আন্তর্জাতিক ডেস্ক : শত্রুর ঘুম হারাম করেদিতে সমুদ্রের বুকে নামানো হচ্ছে স্মৃতির উত্তরাধিকার। অত্যাধুনিক জলযানে থাকছে অভিনব বেশ কিছু বৈশিষ্ট, যা এ পর্যন্ত কোনো রণতরীতে দেখা যায়নি।
একেই কি বলে ইতিহাসের পুনরুত্থান? ১৯০৬ সালে নৌযুদ্ধে সাড়া ফেলে দিয়েছিল ব্রিটিশ রয়্যাল নেভির রণপোত এইচএমএস ড্রেডনট। বাস্পচালিত এই জাহাজে ছিল ১২ ইঞ্চি ব্যালযুক্ত কামান এবং কংক্রিটের 'আর্মার', যা সেই যুগের জলযুদ্ধে নয়া নজির গড়েছিল। এবার সেই সাফল্যের স্মৃতি উস্কে দিয়ে ব্রিটিশ ন্যাভাল ইঞ্জিনিয়াররা সৃষ্টি করেছেন অত্যাধুনিক প্রযুক্তিরস যুদ্ধজাহাজ 'ড্রেডনট ২০৫০'।
মাত্র ৫০ জন নাবিকের সাহায্যেই এই রণতরী চালানো সম্ভব বলে জানিয়েছে বিএমটি ডিফেন্স সার্ভিসেস-এর কমব্যাট সিস্টেমস টিম। যে কোনো ধরণের নৌ-অভিযানের জন্যই কাজে লাগানো যাবে 'ড্রেডনট ২০৫০'-কে। জাহাজ নিয়ন্ত্রণ করবে রোবোটিক্স প্রযুক্তি। দেখে নেয়া যাক কি কি ফিচার রয়েছে এই জাহাজে।
১) মুন পুল : জাহাজের পিছনের অংশের ফ্লাডেবল ডক এলাকা। এখান থেকে দূর নিয়ন্ত্রিত আন্ডারওয়াটার রোভার বা রয়্যাল মেরিন ডাইভাররা অভিযান শুরু করতে পারবে।
২) ড্রোন লঞ্চার : দূর নিশানায় আঘাত হানতে এই ফ্লাইট ডেক থেকে রওনা দেবে রিমোট কন্ট্রোলড ড্রোন। জাহাজের থ্রি-ডি প্রিন্টারেই তৈরি হবে ড্রোন বাহিনী। তাদের রাখার জন্য থাকছে হ্যাঙ্গার।
৩) কোয়াডকপ্টার : জাহাজের সঙ্গে যুক্ত ড্রোন-সদৃশ এই উড়ন্ত চার প্রপেলারের যান ৩৬০ ডিগ্রি নজরদারি চালাতে সক্ষম। শত্রু জাহাজ তেকে বের হওয়া ধোঁয়ার গতিবিধি গণনা করে তার সঠিক দিক নির্দেশ করবে কোয়াডকপ্টার। এতে থাকবে লেজার রশ্মি প্রযুক্তি, যার সাহায্যে বিপক্ষের ক্ষেপণাস্ত্র চিহ্নিত করা যাবে।
৪) অভিনব দৃশ্যমানতা : 'ড্রেডনট ২০৫০'-এর কাঠামো তৈরি হয়েছে বজ্র-কঠিন গ্র্যাফেন-এর পোঁচ দেয়া অ্যাক্রিলিক বোর্ড দিয়ে। বিদ্যুতরঙ্গের হেরফেরে তৈরি করা যাবে প্রায় স্বচ্ছ জানলার সারি, যা নিকটতম নিশানা বাছাইয়ের পক্ষে সুবিধাজনক। এছাড়া থাকছে টর্পেডো ছাড়ার অতিরিক্ত ২টি টিউব।
৫) জাহাজ চালনা : ব্রিটিশ রয়্যাল নেভি-র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই যুদ্ধজাহাজ চালাবে ফিউশন রিঅ্যাক্টর যার সাহায্যে নিঃশব্দে মসৃণ গতির ঝড় তোলা সম্ভব হবে। শুধু তাই নয়, ড্রেডনট ২০৫০-এ জলের নীচে ক্ষেপণাস্ত্র ছাড়ার জন্য থাকছে বিশেষ প্রযুক্তি যা শত্রুপক্ষের রাডারে বা ইনফ্রা রেড রশ্মিতে ধরা পড়বে না।
৬) হলো-অপ রুম : জাহাজের কন্ট্রোল রুমে থাকছে হলোগ্রাফিক কম্যান্ড টেবিল, যেখানে বসে দূর থেকেই সমুদ্রে, গভীর জলের নীচে, ডাঙায় অথবা আকাশের যুদ্ধে নজর রাখা যাবে। যে কোনো কোণ থেকে যুদ্ধক্ষেত্রের তৃমাত্রিক ছবি ফুটে উঠবে কন্ট্রোল রুমের পর্দায়।
৭) ফায়ারপাওয়ার ট্রিফেকটা : জাহাজে থাকছে হাইপারসোনিক মিসাইল, আঘাত হানার আগেই যার সাহায্যে শত্রুদের ধ্বংস করা যাবে। এছাড়া থাকছে সুপার-ক্যাভিটেটিং টর্পেডো, রকেটের সাহায্যে যা জলের ওপর কোনো বুদবুদ সৃষ্টি না করেই অতি দ্রুত গতিতে নিশানায় আছড়ে পড়বে। শুধু তাই নয়, থাকছে ইলেকট্রো ম্যাগনেটিক রেলগান, যা কয়েকশো মাইল দূরের নিশানায় সহজেই বিঁধতে পারবে।-টাইমস অফ ইন্ডিয়া
১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই