আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন ইন্টারনেটের একটি ভার্চুয়াল) ‘টানেল’। এই ভার্চুয়াল কাল্পনিক সুড়ঙ্গের মাধ্যমে একটি ভিন্ন অঞ্চলে অবস্থিত প্রাইভেট নেটওয়ার্কের সঙ্গে ডিভাইসকে সংযুক্ত করা সম্ভব।
এতে কোন পাবলিক নেটওয়ার্কের আওতাধীন থেকেও ইন্টারনেট ব্যবহারকালীন কোন প্রাইভেট নেটওয়ার্ক ব্যবহারের সকল সুবিধা পাওয়া সম্ভব। ব্যবহারকারীর প্রাইভেসি সুরক্ষা, নিরাপত্তা বৃদ্ধি ও কনটেন্টে প্রবেশের ক্ষেত্রে ভিপিএন-এ অনেক সুবিধা মেলে। তবে এসব সুবিধার পাশাপাশি রয়েছে কিছু ঝুঁকি। এই প্রতিবেদনে সেই সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
সাইবার নিরাপত্তা: ভিপিএন-এর প্রাথমিক কথাই হচ্ছে ব্যবহারকারীর পরিচয় গোপন রাখা। ফলে, কোনো কারণে ব্যবহারকারীর ক্রেডেনশিয়াল বা পরিচয় শনাক্তকরণ তথ্যাদি, ধরা যাক ইউজারনেইম ও পাসওয়ার্ড অন্য কেউ পেয়ে গেলে সেগুলোর অপব্যবহার করে তৃতীয় কেউ তার অ্যাকাউন্ট হাতিয়ে নিতে পারে। সহজ ভাষায়, হ্যাকারের হাতে ভিপিএন ব্যবহারকারীর তথ্য চলে গেলে হ্যাকিং অনেক সহজ হয়ে যায়।
ইন্টারনেটের গতি: ভিপিএন ব্যবহারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে সাধারণ অসুবিধা হল ইন্টারনেট সংযোগের গতি কমে যাওয়া। যেহেতু ভিপিএন বিভিন্ন দুর্গম সার্ভারের মধ্য দিয়ে ডেটা পাঠায় ও ডেটা ট্রান্সমিশন এনক্রিপ্ট করে, সেহেতু ব্রাউজিংয়ের সময় কম গতি ও বিলম্বের মতো অভিজ্ঞতার মুখে পড়তে পারেন ব্যবহারকারী। বিশেষ করে এমন সার্ভারের বেলায়, যেগুলোর অবস্থান ব্যবহারকারীর অবস্থান থেকে অনেক দূরে।
ব্যায়: অনেক ভিপিএন গ্রাহক সেবা বিনামূল্যে বা কম খরচে ব্যবহার করা গেলেও প্রিমিয়াম শ্রেণির ভিপিএন সেবাগুলোয় বিভিন্ন উন্নত ফিচার ও উচ্চ গতির সার্ভার ব্যবহারের সুবিধা মেলে। তবে, এক্ষেত্রে পয়সা গুনতে হয়। বাজেট নিয়ে শঙ্কিত ব্যবহারকারীর কাছে পয়সা খরচ করে গ্রাহক সেবা কিনে সুবিধা নেওয়ার বিষয়টি বিলাসিতা মনে হতে পারে, বিশেষ করে তাদের যদি প্রাইভেসি বা ভৌগলিক অবস্থানের ভিত্তিতে কনটেন্ট আনব্লক করার তেমন প্রয়োজনীয়তা না থাকে।
কারিগরি চ্যালেঞ্জ ও জটিলতা: একটি ভিপিএন সেটআপ বা কনফিগার করা অনভিজ্ঞ ব্যবহারকারীর কাছে ভীতিকর হতে পারে, বিশেষ করে এনক্রিপশন প্রোটোকল, সার্ভার বাছাই ও ‘টানেলিং’ আলাদা করার মতো বিভিন্ন উন্নত ফিচার ব্যবহারের ক্ষেত্রে। এ ছাড়া, ইন্টারনেট সংযোগে ‘ট্রাবলসশুটিং’, ‘ডিএনএস’ বা ‘ডোমেইন নেইম সিস্টেম’ ফাঁস বা নির্দিষ্ট কিছু অ্যাপ্লিকেশন অথবা ডিভাইস সেটআপের বেলায় কারিগরি বিশেষজ্ঞের প্রয়োজনীয়তা, এমন বিষয়গুলো চ্যালেঞ্জিং হতে পারে তুলনামূলক কম প্রযুক্তিজ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তিদের কাছে।
তথ্য নিরাপত্তায় সেবাদাতার ওপর নির্ভরতা: বিভিন্ন ভিপিএন সেবায় সত্যিকারের প্রাইভেসি ও নিরাপত্তা সুবিধার কথা উল্লেখ থাকলেও কিছু ক্ষেত্রে এগুলো অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহার হওয়ার ঝুঁকি থাকে। বর্তমানে হাজার হাজার ভিপিএন সফটওয়্যার ও অ্যাপ পাওয়া যায়। ব্যবহারকারীর ডেটা যেহেতু ভিপিএন সেবাদাতার হাত দিয়ে যায়, তাই সেবাদাতার সততার ওপর নির্ভর করে ব্যবহারকারীর তথ্য নিরাপত্তা।