শনিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪, ১০:৩৮:৪৬

ইমরান খানের সঙ্গে ‘বেঈমানী করা’ সব হেরেছেন!

ইমরান খানের সঙ্গে ‘বেঈমানী করা’ সব হেরেছেন!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কারারুদ্ধ পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের অনুগত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এবারের নির্বাচনে বাজিমাত করেছেন। এমনকি রাজনৈতিক অঙ্গনে যাদের তেমন কোনো প্রভাব ছিল না— তারাও জাতীয় পরিষদে নির্বাচিত হয়েছেন। তবে যারা ইমরানের সঙ্গে ‘বেঈমানী’ করেছেন এবং দলত্যাগ করেছিলেন তাদের সবাই নির্বাচনে হেরে গেছেন।

২০২২ সালের এপ্রিলে বিরোধী দলগুলো এক জোট হয়ে ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করে। এরপর ইমরানের পিটিআইয়ের অনেক নেতা চাপে পড়ে দলত্যাগ করেন। অনেকে রাজনীতি ছেড়ে দেন। আবার অনেকে দল ত্যাগ করে গঠন করেন নতুন রাজনৈতিক দল।

ইমরানের দলত্যাগকারীদের পক্ষে কাজ করেছে সেনাবাহিনীসহ সরকারের শক্তিশালী শক্তি। কিন্তু তাও তারা পিটিআইয়ের ভোটারদের দ্বারা ‘অপদস্থ’ হয়েছেন।

২০২৩ সালের ৯ মে পাকিস্তানে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা দেয়। ওইদিন সেনাবাহিনীর অবকাঠামোসহ সরকারের বিভিন্ন স্থাপনায় অভূতপূর্ব হামলার ঘটনা ঘটে। 

এরপর ইমরান খান ও পিটিআইয়ের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছিল শেহবাজ শরীফের নেতৃত্বাধীন জোট সরকার। রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে পিটিআইকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল। 

দলটির শীর্ষ নেতাকর্মীদের কারাগারে বন্দি এবং দণ্ড দেওয়া হয়েছে। ওই সময় পিটিআইয়ের অনুগত থাকার বিষয়টি খুবই কঠিন হয়ে পড়েছিল।

যেসব বিখ্যাত রাজনৈতিক নেতারা ইমরানের দলত্যাগ করেছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন খাইবার পাখতুনখাওয়ার সাবেক মুখ্যমন্ত্রী পারভেজ খাটাক। তিনি ইমরানের পিটিআই ছেড়ে যোগ দিয়েছিলেন পিটিআই-পার্লামেন্টেরিয়ান্স (পিটিআই-পি) নামের একটি নতুন দলে।

অপরজন হলেন জাহাঙ্গীর তারিন— যিনি এক সময় ইমরানের খুবই কাছের লোক ছিলেন। তিনিও পিটিআই ছেড়ে যোগ দিয়েছিলেন ইস্তেকাম-ই-পাকিস্তান পার্টিতে (আইপিপি)। কিন্তু নির্বাচনে এ দুটি দলেরই ভরাডুবি হয়েছে।

নির্বাচনী প্রচারের সময় পারভেজ খাটাক বলেছিলেন তিনি আবারও খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী হবেন এবং পিটিআইয়ের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা তার সঙ্গে যোগ দেবে।

অপরদিকে জাহাঙ্গীর তারিন আরও বড় স্বপ্ন দেখেছিলেন। তিনি নওয়াজ শরীফের মুসলিম লীগ-এনের সঙ্গে আসন ভাগাভাগিও করেছিলেন এবং বলেছিলেন কেন্দ্র ও পাঞ্জাব প্রদেশে নওয়াজের সঙ্গে সরকার গঠন করবেন তিনি। কিন্তু তার দল জাতীয় পরিষদে দুটি আসনে জয় পেয়েছে। এ দুটি জয়ই এসেছে লাহোর থেকে। কিন্তু যে দুটি আসনে  জাহাঙ্গীর তারিনের দল জয় পেয়েছে সেগুলোতে ব্যাপক ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলেছে বিরোধী দলগুলো। এ আসনগুলোর ফলাফল চ্যালেঞ্জ করেছে পিটিআই।

আর সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো— খাটাক এবং তারিন দুজনই নির্বাচনে হেরে গেছেন! তারা তাদের নিজ আসন থেকেও জয় পাননি।

জাহাঙ্গীর তারিনের দল দুটি আসনে জয় (কারচুপির অভিযোগ রয়েছে) পেলেও; পারভেজ খাটাকের পিটিআই-পি একটি আসনও পায়নি। অর্থাৎ পিটিআই-পি নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।

পারভেজ খাটাকের দলের হয়ে নির্বাচন করেছিলেন তার দুই ছেলে ও মেয়ের জামাই। পিটিআইয়ের এক তরুণ কর্মীর কাছে তাদের শোচনীয় পরাজয় হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের ২৬৬ আসনের মধ্যে ২৬৫ আসনে নির্বাচন হয়।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল শুক্রবার রাত পর্যন্ত ২৪৫টি আসনের ফলাফল জানা গেছে। সেখানে দেখা গেছে, ৯৮টি আসনে জয়ী হয়েছেন ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) স্বতন্ত্র প্রার্থীরা, ৬৯টি আসন পেয়েছে নওয়াজ শরিফের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএলএন) এবং বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) পেয়েছে ৫১টি আসন। সূত্র: এক্সপ্রেস ট্রিবিউন

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে