আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দেশপ্রেম বিতর্ক নিয়ে এখন ভারতের রাজনীতিতে তোলপাড় চলছে । এই বিতর্কের মূলে রয়েছেন ক্ষমতাসীন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ এবং বিরোধী দল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি রাহুল গান্ধী। এই বিতর্কের শুরুটা দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) ঘটনা নিয়ে।
বিজেপি সভাপতি আজ নিজের ব্লগে অভিযোগ করেন, বাক্ স্বাধীনতার কথা বলে রাহুল ‘ভারত ভাগের উদ্দেশ্যে দেশদ্রোহীদের মদত দিচ্ছেন’। এর প্রেক্ষিতে কংগ্রেস সহ-সভাপতিও পাল্টা জানিয়েছেন, দেশপ্রেম তাঁর রক্তে। বিজেপি এবং ‘রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ’ই (আরএসএস) ভারতের বৈচিত্র্যের ঐতিহ্যে বিশ্বাস করে না। তাদের কাছ থেকে তিনি দেশপ্রেমের শিক্ষা নেবেন না।
রাহুলের উদ্দেশে একগুচ্ছ প্রশ্ন ছুড়ে অমিত আজ লিখেছেন, ‘দেশের প্রথমসারির একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে দেশদ্রোহীদের আখড়া বানানোর চেষ্টা চলছে। রাহুলকে আমার প্রশ্ন, যাঁরা এটা করছেন, তাঁদের সমর্থনে প্রতিবাদে নেমে আপনি কি দেশবিরোধী কাজ করছেন না? বাক্ স্বাধীনতার নামে আফজল গুরুর গুণমুগ্ধদের সমর্থন করে আপনি কি ফের দেশ ভাগ করতে চান? রাহুল, এ আপনার কী ধরনের দেশপ্রেম’!
পরে এক সাংবাদিক সম্মেলনেও কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী ও তার ছেলে রাহুলকে বিঁধেছেন অমিত। তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্ট আফজলকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। আর তার নামে যাঁরা জয়ধ্বনি দিলেন, কংগ্রেস তাঁদেরই সমর্থন করছে। রাষ্ট্রদ্রোহিতার এর চেয়ে বড় প্রমাণ আর কী হতে পারে? দেশদ্রোহিতা সমর্থনযোগ্য নয় বলে যদি ওঁরা দু’জন (সনিয়া-রাহুল) মনে করেন, তবে তাঁরা ক্ষমা চান।
এরপর জেএনইউ ক্যাম্পাসে গিয়ে রাহুলের সমালোচনা করেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেত্রী সাধ্বী প্রাচীও।
অন্যদিকে, অসমের শোণিতপুর এবং তিতাবরে দু’টি দলীয় সভায় রাহুল গান্ধী বলেন, জেএনইউয়ের সংসদ সভাপতি (কানহাইয়া কুমার) গরিব, বঞ্চিত মানুষদের সম্পর্কে বক্তৃতা করেছিলেন। আর বিজেপি-আরএসএস বলছে তিনি নাকি দেশদ্রোহী! আসলে ওরা দেশে হিংসা ছড়াতে চায়। নিজেদের মতাদর্শ অন্যের উপরে চাপিয়ে দিতে চায়। যাঁরা তা মানেন না, তাঁদেরই দেশবিরোধী তকমা দেওয়া হয়। যেন ওরাই ঠিক করে দেবে কে দেশপ্রেমী আর কে নন!
তিতাবরে আরএসএসে’র ছাত্র শাখা এবিভিপি’র একদল সমর্থক বিক্ষোভ দেখানোর উদ্দেশ্যে রাহুলের সভামঞ্চে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের আটকে দেয়।
বিজেপি সভাপতিকে জবাব দিতে নয়াদিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলন করেন কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালাও। সেখানে সুরজেওয়ালা আফজল গুরুকে একবার ‘গুরুজি’ বলেও সম্বোধন করেন। যদিও পরে তিনি জানান, মুখ ফস্কে ওই কথা বলে ফেলেছেন।
এদিকে জেএনইউয়ে প্রতিবাদী পড়ুয়াদের সমাবেশে আজ গিয়েছিলেন সিপিএম নেতা প্রকাশ কারাট।
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএস