আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দখলে থাকা বিশ্বের শীর্ষস্থান কেড়ে নিচ্ছে চীন। এর ফলে দ্বিতীয় স্থানে থাকা রাশিয়াকেও পেছনে ফেলবে দেশটি। সাম্প্রতকি বাস্তবতা এমনই বার্তা দিচ্ছে। গত পাঁচ বছরের চীনের অস্ত্র রপ্তানি বেড়েছে দিগুণ। এ ধারা অব্যাহত থাকলে শীর্ষ অস্ত্র রপ্তানিকারক হতে আর বেশি অপেক্ষা করতে হবে না চীনকে। স্টকহোম আন্তর্জাতিক শান্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (এসআইপিআরআই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
সোমবার দেশটির এক সেনা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তাদের এ লক্ষ্য পুরণে কারি কারি টাকা ঢালছে অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোতে। অস্ত্র রপ্তানিতে চীন তৃতীয়। প্রথমে আছে যুক্তরাষ্ট্র এবং দ্বিতীয় রাশিয়া।
স্টকহোম আন্তর্জাতিক শান্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠান (এসআইপিআরআই) জানায়, গত পাঁচ বছরে (২০১১ – ২০১৫) চীনের অস্ত্র আমদানি ২৫ ভাগ কমেছে। বেড়েছে দেশীয় অস্ত্র উৎপাদন। ফলে ক্রমেই রাষ্ট্রীয়ভাবে উৎপাদিত সামরিক সরঞ্জামে আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠছে দেশটি।
সংস্থাটি আরো জানায়, বেইজিংয়ের রপ্তানি অস্ত্রের সিংহভাগই লাইট উইপন বা বহনযোগ্য অস্ত্র। ২০১১-২০১৫ সময়ে এ ধরণের অস্ত্রের কাটতি পূর্বের চেয়ে ৮৮ ভাগ বেড়েছে। বিশ্ব বাজারে মোট অস্ত্র সরবরাহের মাত্র ৫.৯ ভাগ যোগান দিচ্ছে বেইজিং যা ওয়াশিংটন ও মস্কোর তুলনায় খুবই নগণ্য।
তবে দশ বছর আগের কথা চিন্তা করলে চীন খুব দ্রুত এবং বিশ্ব বাজারের বিরাট অংশ দখলে নিয়েছে। বিশেষ করে তাদের সস্তা সমরাস্ত্র উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ব্যাপক আকৃষ্ট করেছে। আর এ বাজার দখলে এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়াকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়েছে চীন।
পরাশক্তি বিলাসী চীন তার ভৌগলিক নিরাপত্তা বলয় জোরদারের লক্ষে দক্ষিন চীন সাগর এবং ভারত মহাসাগরে শক্তিশালী সমুদ্র শক্তি গঠনে মনোনিবেশ করেছে। আর এ জন্য নিজ দশে উৎপাদিত অস্ত্রের ওপর পূর্ণ নির্ভরতা বাড়ানোর পরিকল্পনা বাড়ানোর চেষ্টা করছে।
দেশটির ২০১৫ সালের বাজেট ১৪১.৪৫ বিলিয়ন ডলার যা আগের বাজেট অপেক্ষা ১০ ভাগ বেশি। চীনকে এখনো বড় ধরনের সরঞ্জামের জন্য অন্য দেশের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। এ পরনির্ভরতা এড়াতেই নতুন পদক্ষেপ নিচ্ছে দেশটি।
চীনের রমরমা বাজার এশিয়া এবং ওশেনিয়া অঞ্চলে। দেশটির মোট রপ্তনির ৩৫ ভাগ অস্ত্র কিনেছে পাকিস্তান। এরপরে রয়েছে যথাক্রমে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার বাজারে যে খুব মন্দা যাচ্ছে তা নয়। পূর্বের চেয়ে দেশ দুটির রপ্তানি যথাক্রমে ২৭ ও ২৮ ভাগ বেড়েছে। মধ্যপ্রাচ্য সহ বিভিন্ন অঞ্চলে চলমান সংঘাতের প্রয়োজনীয় অস্ত্র এদের গুদাম থেকেই সরবরাহ হয়।
২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএস