আন্তর্জাতিক ডেস্ক : অবশেষে নত হলো বিজেপি নেতা নরেন্দ্র মোদি। জাঠ সম্প্রদায়ের সংরক্ষণের দাবি মেনে নিল সরকার। ফলে শান্ত হয়ে আসছে হরিয়ানা।
রবিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর হরিয়ানার কৃষিমন্ত্রী ও পি ঢনকর জানান, জাঠ নেতাদের দাবি মেনে অনগ্রসর শ্রেণির (ওবিসি) কোটাতেই সংরক্ষণের ব্যবস্থা করবে রাজ্য সরকার। রাজ্য বিধানসভার আসন্ন্ বাজেট অধিবেশনেই আনা হবে নতুন বিল। এমনকী, যাবতীয় দাবি-দাওয়া খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফেও রাজনাথ সিং উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান তিনি৷
শনিবারই বিজেপি জানিয়ে দিয়েছিল, জাঠদের সংরক্ষণের দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন রয়েছে তাদের। শনিবারের পর গতকাল রবিবারও জাঠ ও খাপ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে বসেন রাজনাথ। হরিয়ানা মন্ত্রিসভার সদস্য, জাঠ ও খাপ নেতারা ছাড়াও গতকালের বৈঠকে উপস্হিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল এবং সেনাপ্রধান জেনারেল দলবীর সিং সুহাগ৷
গত কয়েক দিনের মতো গতকাল হরিয়ানার পরিস্থিতি রীতিমতো অগ্নিগর্ভ থাকলেও সোমবার থেকে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। নতুন করে কারফিউ জারি হয় কৈথালে। জাঠ বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সাধারণ মানুষের সঙঘর্ষে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শনিবার ঝজ্জরে চারজনের মৃত্যুর পাশাপাশি কৈথালেও সংঘর্ষে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। হরিয়ানা সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রবিবার মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২৷ আহতর সংখ্যা দেড়শোরও বেশি।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আরও ১৭০০ আধাসামরিক বাহিনী হরিয়ানায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন্ এলাকায় মোতায়েন রয়েছে ৪৯ কোম্পানি। শহর ও জেলা মিলিয়ে মোট ৯ জায়গায় কারফিউ জারি রয়েছে। এখনও পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে মোট ৪৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হরিয়ানার ডিজিপি যশপাল সিং।
এদিকে জাঠ বিক্ষোভের জেরে তীব্র জলসঙ্কটের মুখে পড়ে নয়াদিল্লি। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে আজ, সোমবারই তড়িঘড়ি কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ নিয়ে শুনানি করবে সুপ্রিম কোর্ট। রবিবার সকালেও পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেন দিল্লির মন্ত্রিসভার সদস্যরা।
মূলত আন্দোলনকারীরা হরিয়ানার মুনাক খালের জল সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার পরই দিল্লিতে জলসঙ্কটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল। দিল্লি সরকারের অফিসারদের দাবি, দিল্লির ৬০ শতাংশ জলই সরবরাহ হয় এই মুনাক খাল থেকে। সরকারের তরফে দিল্লির সব স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
রাতের দিকে সরকারিভাবে জাঠদের দাবি-দাওয়া মেনে নেওয়ার পর আজ থেকে পরিস্হিতির উন্নত হতে পারে বলে মনে করছেন দিল্লির কর্মকর্তারা। হরিয়ানায় জাঠ আন্দোলন নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খাট্টার ও কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী।
২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএস