আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সিরায়ায় প্রায় দীর্ঘদিন ধরেই চলছে গৃহযুদ্ধ। এই যুদ্ধ চলছে দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ বাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে। প্রায় পাঁচ বছর ধরে চলা এই গৃহযুদ্ধে এ পর্যন্ত প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। এছাড়াও এই যুদ্ধে দেশটির ৪৫ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
সিরিয়া যুদ্ধে প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি বিষয়ে গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘সিরিয়ান সেন্টার ফর পলিসি রিসার্চের (এসসিপিআর)’ একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। এ খবর প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।
ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ্য করা হয়, যুদ্ধের বিভীষিকায় পড়ে সিরিয়ার জাতীয় সম্পদ ও অবকাঠামো প্রায় পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। নিহত হয়েছে ৪ লাখ ৭০ হাজার লোক। দেড় বছর আগে পর্যন্ত সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে এ ব্যাপারে জাতিসংঘ যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছিল এটি তার প্রায় দ্বিগুণ। জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুযায়ী এ সংখ্যা আড়াই লাখ।
সিরিয়ার জনগণের সাড়ে ১১ শতাংশই নিহত বা আহত হয়েছে। ‘আরব বসন্ত’ নামে পরিচিত স্বৈরাচারবিরোধী তথাকথিত গণ-অভ্যুত্থানের জোয়ার সিরিয়াতেও এসে লাগে ২০১১ সালে। ওই বছরের মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় পাঁচ বছরে এই জোয়ারের সুফল না মিললেও এই সময়ে হতাহত হয়েছে বিরাটসংখ্যক জনগোষ্ঠী।
প্রতিবেদনে ১৯ লাখ আহত ব্যক্তির সংখ্যা বলা হয়েছে। যুদ্ধ শুরুর আগে ২০১০ সালে সিরিয়ার মানুষের গড় আয়ু যেখানে ছিল ৭০ বছর, সেটাই ২০১৫ সালে নেমে দাঁড়ায় ৫৫ বছর ৪ মাসে। দেশটির অর্থনীতির সার্বিক ক্ষতির পরিমাণও নিতান্ত কম নয়, আনুমানিক ২৫ হাজার ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার।
এসসিপিআরের মতে, মোট নিহতের ৪ লাথ ৭০ হাজারের মধ্যে যুদ্ধের প্রত্যক্ষ সহিংসতার শিকার হয়ে প্রায় ৪ লাখ লোকই মারা গেছে। বাকি লোক মারা গেছে চিকিৎসাসেবা ও ওষুধের ঘাটতিতে, সংক্রামক ব্যাধিতে, খাবার ও পানির অভাবে। পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা ও নিরাপদ থাকার স্থানের অভাবও মৃত্যুর অন্যতম কারণ।
প্রতিবেদনের মূল রচয়িতা রাবি নাসের গার্ডিয়ানকে বলেছেন, ‘যথাযথ পদ্ধতি অবলম্বন করে এই গবেষণা প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। তাই নিহত বা আহত ব্যক্তিদের সংখ্যার ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত। ভবিষ্যতে পরোক্ষভাবে মৃত্যুর হার আরও বাড়বে।’
১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন