আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রাজনীতিবিদরা যেখানে ব্যর্থ হলেন, অভিনেত্রী সেখানে সফল্যের মুখ দেখলেন। সেই সাথে মনোবল হারানো নেতা-কর্মীদের মাঝে আশার সঞ্চারও করলেন তিনি। হঠাৎ বনে গেলেন দক্ষ সংগঠক, রাজনীতিক।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য সভাপতির সভায় লোক জড়ো করতে না পেরে মনোবলে চিড় ধরেছিল বিজেপি কর্মীদের। এর ক’দিন পরেই শনিবার বাঁকুড়ায় অভিনেত্রী তথা বেজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের সভায় তুমুল ভিড় বিজেপি নেতাদের স্বস্তি এনে দিল। যদিও সেই ভিড়ে বিজেপি সমর্থক ক’জন আর অভিনেত্রীকে দেখতে ক’জন এসেছিলেন, তা নিয়ে সংশয় রইল।
বৃহস্পতিবার ছাতনার কামারকুলি মোড়ে পথসভা করতে এসেছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সেই সভায় মাত্র শ’দেড়েক লোক হয়েছিল। এর পরে বিজেপি জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন বলে প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল জেলা জুড়ে। বিজেপি নেতাদের একাংশ ওই দিন খারাপ আবহাওয়াকেই কারণ হিসেবে দেখান। তবে দলের অভ্যন্তরেই অনেকে জানিয়েছিলেন, নতুন জেলা সভাপতিকে ঘিরে দ্বন্দ্বে ওই সভায় তেমন ভিড় হয়নি।
আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, রূপার সভায় তাই ভাল দেখানো রীতিমতো চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলেন জেলা নেতৃত্ব। দলের বাঁকুড়া বিভাগের সম্পাদক শ্যামাপদ মণ্ডল আগেই দাবি করেছিলেন সভায় ঠাসা ভিড় হবে। হলও তাই। পুলিশের হিসেবেই তামলিবাঁধ মোড়ে এ দিনের সভায় ভিড় ছিল দু’হাজারের বেশি। আর দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সুভাষ সরকারের দাবি, ১০ হাজার মানুষ এসেছিলেন।
যদিও এই ভিড়ের অনেকটাই ছিল বাঁকুড়া শহরের বাইরের আশপাশের ব্লকের লোকজনের ভিড়। আবার শহরের অনেকেই দেখতে এসেছিলেন রূপালী পর্দার অভিনেত্রী ‘রূপা’-কে। খাস বিজেপি নেতারাও তাঁর অভিনেত্রী ইমেজকে অনেকটাই ভাঙিয়েছেন। মাইকে একাধিকবার তাঁর নামের আগে ‘মহাভারত সিরিয়ালের দ্রৌপদী’ বলে প্রচার করেছেন। শহরের বহু পথচলতি মানুষও সেই ‘নায়িকা’ দেখার জন্য দাঁড়িয়ে ভিড় জমিয়েছেন সভায়।
তবে মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে যখনই রাজ্য নেতা সুভাষবাবু বা রূপা রাজ্য সরকারকে কটাক্ষে বিদ্ধ করেছেন হাততালি দিয়ে স্বাগত জানিয়েছেন উপস্থিত দর্শক। সেই হাততালি দেখিয়েই জেলা নেতাদের দাবি, তাঁদের দলের সমর্থকেরাই এসেছিলেন নেত্রী রূপার বক্তব্য শুনতে।
তবে ভিড় জমিয়ে বিজেপির সম্মান কিছুটা পুনরুদ্ধার হলেও দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কাঁটা অবশ্য রয়েই গেল।
২৪ জানুয়ারি ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএস