আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নজিরবিহীন ঘটনা, গরিব বাচ্চাদের নিজ হাতে জুতা পরিয়ে দেন জেলা প্রশাসক! প্রচণ্ড ঠাণ্ডার মধ্যে একদল বাচ্চা খালি পায়ে স্কুলে যাচ্ছিল। দেশের বেশির ভাগ অঞ্চলে এটা একটা সাধারণ দৃশ্য।
জুতা কেনার পয়সা নেই, তাই কিনতে পারেনি। দেখেও সবাই এড়িয়ে যান। কিন্তু একজন এড়িয়ে যেতে পারলেন না। দোকানে নিয়ে গিয়ে বাচ্চাদের জুতা কিনে দিয়েই ক্ষান্ত হলেন না তিনি, নিজের হাতে তাদের জুতা পরিয়েও দিলেন। তিনি একজন জেলা প্রশাসক।
ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের রাজস্থানের জালৌরে। এখানকার জেলা প্রশাসক জিতেন্দ্রকুমার সোনির এই মানবিক দিক এক অন্য দেশের চিত্র তুলে ধরে। তিনি বলেন, ডিসেম্বরের প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় আমি বিভিন্ন স্কুল পরিদর্শক করা শুরু করি। এ দিন এ রকমই একটা স্কুল পরিদর্শনে যাচ্ছিলাম। পথে দেখতে পাই, বেশ কয়েকটি বাচ্চা খালি পায়ে কাঁপতে কাঁপতে স্কুলে যাচ্ছে। এ অবস্থা দেখে ঠিক করি, এদের পায়ে জুতা পরানোটা খুবই প্রয়োজন।
মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান জিতেন্দ্রর বাবা একজন সাধারণ ঘড়ির দোকানি ছিলেন। দুই ছেলেকে পড়াশোনা করাতে তিনি খুবই পরিশ্রম করেছেন। জিতেন্দ্রর কথায়, আসলে খুব কষ্ট করে বড় হয়েছি, তাই বাচ্চাদের অবস্থা দেখে খুবই কষ্ট পেয়েছিলাম।
তিনি বলেন, খোঁজ নিয়ে জানতে পারি এমন অনেক পরিবার রয়েছে, যারা পড়াশোনার বই পর্যন্ত কিনে দিতে পারে না বাচ্চাদের। জুতা তো তাদের কাছে বিলাসিতা। ঠিক করে নিই এমন একটা যোজনা শুরু করব, যাতে ঠাণ্ডা বাচ্চাদের আর কষ্ট পেতে না হয়।
যেমন ভাবা তেমনি কাজ। দপ্তরে ফিরে ২৭৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত ৩টি মিউনিসিপ্যালিটির মধ্যে যত স্কুল রয়েছে তার সব বাচ্চাদের ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিতে বলেন সংশ্লিষ্ট আধিকারীকদের। তাতে দেখা যায়, প্রায় আড়াই হাজার স্কুলে ২০ হাজারেরও বেশি বাচ্চা রয়েছে, যারা খালি পায়েই স্কুলে যাতায়াত করে।
এসব বাচ্চার পায়ে জুতা পরানোর জন্য 'চরণ পাদুকা' নামে একটি যোজনা চালু করেন তিনি। এ যোজনায় প্রচুর মানুষ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। সবার সাহায্যেই বাচ্চাদের মুখে হাসি ফুটছে। জিতেন্দ্র বলেন, আসলে সাধারণ মানুষই এ কাজ করছেন। আমি শুধু সাহায্যটুকু পৌঁছে দিচ্ছি বাচ্চাদের কাছে।
১৯ জানুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম