আন্তর্জাতিক ডেস্ক: উচ্চশিক্ষায় অস্ট্রেলিয়া গমনেচ্ছুদের জন্য দুঃসংবাদ। আগামী শুক্রবার (১০ মে) থেকে স্টুডেন্ট ভিসার নিয়ম আরও কঠোর করছে অস্ট্রেলিয়া। রেকর্ড অভিবাসী আগমনের কারণে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার।
বুধবার (৮ মে) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন সঞ্চয়ের পরিমাণ আরও বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। আগামী শুক্রবার (১০ মে) থেকে নতুন এই নিয়ম কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি।
অস্ট্রেলিয়ার ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে আন্তজার্তিক শিক্ষার্থীদের এবার থেকে কমপক্ষে ২৯ হাজার ৭১০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার (১৯ হাজার ৫৭৬ মার্কিন ডলার) সঞ্চয়ের প্রমাণ দেখাতে হবে। গত ৭ মাসের মধ্যে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার শিক্ষার্থীদের ব্যাংক সঞ্চয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি করলো দেশটি।এর আগে গত বছরের অক্টোবরে এই সঞ্চয়ের পরিমাণ ২১ হাজার ৪১ অস্ট্রেলিয়ান ডলার থেকে বাড়িয়ে ২৪ হাজার ৫০৫ ডলার করা হয়েছিল।
স্টুডেন্ট ভিসায় নতুন এই নিয়ম ঘোষণার পাশাপাশি অবৈধ পন্থায় শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়ে দেশটির বেশ কিছু কলেজকে সতর্ক করা হয়েছে। ২০২২ সালে করোনা মহামারির বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার পর অনেক শিক্ষার্থী অস্ট্রেলিয়ায় চলে যায়।
এতে দেশটিতে বাসা ভাড়া অনেক বেড়ে যাওয়ার ঘটনায় সরকারের ওপর চাপ তৈরি হয়েছে। তাই অভিবাসী নীতি কঠোর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। এ লক্ষ্যে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে স্টুডেন্ট ভিসার নিয়ম কঠোর করার জন্য বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নেয় অস্ট্রেলিয়া।
চলতি বছরের মার্চ মাসে অস্ট্রেলিয়া নতুন এক ঘোষণায় জানায়, স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে এবার থেকে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ইংরেজি পরীক্ষায় আরও বেশি রেটিং পেতে হবে। এছাড়া দেশটিতে থাকা কোনো আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করলে সেটি আরও বেশি যাচাই-বাছাই করা হবে।
অস্ট্রেলিয়া আশা করছে, নতুন এই ভিসা নীতি আগামী দুই বছরে দেশটির অভিবাসী গ্রহণের পরিমাণ অর্ধেক করতে পারবে।
দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্লেয়ার ও’নিল সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমাদের এই কৌশল অভিবাসীদের সংখ্যাকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনবে।'
‘অভিবাসী ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে’ উল্লেখ করে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজ চলতি বছরের শুরুতে বলেছিলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসী সংখ্যাকে একটি সহনীয় পর্যায়ে ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্লেয়ার ও’নিল সংবাদ সম্মেলনে জানান, এ লক্ষ্যে সরকারের সংস্কার উদ্যোগগুলো ইতোমধ্যে মোট অভিবাসী সংখ্যা নিম্নমুখী করছে এবং অভিবাসী সংখ্যা প্রত্যাশিত মাত্রায় কমাতে আরও অবদান রাখবে।
সিডনি মর্নিং হেরাল্ড সংবাদপত্রের জন্য করা একটি সমীক্ষা প্রতিবেদন বলছে, অস্ট্রেলিয়ান ভোটারদের ৬২ শতাংশই মনে করেন যে দেশটি অনেক বেশি পরিমাণে অভিবাসী নিয়ে ফেলেছে।