আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সেলফির নেশা যে বড়ই সর্বনাশা! তা আবারো প্রমাণিত হলো। আবারও মর্মান্তিক দুর্ঘটনার কারণ হল মোবাইল ফোনে বেখেয়াল হয়ে যাওয়ার নেশা। দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে সেলফি তোলার মোহ।
সমুদ্রে বন্ধুদের নিয়ে সেলফি তুলতে গিয়ে নিজেই চীরদিনের জন্য ছবি হয়ে গেল এক কলেজ-শিক্ষার্থী তরুণী। আর সেই তরুণীর দুই বন্ধুকে যিনি সমুদ্রে তলিয়ে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচালেন, তাকেও তলিয়ে যেতে হল সমুদ্রের অতলান্ত জলে।
শনিবার এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে আরব সাগরের মুম্বাই উপকূলে বান্দ্রার সমুদ্র সৈকতে। পুলিশের নৌকা ও উপকূলরক্ষী বাহিনীর হেলিকপ্টার ‘তাতরক্ষক’ এখনও পর্যন্ত তলিয়ে যাওয়া দেহ দু’টির হদিশ পায়নি।
মহারাষ্ট্র পুলিশ জানাচ্ছে, কলেজ ছুটি থাকায় গোবান্দির বাইগাঁওয়াড়ির তিন কিশোর-কিশোরী শনিবার বান্দ্রায় ঘুরতে এসেছিল। ভোর ভোর তারা চলে যায় সমুদ্র সৈকতে। সেখানে গিয়ে তারা পটাপট সেলফি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। কাছাকাছি জল কম বলে তারা সমুদ্র সৈকত থেকে বেশ খানিকটা দূরে চলে যায় বেশ বড় একটা পাথরের চাঁইয়ের কাছে। তার ওপরে উঠে পড়ে ওই কিশোরী আর তার দুই বন্ধু পটাপট নিজেদের সেলফি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। তাদের খেয়ালই ছিল না, বিশাল একটা ঢেউ পিছন থেকে ধেয়ে আসছে।
এক লহমার মধ্যেই সমুদ্রের বেশ উঁচু একটা ঢেউ এসে আছড়ে পড়ে ওই পাথরের চাঁইয়ের ওপর। জল টেনে নিয়ে যায় ওই কিশোরী আর তার দুই বন্ধুকে। তাদের আর্ত চিৎকার শুনে সমুদ্রে ঝঁপিয়ে পড়েন রমেশ ভালুঞ্জে নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা।
তিনি স্নান করতে এসেছিলেন সমুদ্রে। বেশ কিছুটা সাঁতরে, ডুবে যাওয়া ওই পাথরের চাঁইয়ের কাছে পৌঁছে তিনি জলে হাবুডুবু খাওয়া দুই কিশোর-কিশোরী আঞ্জুম খান ও মুশতারিন খানকে উদ্ধার করেন। তাদের তিনি সৈকতে পৌঁছে দিয়ে ফের সাঁতরে ওই পাথরের চাঁইটির কাছে যাওয়ার চেষ্টা করেন তলিয়ে যাওয়া আরেক কিশোরীর হদিশ পাওয়ার জন্য। সেই সময় আরও বড় একটা ঢেউ এসে ভালুঞ্জেকেও টেনে নিয়ে যায়। তারও আর হদিশ মেলেনি। তলিয়ে যাওয়া কিশোরীর নাম- তারানাম আনসারি। তার বয়স ১৮ বছর।
১২ জানুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ/এসএস/এসবি