আন্তর্জাতিক ডেস্ক: এরই মধ্যে ৭০ পার হয়ে গেছে। সেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় অস্ট্রেলিয়ার নারী জয়েস মরিস হারিয়েছিলেন তার প্রেমিকাকে। মরিসের বয়স এখন ৮৮ বছর। ৮৮ বছরের বৃদ্ধা ছেলেদের কাছে বায়না ধরেন, তার হারিয়ে যাওয়া প্রেমিককে খুঁজে দিতে হবে। মায়ের আবদার রাখতে ছেলেরা অনলাইনে খোঁজ শুরু করেন।
তথ্য প্রযুক্তির যুগ হওয়াতে এক পর্যায়ে পেয়েও প্রেমিক থমাসকে। তবে মজার ব্যাপার হলেঅ থমাসও প্রেমকে বুকে আগলে রেখেছেন সেই ১৭ বছর বয়সী তরুণীর ছবির ভেতর। থমাসও প্রেমিকার ছেলেদের জানালেন, তিনিও অনক খোঁজাখুঁজি করেছেন।
ঘটনার সময়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ১৯৪৪ সাল। অস্থির এক সময়। বিশ্বজুড়ে চলছে বারুদের খেলা। কালো ধোয়ার আড়ালে যেটুকু দেখার- রক্ত, হত্যা, আগ্রাসন ও জয়-পরাজয়। এরই মধ্যে সবার অলক্ষ্যে ফুটেছিলো ছোট্ট একটি প্রেমের গল্প। ঠিক রূপকথার মতো।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইংল্যান্ডে দেখা হয় ২১ বছর বয়সী টগবগে সেনা নরউড থমাস ও ১৭ বছরের তরুণী জয়েস মরিসের। আমেরিকার ভার্জিনিয়া বিচের বাসিন্দা নরউড প্রথম দেখাতেই প্রেমে পড়েন সপ্তদশী সুন্দরী জয়েস মরিসের। কিন্তু যুদ্ধ তাদের দূরে সরিয়ে দেয়। মাত্র দু’মাস পরেই নরউডকে চলে যেতে হয় অন্যত্র।
নরউডের প্রেমের গল্প মাসদুয়েক আগে এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে লোকমুখে। বৃদ্ধ, অসুস্থ নরউডকে তার প্রেমিকার সঙ্গে মিলিয়ে দিতে এর পরে তোড়জোড় শুরু করেন এলাকাবাসীই।
অস্ট্রেলিয়ায় নিজের বাড়িতে বসেই ছেলের কাছে বায়না ধরেন ৮৮ বছরের মরিস। অনলাইনে খোঁজ করতে হবে হারিয়ে যাওয়া প্রেমিকের। এর পর খুঁজেও পেয়ে যান ৯৩ বছরের থমাসকে।
থমাসকে খুঁজে পেয়েই তার সঙ্গে দেখা করতে চান মরিস। শুধু একবার জড়িয়ে ধরবেন। তাদের স্বপ্নপূরণে এই সপ্তাহে স্কাইপ কল সেট আপ করেছিলেন থমাসের ছেলে স্টিভেন থমাস ও মরিসের ছেলে রবার্ট মরিস।
সুদূর অস্ট্রেলিয়ায় খোঁজ পাওয়া যায় জয়েসের। স্কাইপি-তে যোগাযোগ করানো হয় দু’জনের।
৭০ বছর পরে... দু’প্রান্তে তখন নস্ট্যালজিয়া আর আবেগের বান ডেকেছে। কথা হল ঘণ্টাদু’য়েক। দু’জনে দু’জনকে কথা দিলেন, ‘‘দেখা হবে।’’
কিন্তু কীভাবে? নরউডের কাছে অত টাকা নেই যে, তিনি অস্ট্রেলিয়া যাবেন।
এলাকাবাসী চাঁদা উঠাতে শুরু করেছেন। এখন পর্যন্ত সাড়ে সাত হাজার ডলারের বেশি জোগাড় হয়ে গেছে। পুরো ঘটনা জানানো হয় এয়ার নিউজিল্যান্ড কর্তৃপক্ষকে। মরিস থমাস খুব শিগগিরই দেখা করবেন।
২৩ জানুয়ারি, ২০১৬/এমটিনিউজ/আরিফুর রাজু/এআর