আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ট্রেনের নীচে পড়ে হাঁটু বরাবর দুই পা কেটে গেছে। কখনও বলছেন, ‘বাঁচান, আমাকে বাঁচান।’ পরক্ষণে কাটা পায়ের দিকে তাকিয়ে শিউরে উঠছেন— ‘বেঁচে থেকে কী লাভ! সব তো শেষ!’
সত্যিই সব শেষ হয়ে গেল মিনিট পনেরোর ফারাকে। যখন একই লাইনে আসা অন্য ট্রেনের সামনে গলা বাড়িয়ে দিলেন লাল্টু পাল (৩৯) নামে যুবকটি। আলাদা হয়ে গেল ধড়-মুন্ডু।
সোমবার সকালে ভারতের শিয়ালদহ-রানাঘাট শাখার হালিশহর স্টেশনে এমন এক মর্মন্তুদ দৃশ্যের সাক্ষী রইলে প্ল্যাটফর্মে দাঁড়ানো বহু মানুষ। তার আগে অবশ্য কিছু যাত্রী কেবিনম্যান-স্টেশন ম্যানেজারের ঘরে গিয়ে বলেছিলেন, ওই লাইনে আসতে চলা পরের ট্রেনটিকে যেন আটকানো হয়। চেয়েছিলেন স্ট্রেচার। কয়েক জন লাইনে নেমে লাল্টুকে খানিকটা সরিয়েও এনেছিলেন। কিন্তু সে সব কাজে আসেনি। যাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, রেল-কর্তৃপক্ষ উদ্যোগী হলে মৃত্যু হয়তো এড়ানো যেত।
পরে এই ক্ষোভ ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ে। হালিশহর স্টেশনে আসা পরের ট্রেনটি আটকে দেয় জনতা। স্টেশন ম্যানেজারকে ঘেরাও করা হয়। বিকেলে শিয়ালদহ রেল-পুলিশের সুপার দেবাশিস বেজ বলেন, ‘প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। দেখা হচ্ছে, ঠিক কী হয়েছিল।’
রেলের কর্তারা অবশ্য পরের ট্রেনে মাথা দেওয়ার ঘটনা অস্বীকার করছেন। ‘দ্বিতীয় বার ধাক্কার কোনও ঘটনাই ঘটেনি।’— দাবি পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্রের। আনন্দবাজার জানিয়েছে, যদিও প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান একেবারে উল্টো। তাঁরা জানাচ্ছেন, এ দিন সকাল পৌনে ন’টা নাগাদ দু’নম্বর প্ল্যাটফর্মের শেষ প্রান্ত দিয়ে লাইন পেরোচ্ছিলেন লাল্টু। ডাউন শান্তিপুর লোকালের ধাক্কায় তিনি লাইনের বাইরে ছিটকে পড়েন, পা দু’টো ঢুকে যায় লাইনের ভিতরে। দু’টো পা-ই হাঁটুর তলা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এখন অবশ্য আক্ষেপই সার।
১৯ জানুয়ারি ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএস