আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সব প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে দেড় ফুট উচ্চতার মেয়ে ফরিদা মায়ের কোলে চড়ে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে। পরীক্ষাকেন্দ্রে মাধ্যমিকের এক পরীক্ষার্থীকে দেখে থমকে গেলেন পরিদর্শক।
ভারতের উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা গ্রাম পানিতর। এ গ্রামের মেয়েটি শিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্ন দেখছে।
এক প্রতিবেদনে এমন খবর দিয়েছে এবেলা।
এ গ্রামেরই ইটভাটার শ্রমিক হানিফ গাজির মেয়ে বছর ১৫-এর ফরিদা খাতুন। জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী সে। দেড় ফুট উচ্চতার ফরিদা ঠিকমত হাঁটতে পারে না। অকেজো দু’টি পা আর কমজোরি দু’হাতের উপরে নির্ভর করে চলতে হয় তাকে। কথা বলা আর লেখাপড়া ছাড়া প্রায় নিজের যাবতীয় কাজের জন্য নির্ভর করতে হয় অন্যের ওপর।
মায়ের কোলে চড়েই তার টিউশন এবং স্কুলে যাতায়াত। অভাবের সংসারে ৭ সদস্য। ৪ ভাই-বোনের মধ্যে ফরিদা দ্বিতীয়। টানাটানির সংসারে মেয়ের চোখের স্বপ্ন অমলিন রাখতে ফরিদার মা খোদেজা বিবি বিড়ি-শ্রমিকের কাজ করে স্বামীর হাল ধরেছেন।
একদিকে ইচ্ছামতির ভরা গাঙ, অন্যদিকে সীমান্তে বেড়াজালের পাশে জওয়ানদের ভারী বুটের আওয়াজ। এ বাস্তবতাকে উপেক্ষা করে একচিলতে ঘরের ছোট্ট মেয়ের ইচ্ছা, গ্রামের ঘরে ঘরে সে পৌঁছে দেবে শিক্ষার আলো। পরীক্ষায় ভালো ফল করে বুঝিয়ে দিতে চায়, শরীরে ছোটো হলেও মনে নয়, আর পাঁচটা মানুষের মতো বেঁচে থাকা তারও স্বপ্ন।
পানিতর উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী ফরিদার এবার মাধ্যমিক পরীক্ষাকেন্দ্র পড়েছে বাড়ি থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে শিবহাটি হাইস্কুলে। সকাল সকাল মায়ের কোলে চড়ে বেরিয়ে পড়া এবং এরপর ইঞ্জিন ভ্যানে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছা।
ফরিদার দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন গ্রামের মানুষজন। ফরিদার জীবনের সবথেকে বড় পরীক্ষা। তার দিকে তাকিয়ে আছে তার স্কুলের অন্যান্য ছাত্রী ও শিক্ষিকারা। তেমনি তাকিয়ে আছে গ্রামের মানুষজন।
৩ ফেব্রুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম