সোমবার, ০২ অক্টোবর, ২০২৩, ০২:৪২:৩২

এবার আমেরিকায় চালকবিহীন হেলিকপ্টার করল কিশোরগঞ্জের হুমায়ুন!

এবার আমেরিকায় চালকবিহীন হেলিকপ্টার করল কিশোরগঞ্জের হুমায়ুন!

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নের নাগেরগ্রামের কৃতী সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. হুমায়ুন কবির। বিদেশের মাটিতে একাধিক সফলতা অর্জন করায় তাকে নিয়ে গর্বিত তার এলাকার মানুষ। তিনি নিজের এলাকায় আবার আসবেন এমন প্রতীক্ষায় রয়েছেন এলাকাবাসী। পৃথিবীর ইতিহাসে তিনিই প্রথম বিজ্ঞানী চালক বিহীন হেলিকপ্টারের আবিষ্কারক এবং জনক।

সম্প্রতি তিনি আরো একটি বিশেষ ও আধুনিক হেলিকপ্টার আবিষ্কার করেছেন। বাংলাদেশী এই বিশিষ্ট রকেটবিজ্ঞানী, উদ্ভাবক, অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং-এ পিএইচডি, অস্টিনের ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাসে গত ২৬ বছর ধরে বোয়িং বিজ্ঞানী হিসেবে কাজ করছেন। ডক্টর কবিরকে মার্কিন সরকারের জন্য এই বিশেষ হেলিকপ্টারটি তৈরি করতে কয়েক শত সেরা এবং উজ্জ্বলতম মহাকাশ প্রকৌশলী সাহায্য করেছেন।

জানা যায়, এই হেলিকপ্টারটি হলো সবচেয়ে উন্নত হেলিকপ্টার যা তার হাইব্রিড প্রকৃতির কারণে আজ অবধি বিদ্যমান। এটি একটি হেলিকপ্টারের মতো টেক অফ করে এবং হেলিকপ্টারের মতো ঘোরাফেরা করে। যেকোনো স্থানে এটি অবতারণ করতে পারে। একটি বিমানের মতো উড়ে। এটি একটি ২-ইন-১ উড়ন্ত মেশিন যার নাম ‘ঠ-২২ ঙংঢ়ৎবু’।

ঠ-২২ সামরিক বাহিনীর তিনটি শাখা, বিমানবাহিনী, মেরিন কর্পস এবং নৌবাহিনীর জন্য একটি কাজের ঘোড়া। ইউএস স্পেশাল অপারেশন ফোর্সের জন্য, ঈঠ-২২ দূরপাল্লার অনুপ্রবেশ, বহিষ্কার এবং আবার সরবরাহ মিশন সমর্থন করে। মেরিন কর্পস গঠ-২২ই অভিযান, যৌথ বা সম্মিলিত অপারেশনের সময় যুদ্ধের সৈন্য, সরবরাহ এবং সরঞ্জামগুলোর আক্রমণ সমর্থন পরিবহন সরবরাহ করে। ঈগঠ-২২ই হল নৌবাহিনীর বাহক অনবোর্ড ডেলিভারি প্রতিস্থাপন বিমান, বর্তমানে ফ্লাইট ট্রায়ালে আছে।

এর আগে বীর মুক্তিযোদ্ধা বিজ্ঞানী হুমায়ুন কবির আবিষ্কার করেছেন ১৯৮৬ সালে রিমোট নিয়ন্ত্রিত এইচ-৫ হায়েন্স হেলিকপ্টার। বর্তমানে হুমায়ুন কবির যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত বোয়িং কোম্পানিতে ঊর্ধ্বতন বিজ্ঞানী হিসেবে কর্মরত। এই দায়িত্ব থেকে তিনি আমেরিকার সরকারের প্রতিরক্ষা প্রকল্পের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে যাচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ইঞ্জিনিয়ারিং এবং বিজ্ঞান ভিত্তিক বিচিত্র সাময়িকি গ্রন্থে একক এবং যৌথ বিজ্ঞান বিচিত্রা নামে বিজ্ঞানী হুমায়ুন কবিরের ৩৫টিরও বেশি গবেষণাধর্মী প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। বিজ্ঞানী হুমায়ুন কবির আমেরিকার আকাশে আমেরিকার হেলিকপ্টার সোসাইটির একজন বিজ্ঞানী এবং আবিষ্কারক। ২০০৪ সালের ৫ মার্চ তিনি তার জন্মস্থান কটিয়াদীর বনগ্রাম নাগেরগ্রামে এসেছিলেন। পরে তাকে নাগরিক গণসংবর্ধনা দেয়া হয়েছিল। এর পরে আর দেশে আসা হয়নি।

আমেরিকায় অবস্থানরত বিজ্ঞানী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন কবির জানান, বাংলাদেশ ও দেশের মানুষকে তিনি ভালোবাসেন। নিজ এলাকার মানুষ এবং দেশবাসীকে তিনি শুভেচ্ছা জানিয়ে দোয়া কামনা করেন। তিনি বলেন, দেশের মানুষ আমাকে নিয়ে গর্বিত জেনে আমিও আনন্দিত। আমিও তাদের নিয়ে গর্ববোধ করি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, আরো একবার দেশে আসার ইচ্ছে তার মনে রয়েছে তবে ঠিক কবে আসবেন তা জানাতে পারেননি তিনি। তিনি বাংলাদেশের অগ্রগতি এবং দেশের মানুষের জন্য শুভ কামনা জানিয়েছেন।

এর আগে গত ২০০৪ সালে তিনি বাংলাদেশে এসে নিজ গ্রাম নাগেরগ্রাম বনগ্রামে এসে সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেছিলেন আমি, যে বিষয়ে কাজ করি, সে ক্ষেত্রে আমার জন্মভূমি বাংলাদেশের জন্য আমি তো অব্যবহার যোগ্য। অবশ্য বিজ্ঞান চর্চা বিষয়ে এবং বিজ্ঞানের প্রসারে আমি অবশ্যই এ দেশে কাজে আসতে পারি। কিন্তু এ বাংলাদেশে সেই সুযোগ খুবই কম। আমি যখন ১৯৭৮ সালে আমেরিকায় যাই, তখন বাংলাদেশ এবং প্রতিবেশী ভারতের মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য ছিল না। কিন্তু এত বছর পর দেখেন বাংলাদেশের চেয়ে ভারত ৫০ বছর এগিয়ে গেছে। এর কারণ ভারতবাসী জানে, কিভাবে তারা প্রতিষ্ঠিত হবে। মানবোন্নয়ন আর অর্থনীতি বিজ্ঞান চর্চায় তারা কোথায় কতটুকু যেতে হবে সেই মনসিকতা তাদের আছে, যা আমাদের নেই জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চায় কিংবা উচ্চতর ডিগ্রি আর ব্যবসা-বাণিজ্যের অর্থনীতিতে আমাদের সমাজব্যবস্থায় রাষ্ট্রব্যবস্থায় সেই লক্ষ এবং পরিকল্পনার খুব প্রয়োজন।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে