আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। উচ্চতা মাত্র তিন ফুট৷ হাঁটাচলা করা তো দূর থাক, বসাও সম্ভব হয় না৷ কিন্তু কোনোরকম প্রতিবন্ধকতাই তাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি৷ পারেনি শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত করতে।
সব প্রতিকূলতা জয় করে মাধ্যমিকের মতো এবারো ভালো ফল করার অঙ্গীকার নিয়ে উচচমাধ্যমিকে বসল নদিয়ার শান্তিপুরের বাসিন্দা এক ছাত্রী৷
পিয়াসা মহালদার নামে ওই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী রাধারানি নারীশিক্ষা মন্দিরের ছাত্রী৷
বাবা পুলিশে চাকরি করেন৷ উচ্চমাধ্যমিকে কলা বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করেছে পিয়াসা৷ সোমবার থেকেই শুরু হয়েছে চলতি শিক্ষাবর্ষের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা৷ এদিন ছিল প্রথম ভাষার পরীক্ষা৷ ওরিয়েন্টাল অ্যাকাডেমি স্কুলে সিট পড়েছে তার৷
ছোট থেকেই হাঁটতে পারে না পিয়াসা৷ উচ্চতা মাত্র তিন ফুট৷ হাঁটাচলা থেকে শুরু করে বসে থাকা সবেতেই অপারগ সে৷ কিন্তু তা সত্ত্বেও হার মানেনি পিয়াসা৷ শুয়ে শুয়েই পড়াশোনা করেছে৷ শুয়েই সব পরীক্ষায় বসেছে সে। পরীক্ষা হলে কোনোমতে শুয়ে ছোট ছোট দু'হাত জড়ো করে পেন ধরে লেখে সে৷ মাধ্যমিকের মতোই উচ্চমাধ্যমিকেও এবার কোনো রাইটারের সাহায্য ছাড়াই বসেছে পিয়াসা৷
রাধারানি নারীশিক্ষা মন্দিরের প্রধান শিক্ষিকা ঝুমা সেন বলেন, পিয়াসা পঞ্চম শ্রেণি থেকে এই স্কুলে পড়ছে৷ বরাবরের মেধাবী ওই ছাত্রীর কাছে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কোনো বাধাই নয়৷ মাধ্যমিকেও চারটি বিষয়ে লেটার নিয়ে পাস করেছিল পিয়াসা৷ ভবিষ্যতে কম্পিউটার নিয়ে পড়তে চায় সে৷
মাধ্যমিকের মতো উচ্চমাধ্যমিকেও পিয়াসা খুব ভালো ফল করবে বলে আমরা আশাবাদী৷ ওরিয়েন্টাল অ্যাকাডেমি স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুনীলকুমার দে জানান, এতটা শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও লেখার গতিতে যে কোনো সুস্থ পরীক্ষার্থীকে চ্যালেঞ্জ দিতে পারে ছাত্রীটি৷ হাতের লেখাও খুব সুন্দর৷ পরীক্ষা দেয়ার জন্য তাকে স্কুলের তরফে আলাদা ঘরের ব্যবস্থা করে দেয়া হয়৷
যাতে সে সেখানে বেঞ্চের ওপর শুয়ে পরীক্ষা দিতে পারে৷ পরীক্ষা দেয়ার পর পিয়াসা জানায়, তার পরীক্ষা খুবই ভালো হয়েছে৷ কোনোরকম অসুবিধা হয়নি৷ স্কুলের পক্ষ থেকেও তাকে যথাসাধ্য সহযোগিতা করা হয়েছে৷ সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন
১৬ ফেব্রুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম