আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ৭শ বাংলাদেশি প্রাবসী কর্মীদের বেতন না দেওয়া এবং নির্যাতনকারী সেই মালয়েশিয়ান কোম্পানি এবার বিচারের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে।
চাকরিচ্যুত করার পর ওই বাংলাদেশি কর্মীদের ক্ষতিপূরণ দিতে ব্যর্থ হওয়া এবং শ্রমআইন লংঘন করার দায়ে দেশটির ডেপুটি পাবলিক প্রসিকিউটর ওই কোম্পানি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
মালয়েশিয়ান লেবার ডিপার্টমেন্টের সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম মালয় মেইল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, অভিযোগকারীদের আনিত অভিযোগের ভিত্তিতে ১০টি ফাইল খোলা হয়েছিল যার মধ্য থেকে ৬টি ফাইলের ব্যাপারে অগ্রগতী জানতে চেয়েছেন দেশটির ডেপুটি পাবলিক প্রসিকিউট।
ডিরেক্টর-জেনারেলের নির্দেশনা মোতাবেক যে তারিখ থেকে কর্মীরা কাজ শুরু করার কথা ছিল সেই তারিখ থেকে বেতন দিতে হবে; এই নির্দেশনা মোতাবেক যারা বেতন পাননি বর্তমানে সেই সব অভিযোগকারীদের জবানবন্দি রেকর্ড করার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
কিছু মালয়েশিয়ান কোম্পানি বাংলাদেশি প্রাবসী কর্মীদের বেতন দিতে ব্যর্থ হলে এই বছরের শুরুতে ৭৩০ জনেরও বেশি বাংলাদেশি কর্মী দশটি দলে ভাগ হয়ে দেশটির ডিপার্টমেন্ট অব লেবারে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে নিয়োগদানকারী কোম্পানিকে বেতনের বিষয়টি সুরহার নির্দেশ দেয় সংশ্লিষ্ট দপ্তর। সেই নির্দেশনা মোতাবেক প্রায় ১ মিলিয়ন রিঙ্গিত বাংলাদেশি কর্মীরা পাওয়ার কথা ছিল কিন্তু এই পর্যন্ত কোনো টাকাই পরিশোধ করেনি মালিক পক্ষ।
ডিরেক্টর-জেনারেল অফিসে এই কেইসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র মালয় মেইলকে জানিয়েছে, যে প্রক্রিয়ায় বিষয় গুলো এগুচ্ছে তাতে এটা নিশ্চিত এই কম্পানিগুলো শাস্তির মুখোমুখি হতে যাচ্ছে। এই ব্যপারে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম গুলো যোগাযোগ করলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয় কোম্পানি কর্তৃপক্ষ।
দেশটি মানবসম্পদ মন্ত্রী স্টিভেন সিম গত ফেব্রুয়ারিতে ৭৩৩ বাংলাদেশি কর্মী এবং নিয়োগকারী ফার্মের মধ্যে মধ্যস্থতার নির্দেশকে একটি ‘উল্লেখযোগ্য’ কেইস হিসেবে বর্ণনা করে বিদেশি কর্মী নিয়োগ ব্যবস্থা থেকে লাভবান শিল্পগুলোকে একটি শক্তিশালী বার্তা দেবে বলে আশা করেছিলেন। সেই সময় তিনি বলেছিলেন, যে নিয়োগকর্তারা দোষী সাব্যস্ত হবেন তাদের কালো তালিকাভুক্ত করা হবে এবং বিদেশি শ্রমিক নিয়োগে তাদের কোটা বাতিল করা হবে।
অভিবাসী অধিকার কর্মীরা এই বিবৃতির সমালোচনা করে বলেছিলেন, মধ্যস্থতার এই নির্দেশ বিদেশি কর্মী নিয়োগের নামে মানব পাচারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় শক্তিশালী পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে যথেষ্ট নয়।
মানব পাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দুর্বল প্রচেষ্টার জন্য পুত্রজায়া বরাবরই সমালোচিত হয়ে আসছে। ‘জোরপূর্বক শ্রম থেকে তৈরি করা হয়’ এমন অভিযোগে বর্তমানে বেশ কয়েকটি মালয়েশিয়ান কোম্পানি পশ্চিমা রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হয়েছে।