আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দীর্ঘ ভ্রমণের ক্ষেত্রে সময় বাঁচাতে, বেশিরভাগ মানুষ ফ্লাইটে ভ্রমণ করতে পছন্দ করেন। কিন্তু অনেক দেশেই দ্রুতগতির ট্রেনের কারণে মানুষ স্বল্প সময়ে দীর্ঘ ভ্রমণের জন্য ফ্লাইটের উপর পুরোপুরি নির্ভরশীলও নয়।
আর এই নির্ভরের জায়গাটাই টার্গেট করেছে চিন। জাপানসহ বিশ্বের উন্নত দেশগুলোকে হারিয়ে ৬০০ কিমি/ঘন্টারও বেশি বেগে চালু করতে চায় দ্রুতগতির ম্যাগলেভ ট্রেন। প্রাথমিক পরীক্ষায় সসম্মানে উত্তীর্ণ হয়েছে এই ট্রেন।
১৯৪০ এর দশক থেকে ইউরোপ থেকে এশিয়া পর্যন্ত উচ্চ-গতির রেলপথে বিলিয়ন ডলার ঢেলে দেওয়া হয়েছে। গত দশক থেকে, চিন বিশ্বের ‘রেলওয়ে লিডার’ হিসাবে নিজের জায়গা করে নিয়েছে, ৩৮,০০০ কিলোমিটারের এমনই একটি রেল নেটওয়ার্ক স্থাপন করেছে যা দেশের প্রায় প্রতিটি কোণে ছড়িয়ে রয়েছে।
সম্প্রতি, চিনের নতুন করে আপডেট করা ম্যাগলেভ ট্রেনটির ট্রায়াল সম্পূর্ণ হয়েছে। এই বিষয়ে তথ্য দিতে গিয়ে চিনের অ্যারোস্পেস সায়েন্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি কর্পোরেশন (সিএএসআইসি) দাবি করেছে, ম্যাগলেভ ৬২৩ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায় (৩৮৭ মাইল প্রতি ঘন্টা) ২ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করেছে, যা আগের গতিবেগের তুলনায় প্রায় ২৩ কিলোমিটার বেশি। সাউথ চিনা মর্নিং পোস্টের মতে, চিন হয়ত খুব শীঘ্রই প্লেনের মতো দ্রুতগতিতে ট্রেন চালাতে সক্ষম হবে।
উত্তর চিনের শানসি প্রদেশের ডাটং শহরে এই সুপারকন্ডাক্টিং ম্যাগলেভ টেস্টিং লাইন তৈরি করা হয়েছে। এই লাইনেই চলছে বিশ্বের দ্রুততম ট্রেনের ট্রায়াল। এই দুই কিলোমিটার দীর্ঘ টেস্টিং লাইনের চূড়ান্ত পরীক্ষায়, অতি-উচ্চ গতির চৌম্বকীয় লেভিটেশন (ম্যাগলেভ) ট্রেনটি ঘণ্টায় ৬২৩ কিলোমিটার বেগে ছুটেছিল বলেই জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ম্যাগলেভ অর্থাৎ ম্যাগনেটিক লেভিটেশন মানে এই ট্রেনটি প্রথাগত ইস্পাতের চাকার পরিবর্তে ম্যাগনেটিক লেভিটেশন ব্যবহার করে। এটি উচ্চ তাপমাত্রার সুপারকন্ডাক্টিং (HTS) শক্তিতে চলে, এটিকে চৌম্বকীয় ট্র্যাকের উপর ভাসমান অবস্থায় দেখায়। প্রচলিত ট্রেনের বিপরীতে, ম্যাগলেভ রেলের চাকা রেল ট্র্যাকের সংস্পর্শে আসে না।
CASIC বলেছে যে সর্বশেষ ট্রায়ালটি কেবল সিস্টেমের জন্যই নয়, বরং বেশ কয়েকটি মূল প্রযুক্তিগত দিককেও হাইলাইট করেছে। হাই-স্পিড ফ্লায়ার প্রকল্পটি মহাকাশ এবং স্থলপথের রেল পরিবহন প্রযুক্তিকে আরও উন্নত করবে। ৬২৩ কিলোমিটারের জায়গায় ১,০০০ কিমি/ঘন্টা ছুটবে চৌম্বকীয় শক্তিসম্পন্ন ম্যাগলেভ। CASIC এই বিষয়টি নিজে এতটাই আত্মবিশ্বাসী কারণ, টিউবে ভ্যাকুয়াম ছাড়াই যদি ম্যাগলেভ ট্রেনটি এত গতি তুলতে পারে, তাহলে ভ্যাকুয়াম লাগিয়ে দেওয়া হলে এই ট্রেনের জন্য ১০০০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় গতি তোলা খুব একটা কঠিন কাজ হবে না।