আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নির্জনে একা একা বসবাস করেন এরকম এক সার্বিয়ান নারী তার নিজের অজান্তেই উত্তরাধিকার সূত্রে স্বামীর কাছ থেকে বিশাল সম্পদের মালিক হয়েছেন। স্বামীর কাছ থেকে তার পাওয়া অর্থের পরিমাণ প্রায় দশ লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলার। এই নারীর নাম মারিয়া জ্লাটিচ। তার বয়স প্রায় ৮৬ বছর। তিনি সার্বিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় একটি পাহাড়ের ওপর তৈরি মাটির ঘরে বসবাস করেন। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ খবর জানা যায়।
স্বামীর সাথে তার বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে পাঁচ বছর আগে। এক সময় তিনি জানতে পারেন যে তার স্বামী অস্ট্রেলিয়াতে মারা গেছেন। তারপর তিনি তার প্রতিবেশীর সাথে এ বিষয় নিয়ে কথা বলেন এবং তার মৃত স্বামীর ব্যাপারে আরো তথ্য সংগ্রহের জন্যে তাকে বলেন। এর চার বছর পর তিনি জানতে পারেন যে স্বামীর কাছ থেকে তিনি এই বিপুল পরিমাণ অর্থের মালিক হয়েছেন।
এরপর সব অর্থ তিনি দরিদ্র লোকজনের মধ্যে বিলিয়ে দিয়েছেন। ওই দরিদ্র মানুষেরাই তার দেখাশোনা করে। ‘আমার কোনো টাকা পয়সার দরকার নেই। সামান্য রুটি, পানি আর শীতে আগুন জ্বালানোর জন্যে আমার কিছু কাঠ হলেই চলবে,’ বলেন তিনি।
‘আমি খুব শীঘ্রই যেখানে চলে যাবো সেখানে অর্থের কোনো প্রয়োজন নেই। তাই আমি আমার সব টাকাই দিয়ে দিয়েছি অসহায়দের। তাদের টাকা পয়সার খুব বেশি দরকার’
মারিয়া জানান যে তিনি তার স্বামীকে নিয়ে ১৯৫৬ সালে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায় চলে গিয়েছিলেন। তার স্বামী ছিলেন একজন কাঠমিস্ত্রি। একটি কারখানায় কাজ করতেন। আর তিনি নিজে ছিলেন গৃহিনী। কিন্তু তার অসুস্থ মাকে দেখাশোনা করতে এর দেড় বছর পরেই তিনি সার্বিয়ায় ফিরে আসেন। মায়ের মৃত্যুর পর তিনি আর কখনো অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে যান নি। কিন্তু স্বামীর সাথে তার চিঠি চালাচালি চলছিলো।
স্বামীও অবসর নেওয়ার পর সার্বিয়ায় ফিরে আসতে চাইতেন। চার বছর আগে মারিয়া গুজব শুনতে পান যে তার স্বামী মারা গেছেন। তারপরই তিনি তার প্রতিবেশীকে খোঁজ খবর নিতে বলেন।
ওই প্রতিবেশী তখন বেলগ্রেডে অস্ট্রেলিয়ার এবং অস্ট্রেলিয়ায় সার্বিয়ান দূতাবাসে খোঁজ নেন। তবে অস্ট্রেলিয়ায় একজন আইনজীবীর মাধ্যমেই মারিয়ার স্বামীর মারা যাওয়ার খবরটি নিশ্চিত করেন তিনি। বহু খোঁজ খবরের পর গতবছরই তিনি তার স্বামীর রেখে যাওয়া সম্পদের কথা জানতে পারেন।
সেখান থেকে সরকারে করের টাকা কেটে নিয়ে মারিয়া যা পেয়েছেন সেটা ১০ লাখ ডলারের মতো হয়। প্রতিবেশীরা এখন মারিয়াকে দেখাশোনা করেন। আগুন জ্বালানোর জন্যে কাঠ কেটে দেন। তবে মারিয়ার সেরা বন্ধু তার কুকুরটাই, জানান তিনি।
২৩ জানুয়ারি, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই