আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মধ্যপাচ্যের দেশ সৌদি আরবে আরও দক্ষ কর্মী পাঠানোর কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ। পাশাপাশি অন্যান্য দেশের চাকরির বাজারের চাহিদা মেটানোর জন্য দক্ষ কর্মী তৈরি করা হচ্ছে।
সৌদি আরবের সংবাদ মাধ্যম আরব নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ জনশক্তি রফতানি ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) অতিরিক্ত মহাপরিচালক আনোয়ার পাশা।
বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিকরা বলছেন, সৌদি আরব দক্ষতা যাচাইয়ের যে কর্মসূচি শুরু করেছে সেটি তাদের ক্যারিয়ারে জন্য সহায়ক হবে। সৌদির শ্রমবাজারে কর্মীদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গত ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশে কর্মী নিয়োগ ও দক্ষতা যাচাইকরণ কার্যক্রম চালু করে দেশটি।
প্রাথমিকভাবে পাঁচটি পেশাকে গুরুত্ব দিয়ে সৌদি আরব কর্মসূচিটি হাতে নিয়েছে। সেগুলো হলো: প্লাম্বার, ইলেকট্রিশিয়ান, ওয়েল্ডার, স্বয়ংচালিত ইলেকট্রিশিয়ান এবং এয়ার কন্ডিশনার টেকনিশিয়ান। এছাড়া নির্মাণ শ্রমিক, টাইলস মিস্ত্রী, গাড়ি মেকানিক এবং মৌলিক গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ কর্মীদের কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য চেষ্টা চলছে।
শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) জনশক্তি রফতানি ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর অতিরিক্ত মহাপরিচালক আনোয়ার পাশা বলেন, সৌদি আরব এবং অন্যান্য দেশের চাকরির বাজারের চাহিদা মেটাতে আরও দক্ষ কর্মী তৈরি করছি। তিনি বলেন, বর্তমানে প্রায় ১৫০টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র সম্ভাব্য অভিবাসী কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে এবং সারা দেশে তৃণমূল পর্যায়ে আরও কেন্দ্র স্থাপনের কাজ চলছে।
শনিবার ঢাকায় সৌদি দূতাবাস এক বিবৃতিতে বলেছে, পেশাগত পরীক্ষা কার্যক্রমের লক্ষ্য মূলত কর্মক্ষমতা বাড়ানো এবং কর্মশক্তির উৎপাদনশীলতা নিশ্চিত করা।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিনামূল্যের এই উদ্যোগের উদ্দেশ্য হলো ‘দক্ষ বাংলাদেশি কর্মশক্তির জন্য আরও ভালো কাজের সুযোগ’ তৈরি এবং উপসাগরীয় দেশগুলোতে ‘বৃহত্তর বাজারের অংশীদারিত্ব গ্রহণে’ তাদের প্রতিযোগিতা করার সুযোগ দেয়া।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রশিক্ষিত কর্মীরা বিদেশে কাজ করুক অথবা ফিরে আসুক না কেন, এই প্রশিক্ষণ বাংলাদেশিদের ওপর এক ধরনের বিনিয়োগ।’ বিশ্বে বাংলাদেশি অভিবাসী কর্মীদের প্রধান গন্তব্য সৌদি আরব। বাংলাদেশি অভিবাসী কর্মীদের প্রায় অর্ধেকই দেশটিতে রয়েছেন।
দেশের সবচেয়ে বড় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের প্রধান শরিফুল হাসান বলেন, নতুন দক্ষতা যাচাইকরণ কর্মসূচির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে বাংলাদেশের কিছুটা সময় লাগতে পারে, তবে দীর্ঘমেয়াদে ‘এটি আরও ভালো ফল আনবে’।
শরিফুল হাসান আরব নিউজকে বলেন, ‘এটি চমৎকার এবং ইতিবাচক উদ্যোগ।’ আমি মনে করি সৌদি আরব দক্ষ কর্মী তৈরির জন্য বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে পারে। কারণ আসন্ন মেগা প্রকল্পের জন্য সৌদি আরবে বিপুল সংখ্যক শ্রমিকের প্রয়োজন হবে। এটি উভয় দেশের জন্য একটি পারস্পরিক সুবিধা তৈরি করবে।
২০২২-২০২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের রেমিট্যান্সের শীর্ষ উৎস সৌদি আরব। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত গত জুলাইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, অভিবাসী কর্মীরা এক মাসে ৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন দেশে।