আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে দেশটির জাতিগত সংখ্যালঘু বিদ্রোহীদের তুমুল সংঘর্ষ চলছে। স্থানীয় বাসিন্দা, বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সংঘর্ষের পর থেকে হাজার হাজার মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকে পড়ছে। জাতিগত সংখ্যালঘু বিদ্রোহী গোষ্ঠী স্থানীয় সময় সোমবার মিয়ানমারে নিরাপত্তা পোস্টে হামলা চালায়। এর পরেই শুরু হয় সংঘর্ষ।
মিয়ানমারের সামরিক জান্তা ২০২১ সালের অভ্যুত্থানে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে সবচেয়ে বড় পরীক্ষার মুখোমুখি হয়েছে। তিনটি জাতিগত সংখ্যালঘু বাহিনী চলতি বছরের অক্টোবরের শেষের দিকে একটি সমন্বিত আক্রমণ শুরু করে।
তারা কিছু শহর এবং সামরিক পোস্ট দখল করে নেয়। দেশটির কয়েকটি রাজ্যে বিদ্রোহীদের সঙ্গে সামরিক বাহিনীর এ সংঘাতে হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের এই সংঘর্ষ আরো নতুন দুটি ফ্রন্টেও ছড়িয়ে পড়েছে। জান্তা সরকারের নিয়োগ দেওয়া মিয়ানমারের রাষ্ট্রপতি গত সপ্তাহেই বলেছিলেন, বিদ্রোহ দমনে মিয়ানমার অকার্যকর হলে দেশ কয়েক ভাগে ভাগ হয়ে যেতে পারে। জেনারেলরা বলছেন, তারা ‘সন্ত্রাসীদের’ বিরুদ্ধে লড়াই করছেন।
তিনটি সহযোগী বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে একটি আরাকান আর্মি (এএ), যারা পশ্চিম মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসনের জন্য লড়াই করছে।
তারা প্রায় ২০০ কিলোমিটার (১২৪ মাইল) দূরে রাথেদাউং এবং মিনবিয়া এলাকায় সামরিক পোস্টগুলো দখল করেছে। ‘এএ’-এর একজন মুখপাত্র খাইন থু খা বিষয়টি নিশ্চি করেছে।
তিনি আরো বলেন, আমরা কিছু পোস্ট দখল করেছি এবং আরো কিছু জায়গায় লড়াই অব্যাহত রয়েছে। রাথেদাউং-এর একজন বাসিন্দা বলেছেন, সোমবার ভোরের আগে গুলির শব্দ শোনা গিয়েছিল। এছাড়া কয়েক ঘণ্টা ধরে বোমাবর্ষণের শব্দও শোনা যায়।
সামরিক বাহিনী ওই এলাকায় প্রবেশপথ বন্ধ করে দিয়েছে এবং প্রশাসনিক ভবনগুলো ঘিরে রেখেছে।
ভারতের সীমান্তবর্তী চিন রাজ্যেও যুদ্ধ শুরু হয়েছে। সেখানে বিদ্রোহীরা দুটি সামরিক শিবিরে হামলা চালিয়েছে।
একজন ভারতীয় কর্মকর্তা এবং হামলার বিষয়ে জানা দুটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। মিয়ানমারের সীমান্ত এলাকার ডেপুটি কমিশনার জেমস লালরিনছনা বলেছেন, মায়ানমার থেকে প্রায় পাঁচ হাজার ভারতের মিজোরাম রাজ্যে প্রবেশ করেছে। চিন রাজ্যে বছরের পর বছর ধরে মূলত শান্তি বজায় ছিল।
কিন্তু ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পরে হাজার হাজার বাসিন্দা সামরিক প্রশাসনের বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নেয় এবং ভয়ঙ্কর লড়াই শুরু করে। মিয়ানমার জান্তার একজন মুখপাত্র তাৎক্ষণিকভাবে সর্বশেষ যুদ্ধের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। সূত্র: রয়টার্স