শনিবার, ২৩ জানুয়ারী, ২০১৬, ০৮:২৬:১৯

সৌদি মুফতির সেই ফতোয়া প্রত্যাখ্যান করলেন দাবাড়ুরা

সৌদি মুফতির সেই ফতোয়া প্রত্যাখ্যান করলেন দাবাড়ুরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সৌদি আরবোর রান্ড মুফতি আব্দুল আজিজ বিন আব্দুল্লাহর দেয়া এক ফতোয়া নিয়ে হৈ চৈ পড়ে পড়ে গেছে গোটা বিশ্বে। এ নিয়ে বাংলাদেশেও ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ইউটিউবে তার এই বক্তব্য প্রকাশিত হয় ২০১৪ সালে। কিন্তু সম্প্রতি এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা এবং বিতর্ক শুরু হয় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে।


সেই ফতোয়াকে প্রত্যাখ্যান করেছেন বাংলাদেশের শীর্ষ দাবাড়ুরা। তাঁরা বলেছেন, দাবা এক নির্দোষ খেলা, যাতে বুদ্ধির চর্চা হয় এবং মস্তিস্ক ক্ষুরধার হয়।

সৌদি গ্রান্ড মুফতি দাবা খেলাকে সময়ের অপচয় এবং এটি জুয়া খেলা উৎসাহিত করে বলে মন্তব্য করেন। তিনি আরও বলেছেন, এই খেলা মানুষের মধ্যে শত্রুতা এবং ঘৃণা ছড়ায়।

বাংলাদেশের খ্যাতিমান মহিলা দাবাড়ু রাণী হামিদ বলেন, দাবা খেলা সম্পর্কে সৌদি গ্রান্ড মুফতির এধরণের মন্তব্য শুনে তার খারাপ লেগেছে। লোকে হয়তো ভাববে, আমরা বুঝি খারাপ কোন কাজ করছি।

রাণী হামিদ দাবা খেলছেন চল্লিশ বছরের বেশি সময় ধরে। একটানা বারো বছরের বেশি জাতীয় মহিলা দাবায় চ্যাম্পিয়ন ছিলেন। পেয়েছেন আন্তর্জাতিক মাস্টার খেতাব।

তিনি বলেন, আমরা তো দাবা খেলি সময় কাটানোর জন্য, আনন্দের জন্য। এটা এত নির্দোষ একটা খেলা। দাবা খেললে বুদ্ধির চর্চা হয়, অংকে ভালো করা যায়। কারণ এটা তো বুদ্ধির খেলা।

রাণী হামিদ বলেন, আমি মনে করি পরনিন্দা বা পরচর্চার চেয়ে ঘরে বসে দাবা খেলা তো অনেক ভালো। জীবনের শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত তিনি দাবা খেলে যাবেন।

দাবায় বাংলাদেশের প্রথম গ্রান্ড মাস্টার নিয়াজ মোর্শেদও একই ভাষায় সৌদি গ্রান্ড মুফতির বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, দাবা খেলা নিয়ে কোন নেতিবাচক পদক্ষেপ কখনও টিকতে পারেনি। ভালোবাসা এবং সঙ্গীত যেভাবে আপনাকে আনন্দ দেয়, দাবা খেলা থেকেও আপনি সেই আনন্দ পেতে পারেন।

নিয়াজ মোর্শেদ বলেন, আয়াতোল্লাহ খোমেনি কিন্তু ইরানে দীর্ঘ সময় দাবা খেলা নিষিদ্ধ করেছিলেন। ইরানে এক সময় দাবা খেলা হতো না। কিন্তু খোমেনি নিজেই কিন্তু আবার দশ বছর পর এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন।

সাত বছর আগে গ্র্যান্ড মাষ্টার খেতাব পেয়েছেন বাংলাদেশের এনামুল হোসেন রাজিব। তিনিও বলেছেন, দাবা নিয়ে এসব নেতিবাচক কথাবার্তাকে তিনি কোন গুরুত্ব দিতে চান না।

তিনি বলেন, দাবা খেলার যে সৌন্দর্য, এটা যদি আমরা মানুষকে বোঝাতে পারি, তখন অনেকেই এটাতে আগ্রহী হবে। এটা অনেকটা ক্ল্যাসিক্যাল মিউজিকের মতো।

উল্লেখ্য, দাবা বাংলাদেশেও যথেষ্ট জনপ্রিয়। বাংলাদেশে পাঁচজন গ্র্যান্ড মাষ্টার এবং ১৪ জন ফিদে গ্র্যান্ড মাষ্টার রয়েছেন।
২৩ জানুয়ারি ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে