আন্তর্জাতিক ডেস্ক : শীতের দুপুরে এক প্লেট ধোঁয়া ওঠা মালাবার চিকেন বিরিয়ানি! কেরলের কোঝিকোড়ের জেলাশাসক প্রশান্ত নায়ার এমনই পুরস্কার দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন জনতাকে। তবে শর্ত ছিল, বিরিয়ানি খেতে হলে সকলে মিলে পরিষ্কার করতে হবে পিশারিকাভু মন্দিরের ১৪ একরের পুকুর।
যেমন কথা, তেমন কাজ! গতকাল প্রজাতন্ত্র দিবসে ৭৫০ জন স্থানীয় বাসিন্দা পরিষ্কার করেছেন ওই পুকুর। কচুরিপানা আর পাঁকে ভর্তি ওই পুকুরে ছিল অন্তত এক ফুট ময়লার আস্তরণ। জেলাশাসকও কথা রেখেছেন। পুকুরের পাশেই সামিয়ানা খাটিয়ে রান্না করা হয়েছিল ৫০ কেজি বিরিয়ানি। বিকেলের মধ্যে হাঁড়ি কে হাঁড়ি সাফ!
প্রশান্ত এমনই। যা করেন, সকলকে জানিয়ে করেন। কাজের স্বচ্ছতা বজায় রাখা, সাধারণ মানুষের কাছে নিজেকে পৌঁছে দেওয়ার জন্য সোশ্যাল মিডিয়া যাঁর খুব পছন্দের মাধ্যম।
ফেসবুক পেজে তিনি ঘোষণা করেছিলেন, কোয়িলান্ডির ওই পুকুরের কচুরিপানা আর পাঁক পরিষ্কার করলেই হাতেহাতে মিলবে বিরিয়ানির প্লেট। বিরিয়ানি রান্নার টাকা নেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসনের খরা প্রতিরোধ তহবিল থেকে।
প্রশান্ত সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, তিনি চারপাশে সহানুভূতিশীল মানুষদের দেখতে চান। সেই ভাবনা থেকেই কর্মসংস্কৃতির রাস্তা দিয়ে প্রকৃতির সংরক্ষণ করতে চাইছেন এই নবীন অফিসার।
প্রশান্ত অবশ্য এর আগেও এই ধরনের উদ্ভাবনী শক্তি দেখিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। তার ‘অপারেশন সুলেমানি’ প্রকল্পের লক্ষ্য ছিল, শহরে বসবাসকারী গরিব মানুষেরা যেন অভুক্ত না থাকেন। প্রকল্পে বিলি করা কুপন দিয়ে শহরের একাধিক রেস্তোরাঁয় খেতে পারতেন অভুক্তেরা। জমা পড়া কুপন অনুযায়ী প্রকল্প রূপায়ণকারী সংস্থাগুলি পরে টাকা দিত রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষকে। শুধু সরকারি কর্মীরাই নন, সেই প্রকল্পে স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে সামিল হয়েছিল স্কুলপড়ুয়ারাও।
ফেসবুকের ‘কালেক্টর, কোঝিকোড়’ নামে পেজটি প্রশান্ত নিজেই চালান। এক লক্ষ ৬৮ হাজারেরও বেশি মানুষ পেজটি ‘লাইক’ করেছেন।
প্রশান্তের মতে, মানুষের সমস্যা নিয়ে কথা বলতে গেলে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলি কার্যকরী মাধ্যম। এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক দলগুলির আক্রমণের মুখেও পড়তে হয়েছে তাকে। তাতে অবশ্য পিছু হটেননি তিনি। ইতিমধ্যে ভালবাসার পুরস্কার হিসাবে কেরলের সব জেলার শাসক হওয়ারও প্রস্তাবও ফেসবুকেই পেয়েছেন যে! -এবেলা
২৮ জানুয়ারি, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন