সোমবার, ০২ অক্টোবর, ২০২৩, ০৫:৩৬:৪০

ইন্দোনেশিয়ায় চালু হলো বুলেট ট্রেন, গতিবেগ ঘণ্টায় ৩৫০ কিলোমিটার

ইন্দোনেশিয়ায় চালু হলো বুলেট ট্রেন, গতিবেগ ঘণ্টায় ৩৫০ কিলোমিটার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: নিজেদের প্রথম হাইস্পিড রেলওয়ে চালু করলো ইন্দোনেশিয়া। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ট্রেনটির সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৩৫০ কিলোমিটার। চীনের বেল অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) আওতায় উচ্চাভিলাষী এ প্রকল্পে খরচ হয়েছে মোট ৭৩০ কোটি মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৮০ হাজার ৮২৭ কোটি টাকা।

২০১৯ সালেই চালু হওয়ার কথা ছিল হাইস্পিড ট্রেনটি। কিন্তু ভূমি নিয়ে বিরোধ, ক'রোনাভাইরাস মহা'মারি এবং প্রকল্পের ব্যয় ১২০ কোটি ডলার বেড়ে যাওয়ার কারণে পিছিয়ে যায় কাজ।

এরপর গত রোববার (১ সেপ্টেম্বর) ট্রেনটি উদ্বোধন করার কথা ছিল ইন্দোনেশীয় প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদোর। কিন্তু তার সময়সূচি না মেলায় একদিন পিছিয়ে সোমবার উদ্বোধন করা হয়েছে দেশটির প্রথম হাইস্পিড রেল।

ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তা থেকে দেশটির অন্যতম শীর্ষ বাণিজ্যিক শহর বান্দুং পর্যন্ত চলবে বুলেট ট্রেনটি। এই রুটের দূরত্ব ১৪২ কিলোমিটার। দ্রুতগতির এই রেলওয়ের নাম রাখা হয়েছে ‘হুশ’, ইন্দোনেশীয় ভাষায় যার অর্থ সময় সাশ্রয়ী এবং নির্ভরযোগ্য। দেশটির তীব্র যানজট কমাতে এ ধরনের প্রকল্পে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন প্রেসিডেন্ট উইদোদো।

‘হুশ’ পরিচালনা করবে পিটি কেসিআইসি নামে একটি সংস্থা। ইন্দোনেশিয়ার চারটি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব কোম্পানি ও বেইজিংয়ের চায়না রেলওয়ে ইন্টারন্যাশনালের যৌথ উদ্যোগ এটি।

ইন্দোনেশিয়ার কর্মকর্তারা বলছেন, উচ্চগতির এই রেল দেশটির অর্থনৈতিক উৎপাদনশীলতা বাড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে। ট্রেনটি বিদ্যুৎচালিত হওয়ায় কার্বন নিঃসরণ কমাতেও সাহায্য করবে।

পরামর্শক সংস্থা গ্লোবাল কাউন্সেলের প্রধান ইন্দোনেশিয়া বিশ্লেষক দেদি দিনার্টোর মতে, ইন্দোনেশীয় বুলেট ট্রেন মূলত ব্যবসায়িক ভ্রমণকারী এবং পর্যটকদের আকৃষ্ট করবে। তবে চীন-ইন্দোনেশিয়ার যৌথ অর্থায়নে নির্মিত এই প্রকল্প সরকারের জন্য লাভজনক হবে কি না তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।

বুলেট ট্রেনের টিকিটের দাম এখনো চূড়ান্ত করেনি ইন্দোনেশীয় কর্তৃপক্ষ। তবে পরিচালনা সংস্থার অনুমান, এক পথের যাত্রায় এর টিকিটের দাম আড়াই থেকে সাড়ে তিন লাখ রুপাইয়া (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৭০০ টাকা থেকে ২৪০০ টাকা প্রায়) হতে পারে।

এটি একই দূরত্বের বাসভাড়ার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। এই পথে বাসভাড়া মাত্র ৭৭ হাজার ৬৮৫ রুপাইয়া (৫৫৩ টাকা)। ভাড়ার বিশাল এই পার্থক্য সাধারণ যাত্রীদের বুলেট ট্রেনে চড়তে অনাগ্রহী করে তুলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বান্দুংয়ের বাসিন্দা অনিন্দ দেবায়ন্তী বলেন, এটি অনেক ব্যয়বহুল। বুলেট ট্রেনের পরিবর্তে আমি বরং সাধারণ ট্রেন বা বাসেই যেতে চাইবো।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাকা ২৩ বছর বয়সী অ্যামেলিয়া রহিমা অবশ্য প্রকল্পটি নিয়ে আশাবাদী। জাকার্তার এ বাসিন্দা বলেন, আশা করি অনেকেই এই ট্রেন ব্যবহার করবেন। অন্যথায় এত অর্থ ব্যয়ের পাশাপাশি এটি নির্মাণে যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছিল, সেগুলো বৃথা হয়ে যাবে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে