয়া হচ্ছে। স্বাধীনতার পথে নেতৃত্বের বাছাই করে নিতে, দখলদারিত্বের অবসানে এবং ফিলিস্তিনের ইতিহাস, প্রতিরোধ সংগ্রাম, জনগণ, ভবিষ্যৎ ও নিয়তির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা দালালদের অপসারনে জনগণের সিদ্ধান্তের সুযোগ দেয়া আবশ্যিক।

হাজার হাজার ফিলিস্তিনি এই লক্ষ্যে এক পিটিশন স্বাক্ষর করেছেন, যাতে স্পষ্ট হয়েছে জনগণের মতামত। পিটিশনের বক্তব্যে বলা হয়: 'আমরা, নিম্নস্বাক্ষরকারী ফিলিস্তিনি বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ ও জন পরিচিত ব্যক্তিরা, সক্রিয় লড়াইরত বাহিনীসমূহসহ ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি এই পিটিশনের মাধ্যমে আমরা প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের বৈধতা কেড়ে নেয়ার এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ, প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন ও ফাতাহ আন্দোলনের প্রেসিডেন্টের পদ থেকে তার পদত্যাগ বা শিগগির পদচ্যুতির দাবি জানানোর আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা তাদের আহ্বান জানাচ্ছি প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনকে পুনর্নির্মাণ এবং ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য বিকল্প নেতৃত্ব বাছাই করে নিতে নির্বাচনে জাতীয় প্রচারণায় সমর্থন দেয়ার জন্য।

সাম্প্রতিক গৌরবময় জেরুসালেম ইন্তেফাদায় প্রেসিডেন্ট ও তার নীতি নির্ধারণ, কর্তৃত্বের সুস্পষ্ট দুর্বলতা প্রকাশ করে হয়ে পড়েছে। ফিলিস্তিনি জনগণ এতে যথেষ্ট ভুগেছে। শেখ জাররাহ মহল্লায় সূচনা থেকে এবং মসজিদুল আকসাসহ জেরুসালেমের পরে গাজা, পশ্চিম তীর, অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড ও অভিবাসীদের মধ্যে ইন্তেফাদা ছড়িয়ে পড়ার পর তাতে প্রধানতম অনুপস্থিত ব্যক্তি ছিলেন প্রেসিডেন্ট। 

আব্বাস তার রাজনৈতিক রেকর্ডে অপর একটি ব্যর্থতা যোগ করেছেন, যা প্রমাণ করছে ফিলিস্তিনি জনগণের সামগ্রিক দুর্ভোগে নূন্যতম পর্যায়েও তার নৈতিক সমর্থনের অনুপস্থিতি। গাজা ও পশ্চিম তীরের শহীদদের পরিবারের সাথে সাক্ষাত করতে যাওয়ার কষ্ট স্বীকার করেননি বা মতপার্থক্যের সমাপ্তির সূচনায় সুযোগ নেননি। 

এর বদলে জেরুসালেম ইন্তেফাদা প্রেসিডেন্ট নিজেকে যে অসাড় অবস্থায় রেখেছেন, তা প্রকাশ করে দিয়েছে। এমনকি পিএলও, এর নেতৃত্ব এব ফিলিস্তিনি জনগণের মাঝে এর প্রতিনিধিত্বসহ ফাতাহর মতো গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের অধিকারী দীর্ঘদিনের জাতীয় আন্দোলন যদি ধ্বংস না হয়, তাকে অচল করে রেখেছেন। যা দুর্ভাগ্যজনকভাবে জেরুসালেম ইন্তেফাদায় দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ অনুপস্থিতি।

আব্বাসকে পদচ্যুত করার আহ্বান গত তিন দশকে তার কর্মকাণ্ডের ভিত্তিতে করা হয়েছে, যাতে 'শান্তি প্রক্রিয়ার' পথে মরীচিকা ছাড়া আর কিছুই অর্জিত হয়নি। 

প্যালেস্টেনিয়ান ন্যাশনাল কাউন্সিল, প্যালেস্টেনিয়ান লিবারেশন অর্গানাইজেশন বা প্যালেস্টেনিয়ান সেন্ট্রাল কাউন্সিলের মতো বাস্তব কার্যকর জাতীয় প্রতিষ্ঠানের অভাবে রাজনৈতিক ব্যর্থতায় দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহিতার আওতায়
আনা যাচ্ছে না। জাতির সকলের জন্য অপরিহার্য দায়িত্ব হয়ে পড়েছে মাহমুদ আব্বাসের নেতৃত্বে ব্যর্থতার প্রতিকারে তাদের আওয়াজ তোলার।'

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে