আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মাত্র সপ্তাখানেক হল হাইড্রোজেন বোমার সফল পরীক্ষা চালিয়েছে কমিউনিস্ট শাসিত উত্তর কোরিয়া। পৃথিবীর শক্তিশালী তিন বোর একটি এটি। এই বোমা পৃথিবীর মাত্র দুটি তথা যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের কাছে রয়েছে। এই বোমা এতটাই শক্তিশালী যে, একটা ফাটালেই বিশ্ব মানচিত্র থেকে মুছে যাবে পুরো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। জাতিসংঘে এমনটাই দাবি করেছে দেশটির প্রতিনিধিদল।
গত ৬ জানুয়ারি স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় হঠাৎ কেঁপে ওঠে দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলের পুঙ্গাই-রি শহর। যেখানে এর আগেও বেশ কয়েকটি বোমার পরীক্ষা চালানো হয়েছে। তার মধ্যে পরমাণু বোমাও রয়েছে। সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা পরে সরকারি টিভি চ্যানেলে ঘোষণা করা হয়, হাইড্রোজেন বোমার পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ সফল হয়েছে। তবে ওই ঘটনার পর তা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা এবং অবিশ্বাস দেখা দিয়েছে বিভিন্ন দেশের বিশেষজ্ঞদের মধ্যে। তারা বলছেন, পরমাণু বোমার তুলনায় কয়েক হাজার গুণ শক্তিশালী হাইড্রোজেন বোমা। কিন্তু উত্তর কোরিয়ার দাবীর সাথে বাস্তবতা মিলছে না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাইড্রোজেন বোমা পরীক্ষার সময় যে ভূমিকম্প হয়েছিল তার মাত্রা ছিল মাত্র ৫ দশমিক ১। আর ওই বিস্ফোরণের কারণে মাত্র ৬ কিলোটন শক্তি উৎপন্ন হয়েছিল। অথচ খুব ছোট মাপের হাইড্রোজেন বোমা হলেও অন্তত ১০ কিলোটন শক্তি উৎপাদন হওয়ার কথা। হিরোশিমা-নাগাসাকিতে পরমাণু বিস্ফোরণে তৈরি হয়েছিল ১৫-২০ কিলোটন শক্তি।
জাতিসংঘে পেশ করাে জানানো দেশটি জানিয়েছে, ওই পরীক্ষা কোনো হুমকি নয়, বরং তারা দূর্বল নয়- এই বার্তা দিতে। বর্তমানে তারা একটি পরমাণুশক্তিধর দেশে পরিণত হয়েছে। হাইড্রোজেন বোমা বিস্ফোরণ করতে পেরে চরম উত্তেজনায় রয়েছে উত্তর কোরিয়ার বিজ্ঞানীরা। এক মুহূর্তেই গোটা মার্কিন মুলুক উড়িয়ে দিতে সক্ষম তারা।
এ বিষয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ জানিয়েছে, হাইড্রোজেন বোমার বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে। উত্তর কোরিয়ার উপর কঠিন নিষেধাজ্ঞা জারির কথাও ভাবা হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কূটনীতিক জানিয়েছেন, উত্তর কোরিয়াকে ‘পরমাণুশক্তিবিহীন’ দেশে পরিণত করতে একমত হয়েছে নিরাপত্তা কাউন্সিলের ১৫টি সদস্য দেশ। তবে কোন কোন দেশ এতে অন্তর্ভূক্ত রয়েছে তা জানায়নি নিরাপত্তা পরিষদ। খুব শিগগিরই উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
১৫ জানুয়ারি ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএস