আন্তর্জাতিক ডেস্ক : একটি অভিযোগে চার বছর ধরে সুইজারল্যান্ডের জুরিখে একটি জেলে বন্দি ছিলেন সিরিয়ার শরণার্থী হাসান কিকো (২৭)। সেই জেলে বসেই প্রেমের ফাঁদ পাতেন তিনি। সুদর্শন পুরুষটির প্রেমে পড়ে হাবুডুবু খাচ্ছিলেন ওই জেলেরই ৩২ বছর বয়সী এক নারী প্রহরী।
সেই প্রেমের সূত্র ধরে সোমবার রাতে জেল থেকে পালায় তারা। সেই প্রেমিক যুগল এখন কোথায় আছে তার হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। হন্যে হয়ে খুঁজছে সুইজারল্যান্ডের পুলিশ। পুলিশের ধারণা, জেল থেকে পালানোর পর এই প্রেমিক যুগল সুইজারল্যান্ডেই কোথাও আত্মগোপন করে আছে।
২০১১ সালে সুইজারল্যান্ডের একটি পত্রিকাকে হাসান কিকো বলেছিলেন, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ শাসকগোষ্ঠীর হাতে তিনি তিন মাস জেল খেটেছেন। এরপর সিরিয়া থেকে পালিয়ে আশ্রয় নেন সুইজারল্যান্ডে।
এদিকে তার প্রেমে মজেন সুইস নারী। তার নাম প্রকাশ না করলেও ছবি প্রকাশ করেছে পুলিশ। তবে স্থানীয় মিডিয়া ওই নারীর নাম প্রকাশ করে দিয়েছে।
সে অনুযায়ী তার নাম অ্যাঙ্গেলা ম্যাগডিসি। তার স্বামী ভাসিলি ম্যাগডিসি (২৫) সুইস মিডিয়ায় সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, অ্যাঙ্গেলার সঙ্গে তিন মাস আগে তারা আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত নেন। কারণ, তখন তিনি বুঝতে পেরেছিলেন তার জীবনে নতুন কেউ এসেছে।
তিনি এরপরও আশা করছিলেন, আবার তারা একসঙ্গে সংসার করতে পারবেন। কারণ, এখনো তারা বিবাহিত। বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটেনি। তিনি বলেন, এখনো মানুষ আমাকে প্রশ্ন করে, আমরা একসঙ্গে থাকি না কেন। আমাদের সম্পর্কে কি এমন ঘটেছে।
কিন্তু মঙ্গলবার যখন হাসানের সঙ্গে তার পালিয়ে যাওয়ার খবর প্রকাশিত হয় মিডিয়ায় তখন আমার বুক কষ্টে ভেঙে যেতে থাকে। তিনি বলেন, অ্যাঙ্গেলার সঙ্গে এক থাই বক্সিং ইভেন্টে তার পরিচয় হয়। এরপর ২০১৪ সালে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
ভাসিলি বলেন, আমি তাকে ভীষণ ভালোবাসতাম। আমরা সন্তান নিতে চাচ্ছিলাম। কিন্তু তিন মাস আগে সে-ই আমাকে আলাদা থাকার কথা বলে। এই বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় সে। পাঁচ মাস আগে বুঝতে পারি অ্যাঙ্গেলা পাল্টে গেছে।
তার জীবনে নতুন পুরুষ এসেছে। তবে সেই পুরুষ সম্পর্কে আমার কোনো ধারণাই ছিল না। একপর্যায়ে তার মোবাইল ফোনে আরবিতে এসএমএস আসে। তার বেস্ট ফ্রেন্ডকে তা অনুবাদ করে দিতে বলে। ভাসিলির বিশ্বাস, ওই এসএমএস গিয়েছিল হাসান কিকোর কাছ থেকে।
ভাসিলি বলেন, আমাদের আলাদা হয়ে যাওয়ার এক সপ্তাহ আগে অ্যাঙ্গেলা মুসলিমদের বিভিন্ন ধর্মীয় পুস্তক পড়াশোনা করছিল। সেন্ট্রাল ইউরোপিয়ান নিউজকে তিনি বলেন, তার বাড়ি রোমানিয়া। তিনি অর্থডক্স খ্রিস্টান।
অন্যদিকে অ্যাঙ্গেলা একজন ক্যাথলিক। কিন্তু কেন অ্যাঙ্গেলা মুসলিম হয়ে উঠছে তা তিনি বুঝতে পারেননি। একদিন ডেলসডর্ফের ফ্লাট থেকে সে উধাও হয়ে যায়।
আমি ভেবেছিলাম, হয়তো তার বেস্ট ফ্রেন্ডয়ের বাসায় গেছে। কিন্তু আসল কথা হলো, হাসান কিকোর সঙ্গে সে আসলে পালিয়েছে। সে ব্যবহার করেছে বিএমডব্লিউ এক্স-১ গাড়ি। গাড়িটি আমরা দু’জনে একসঙ্গে কিনেছিলাম। সেই গাড়িতেই পালাল সে।
১১ ফেব্রুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম