আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চীনের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর প্রথম বার তিব্বত সফরে শি জিনপিং। গত বুধবার তিনি তিব্বতে এলেও শুক্রবারই বেজিংয়ের সংবাদমাধ্যমের তরফে সেই খবর প্রকাশ করা হয়েছে। জিনপিংয়ের এই সফর অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। শেষবার এখানে চীনের কোনও প্রেসিডেন্টের আসার ঘটনা ঘটেছিল ১৯৯০ সালে। তবে জিনপিং আগেও এসেছেন তিব্বতে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট হিসেবে এই প্রথম। যা ঘিরে নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
গত বুধবার জিনপিং এখানকার নিংচি মেনলিং বিমানবন্দরে নামেন। কিন্তু তখনই চিনের সংবাদমাধ্যমের তরফে এই খবর জানানো হয়নি। অবশেষে দু'দিন পরে শুক্রবার একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয় বেজিংয়ের তরফে। তাতে দেখা যায়, জিনপিং বিমান থেকে নামছেন। তাকে অভ্যর্থনা জানাতে ভিড় করে দাঁড়িয়েছিল জমতা। সেই ভিড়ের উদ্দেশে হাত নাড়তে দেখা যায় জিনপিংকে। তারে লাল কার্পেটে স্বাগত জানানো হয়।
তার উদ্দেশে নৃত্য পরিবেশন করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে তিনি তিব্বতের ন্যাং নদীর সেতু ও বিভিন্ন স্থানে পরিদর্শন করেন। খুঁটিয়ে দেখেন নদীতীর সংলগ্ন এলাকার পরিবেশ পরিস্থিতি। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার তিব্বতের রাজধানী লাসায় গিয়েছিলেন জিনপিং। পরে সিচুয়ান-তিব্বত রেল প্রকল্পের কাজও খতিয়ে দেখেন তিনি। কিন্তু কেন আচমকাই তিব্বত সফরে এলেন জিনপিং? এই সফর কি কেবলই সাধারণ সফর? নাকি অন্য কোনও বার্তা দেওয়াই আসল উদ্দেশ্য। এমন নানা গুঞ্জন শুরু হয়ে গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, এর আগে দু'বার তিব্বতে এসেছেন জিনপিং। প্রথম বার ১৯৯৮ সালে ফুজিয়ান প্রদেশের দলের প্রধান হিসেবে। দ্বিতীয় বার ২০১১ সালে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে শেষবার তিব্বতে চীনের যে রাষ্ট্রপ্রধান এসেছিলেন তিনি জিয়াং জেমিন। ১৯৯০ সালে তিনি তিব্বতে এসেছিলেন। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, তিব্বতকে চীনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে তুলে ধরতেই এই আচমকা সফর। এখনও তিব্বতে দলাই লামার অনুরাগীদের সংখ্যা কম নয়। তাদের সকলকে বার্তা দিতে ও তিব্বত যে চীনেরই অংশ তা তুলে ধরাই জিনপিং-এর এই সফরের মূল উদ্দেশ্য বলে মনে করা হচ্ছে।
সংবাদপত্র শিনহুয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী, লাসায় শি একটি মঠ এবং পোটালা প্রাসাদ পরিদর্শন করবেন। এই দুই এলাকায় ধর্মীয় এবং তিব্বতি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যর ধারক ও বাহক। প্রাসাদটি তিব্বতীয় বৌদ্ধধর্মের আধ্যাত্মিক নেতা দালাই লামার ঐতিহ্যবাহী বাড়ি। যিনি সে দেশে নির্বাসনে রয়েছেন। শুধু তাই নয়, বেজিংয়ের চোখে দলাই লামা একজন বিছিন্নতাবাদী। এমনটাই উল্লেখ করা হয়েছিল একাধিক প্রতিবেদনে। শি জিনপিংয়ের এই সফরকে কূটনৈতিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ দেখছে ভারত।