শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ১১:৫২:০৪

১২০০ কিলোমিটার চলে এক চার্জেই!

১২০০ কিলোমিটার চলে এক চার্জেই!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্বের গাড়ি শিল্পে বৈদ্যুতিক গাড়ি বড় এক মাত্রা যোগ করেছে। এই গাড়ি পরিবেশবান্ধব। অন্যদিকে এটি জ্বালানি-সাশ্রয়ী। এই গাড়ির জ্বালানি খরচ প্রচলিত গাড়ির পাঁচ ভাগের একভাগ মাত্র। এত সুবিধা থাকার পরও যত এটি জনপ্রিয় হওয়ার কথা ছিল, ততটা হচ্ছে না। এর অন্যতম কারণ এর চার্জিং সমস্যা। বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে বৈদ্যুতিক গাড়ির পর্যাপ্ত চার্জিং স্টেশন নেই। অন্যদিকে বেশিরভাগ বৈদ্যুতিক গাড়ি একবার চার্জ দেওয়ার পর ৩/৪শ কিলোমিটারের বেশি যেতে পারে না। তাই যাদেরকে মাঝে মধ্যেই শহরের বাইরে দূরে কোথাও যেতে হয় অথবা যারা ভ্রমণপ পিপাসু- তারা পছন্দ সত্ত্বেও বৈদ্যুতিক গাড়ি এড়িয়ে চলেন। কারণ মাঝপথে গাড়ির ব্যাটারির চার্জ ফুরিয়ে গেলে বিপত্তির আর শেষ থাকবে না।

তবে বৈদ্যুতিক গাড়ির চার্জ নিয়ে ভয়ের দিন শেষ হতে চলেছে। চীনের গাড়ি উৎপাদনকারী কোম্পানি ফার্স্ট অটো ওয়ার্কস (এফএডব্লিউ) এমনই এক বৈদ্যুতিক গাড়ি নিয়ে এসেছে এক চার্জেই যা চলতে পারবে ১ হাজার ২০০ কিলোমিটার। ইতিমধ্যে চীনের বাইরে বিভিন্ন দেশে এই গাড়ি রপ্তানি করেছে কোম্পানিটি। পাশের দেশ ভারতের বাজারে শিয়াওমা মিনি ইভি নামের এ গাড়িটি বেশ সাড়া জাগিয়েছে। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।

এতদিন বৈদ্যুতিক গাড়ির তেমন প্রসার না হওয়ার আরেকটি কারণ ছিল এর দাম। টেসলাসহ বেশিরভাগ ব্র্যান্ডের বৈদ্যুতিক গাড়ির দাম প্রচলিত জ্বালানির (অকটেন,পেট্রোল, ডিজেল) গাড়ির কয়েক গুণ। কিন্তু ফার্স্ট অটো ওয়ার্কসের শিয়াওমা মিনি ইভি গাড়ি এই চিত্রও বদলে দিচ্ছে। ভারতের বাজারে এই গাড়ি পাওয়া যাচ্ছে প্রচলিত গাড়ির চেয়ে কম দামে।

জানা যায়, বিশ্বের জনপ্রিয় একটি গাড়ির মড়েল উলিং হংগুয়াং মিনি ইভি। বর্তমানে চীনে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া মাইক্রোকার হংগুয়াং। ধারণা করা হচ্ছে, ফার্স্ট অটো ওয়ার্কসের বেস্টুন ব্র্যান্ডের শিয়াওমা মিনি হংগুয়াং এর সঙ্গে পাল্লা দেবে।

বেস্টুন ব্র্যান্ডের শিয়াওমা বর্তমানে ভারতের বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। ভারতে এই ইলেক্ট্রিক গাড়িটি ৩ লক্ষ ৪৭ হাজার রুপি থেকে ৫ লক্ষ ৭৮ হাজার রুপিতে বিক্রি হচ্ছে। চীনের মুদ্রায় যার পরিমাণ ৩০ হাজার থেকে ৫০ হাজার ইউয়ান।

পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের বাজারে গাড়িটি ইতিমধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে। বাংলাদেশের বাজারে ইলেকট্রিক এই গাড়িটি আসবে কিনা আদৌ তার কোন লক্ষণ নেই। কারণ দেশের বাজারের এটি আসার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। দেশের বাজারে গাড়িটি এসে গেলেও ভারতের চেয়ে দাম কয়েকগুণ বেশি পড়বে বলেই ধারণা করছেন অনেকে।

চলতি বছরের এপ্রিলে সাংহাই অটো শোতে হার্ডটপ ও রূপান্তরযোগ্য উভয় ভেরিয়েন্টের বেস্টুন শিয়াওমা প্রদর্শন করা হয়েছিলো। তবে বর্তমানে শুধুমাত্র হার্ডটপ ভেরিয়েন্ট পাওয়া যাবে। কারণ কনভার্টেবল ভার্সনটি বাজারে আনার তারিখ এখনো ঠিক করা হয়নি। শিয়াওমাতে একটি ৭ ইঞ্চি টাচস্ক্রিন ইনফোটেইনমেন্ট সিস্টেম এবং ড্যাশবোর্ডে একটি আকর্ষণীয় ডুয়াল-টোন থিম রয়েছে।

এই ইলেকট্রিক গাড়িটিতে রয়েছে একটি আলাদা বক্সি প্রোফাইল। এরসঙ্গে আরও রয়েছে দ্বৈত-টোন রঙের স্কিম। এছাড়াও বড় বর্গাকার হেডল্যাম্প, এরোডাইনামিক চাকা, গাড়ির পিছনের অংশে টেল ল্যাম্প এবং বাম্পার সহ একটি আকর্ষণীয় ডিজাইনে গাড়িটি তৈরি করা হয়েছে।

শিয়াওমা তৈরি করা হয়েছে ‘শিয়াওমা এফএমই’ প্ল্যাটফর্মে । ইভি ও রেঞ্জ এক্সটেন্ডার মডেলের জন্য ডেডিকেটেড চ্যাসিস অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এফএমই প্ল্যাটফর্ম দুটি সাব-প্ল্যাটফর্ম নিয়ে গঠিত (এ১ এবং এ২)। ইভি ভেরিয়েন্টের পরিসর ৮০০ কিলোমিটার। অপরদিকে এক্সটেন্ডার মডেলটির পরিসর ১ হাজার ২০০ কিলোমিটার। উভয় প্ল্যাটফর্ম ৮০০ ভি আর্কিটেকচার সমর্থন করে।

মাইক্রো-ইভি চলে পেছনের অ্যাক্সেলের উপর থাকা একটি ২০ কিলোওয়াট বৈদ্যুতিক মোটরের মাধ্যমে। গাড়িটি একটি লিথিয়াম-আয়রন ফসফেট (এলএফপি) ব্যাটারি দিয়ে ডিজাইন করা। তবে পাওয়ারট্রেন সম্পর্কে এখনও বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়নি।

এদিকে নিরাপত্তার জন্য এই গাড়িতে রয়েছে ড্রাইভার-সাইড এয়ারব্যাগ। এতে একটি থ্রি-ডোর কনফিগারেশন রয়েছে। গাড়িটির দৈর্ঘ্য ৩ হাজার মিলিমিটার, প্রস্থ ১ হাজার ৫১০ মিলিমিটার এবং উচ্চতা ১ হাজার ৬৩০ মিলিমিটার। এছাড়াও ১ হাজার ৯৫৩ মিলিমিটারের হুইলবেস দিয়ে এই ইলেকট্রিক গাড়িটির ডিজাইন করা হয়েছে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে